আজকাল ওয়েবডেস্ক: ওড়িশার গঞ্জাম জেলার ধারাকোট ব্লকের খারিগুম্মা গ্রামে দুজন দলিত ব্যক্তি—বুলু নায়ক (৫২) ও বাবুল নায়ক (৪৩)—এর উপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। ঘটনার দিন ছিল রবিবার, ২২ জুন। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা গো-চোরাচালানের অভিযোগ তুলে একদল স্থানীয় ব্যক্তি রাস্তার মাঝখানে আটকে মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। রাজি না হওয়ায়, তাদের হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়, মাথার চুল আধা কামিয়ে গ্রাম ঘোরানো হয় এবং অবশেষে জহাদা গ্রামে নিয়ে গিয়ে ঘাস ও নর্দমার জল খাওয়ানো হয়।

এক প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এক নেতাকে খবর দিলে তিনিও তাদের ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে অর্থ দাবি করেন। পরে কোনোমতে পালিয়ে নিজের গ্রামে ফিরে চিকিৎসা নেন ও পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তবে সেদিন পুলিশ ভিভিআইপি ডিউটিতে ব্যস্ত থাকায় এফআইআর রাতেই নেওয়া হয়। ঘটনার পর ব্যাপক ক্ষোভ ছড়ায়। দলিত মহাসভা প্রতিবাদ সভা করে এবং মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝিকে স্মারকলিপি দেয়। মঙ্গলবার রাজস্ব কমিশনারের কার্যালয়ে বিক্ষোভও দেখানো হয়। ইতিমধ্যে আটজনকে গ্রেপ্তার ও একজন কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সঁহিতা ২০২৩ এবং তফসিলি জাতি ও তফসিলি জনজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইন ১৯৮৯-এর ধারায় মামলা হয়েছে।

এদিকে, রাজ্য কংগ্রেস পাঁচ সদস্যের একটি তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে। লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘এই ঘটনা বাবাসাহেবের সংবিধানকে অপমান করে। বিজেপি শাসিত রাজ্যে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। দেশ চলবে সংবিধান অনুযায়ী, মনুস্মৃতি অনুযায়ী নয়।’’

প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও এই ঘটনাকে সংবিধানের মানবিক মূল্যবোধের ওপর আঘাত বলে মন্তব্য করেন।