আজকাল ওয়েবডেস্ক: জন্মহার কমছে। একই ছবি তেলেগু অধ্যুষিত অন্ধ্রপ্রদেশেও। এই প্রবণতার বদল চাইছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু পরিবর্তন আনতে যে প্রস্তাব দিলেন চন্দ্রবাবু নাইডু তা নিয়ে জলঘোলা হতে শুরু করেছে। যদিও নিজের বক্তব্যে অনড় তেলেগু দেশম পার্টির প্রধান চন্দ্রবাবু।

কী প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রীর? 
নরাভারিপল্লে-এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশের সময় চন্দ্রবাবু নাইডু প্রস্তাব পেশ করেন যে, দুইয়ের কম সন্তান থাকলে আর স্থানীয় ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যাবে না। প্রস্তাবটি দ্রুত বিধানসভায় পেশ করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "আমাদের অভিভাবকরা চার থেকে পাঁচটি সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন সেটি মেনে একটিতে দাঁড়িয়েছে। বুদ্ধিমান লোকেরা এখন দ্বিগুণ আয় করলেও সন্তানহীন জীবনযাত্রা বেছে নিচ্ছেন। যদি তাঁদের বাবা-মা একই চিন্তা করতেন, তাহলে আজ তাদের অস্তিত্ব থাকত না।" 

জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার উদাহরণ তুলে ধরেন চন্দ্রবাবু নাইডু। জানান, ওই দুই দেশে জন্মহার হ্রাস পেয়েছে ফলে ইতিমধ্যেই বয়স্ক জনসংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমাদের আগে একটা আইন ছিল। সেই আইন অনুসারে পঞ্চায়েত ও পুর নির্বাচনে লড়াই করার জন্য শুধুমাত্র তাঁরাই সুযোগ পেতেন, যাঁদের দুই বা তার থেকে কম সন্তান রয়েছে। কিন্তু আমি এখন বলছি, যাঁদের যাঁদের দু'য়ের কম সন্তান রয়েছে, তাঁরা নির্বাচনে লড়তে পারবেন না।" তাঁর সাফ ঘোষণা, " আগামী দিনে আপনি তখনই পঞ্চায়েত প্রধান, পুর কাউন্সিলর অথবা মেয়র হতে পারবেন, যদি আপনার দু'য়ের বেশি সন্তান থাকে। আমি দ্রুত এই ধারা যোগ করব।"

এদিকে গত বছর নভেম্বরেই অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভায় রাজ্যের পঞ্চায়েতী রাজ এবং অন্ধ্রপ্রদেশ পৌর আইন সংশোধনের জন্য বিল পাস হয়, সেখানে বলা ছিল যাঁদের দু'টির বেশি সন্তান তাঁরা কেউ পঞ্চায়েত বা পুরসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

১৯৯৪ সালে মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ৩০ বছরের পুরনো নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চন্দ্রবাবু নাইডু রাজ্যগুলিতে জন্মহার হ্রাসের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু, রাজ্যে জন্মহার ক্রমশ কমতে থাকায় আপাতত সেই ভাবনা থেকে তিনি সরে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ২০৪৭ সালের পর ভারতে বয়স্ক জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।

চন্দ্রবাবু উচ্চ জন্মহার বৃদ্ধির জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। সতর্ক করে জানান যে, জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে অবহেলা করে কেবল সম্পদ সৃষ্টিতে মনোনিবেশকারী দেশগুলির ভুলের পুনরাবৃত্তি মারাত্মক হতে পারে।