নিতাই দে: গোটা ত্রিপুরা জুড়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি। শহরের বুকে আছড়ে পড়েছে কাটাখালের জল। এই অবস্থায় অরুণাচল প্রদেশ থেকে ত্রিপুরায় নিয়ে আসা হয়েছে প্রায় ২০০ এনডিআরএফ। সেনাবাহিনীর বিশেষ বিমানে তাঁদের জরুরি ভিত্তিতে রাজ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার থেকে দেওয়া হয়েছে দুটি হেলিকপ্টার। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলার মধ্যে রয়েছে গোমতী জেলা। সেখানে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে চলছে উদ্ধার কাজ। জাতীয় সড়কে ফাটল।

 

 

বহু জায়গায় বিদ্যুৎ বন্ধ রেখেছে বিদ্যুৎ নিগম। রাজস্ব সচিব জানিয়েছেন, বন্যার কারণে রাজ্যে প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নানাভাবে। এখন পর্যন্ত রাজ্যের ৪৫০ টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এই ত্রাণ শিবিরে ৬৫ হাজার ৪০০ জন আশ্রয় নিয়েছেন।

 

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে শিবির গুলিতে বিভিন্ন প্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। কৃষি, ফসল সহ বাড়িঘর এবং গবাদি পশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ নিগমের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় প্রবল বর্ষণে ঘর ভেঙে গিয়ে একই পরিবারের সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যায় মৃতদের পরিবারকে সরকারের তরফে চার লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী।

 

তিনি জানিয়েছেন, এই বিপর্যয় মোকাবিলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারের পাশে থাকতে হবে সবাইকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আগরতলার বটতলা বি আর আম্বেদকর স্কুলের অস্থায়ী শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিনিয়ত কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি। কয়েক দফায় কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও। মুখ্যমন্ত্রীর দাবিকে মান্যতা দিয়ে বৃহস্পতিবারই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতীয় বায়ু সেনার বিমানে যাবতীয় সাজসরঞ্জাম সহ এনডিআরএফের টিম পাঠানো হয়।

 

 

মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা আশাবাদী, শুক্রবারের পর থেকে পরিস্থিতি ভাল হবে। তাঁর মতে, ডাবল ইঞ্জিন সরকার থাকাতেই বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করা খুবই সদর্থক হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথা মতো সবকিছু পাঠিয়েছেন। অন্যদিকে, অমরপুরের অবস্থা একটু সঙ্কটজনক। সেখানে হেলিকপ্টারে টিম পাঠানো হয়েছে। খাবার সামগ্রীও মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

 

 

 

বন্যায় যারা ছাদের উপর রয়েছেন তাদের এয়ার লিফটিং করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সবাইকে দায়দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। এদিন সন্ধ্যায় পরিদর্শন কালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।