আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসিতে দলিত সম্প্রদায়ের এক যুবককে নৃশংসভাবে মারধর করার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি তাকে নির্মমভাবে প্রহার করছে এবং চপ্পল দিয়ে মাথায় মারছে। ঘটনাটি সামনে আসতেই এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে। ঘটনার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস) এবং তফসিলি জাতি ও তফসিলি জনজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইন, ১৯৮৯ এর অধীনে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
দৈনিক ভাস্করের প্রতিবেদনে জানা যায়, হর্ষ ভাল্মিকী নামে ওই ব্যক্তি ২২ নভেম্বর প্রেমনগর থানার অধীনস্থ একটি গ্রামে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সে সময় চারজন ব্যক্তি সিগারেট খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে তাকে একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে তার ফোন কেড়ে নেওয়া হয় এবং একটি ঘরে বন্ধ করে মারধর করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে থাকা হর্ষকে প্রথমে গালিগালাজ করছে এবং তার মাথায় বারবার চপ্পল দিয়ে আঘাত করছে। অন্য একজনকে দেখা যায় লাঠি দিয়ে পিটিয়ে চলেছে। ওই সময় হর্ষকে কাপড় খুলে উপস্থিত প্রত্যেকের পা ছুঁয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়। ভিডিওজুড়ে তাকে হাত জোড় করে কাঁদতে এবং অনুনয়-বিনয় করতে দেখা যায়। তিনি বারবার বলেন যে তিনি পুলিশের কাছে যাবেন না, তবুও তাকে থামানো হয়নি।
এফআইআরে হর্ষ জানিয়েছেন, তিনি রাস্তার ধারে একটি রেস্তরাঁর কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন নিশান্ত সাক্সেনা, সুকৃত এবং কনিষ্ক আহিরওয়ার তাকে সিগারেট খাবেন বলে ডেকে নিয়ে যায়। কিন্তু দোকানের বদলে তাকে নিশান্তের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। সেখানে আরও দু’জন—রবীন্দ্র এবং ভানু পাল—উপস্থিত ছিল। রবীন্দ্র পুরো ঘটনাটি মোবাইলে রেকর্ড করে। হর্ষ জানিয়েছেন, তিনি আঘাত কিছুটা সেরে ওঠার পর পুলিশে অভিযোগ জানান।
ঘটনা সম্পর্কে সিও সদর রামবীর সিং বলেছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা এবং এসসি/এসটি অ্যাক্টের ধারায় মামলা করা হয়েছে এবং ঘটনার উদ্দেশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিশান্ত সাক্সেনা পলাতক রয়েছে এবং তাকে খোঁজা হচ্ছে। সুকৃত, আনন্দ নায়ক এবং কানিষ্ক আহিরওয়ারকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে এবং ভিডিওর ফরেনসিক বিশ্লেষণও করা হবে বলে জানা গেছে।
