আজকাল ওয়েবডেস্ক: বহু প্রতীক্ষিত জাতীয় জনশুমারি-২০২৭ নিয়ে কেন্দ্র সরকার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করল। মঙ্গলবার লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায় জানান যে পরবর্তী জনশুমারি দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে বাড়ি তালিকাভুক্তকরণ ও গৃহ গণনা এবং দ্বিতীয় ধাপে হবে প্রকৃত জনসংখ্যা গণনা।

দুই ধাপে জনশুমারি

রায় জানান, ২০২৬ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রথম ধাপ পরিচালিত হবে। প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তাদের সুবিধামতো ৩০ দিনের একটি সময়সীমার মধ্যে এই ধাপ সম্পন্ন করবে।

দ্বিতীয় ধাপে জনসংখ্যা গণনা (Population Enumeration) অনুষ্ঠিত হবে ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এই ধাপের জন্য রেফারেন্স সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ১ মার্চ ২০২৭-এর রাত ১২টা (০০:০০ ঘণ্টা)।

তবে লাদাখ এবং জম্মু-কাশ্মীরের তুষারাবৃত এলাকাসহ হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের অঞ্চলে পরিস্থিতিগত কারণে জনশুমারি এগিয়ে সেপ্টেম্বর ২০২৬-এ সম্পন্ন হবে, এবং সেক্ষেত্রে রেফারেন্স সময় হবে ১ অক্টোবর ২০২৬-এর রাত ১২টা।

জাতি গণনাও অন্তর্ভুক্ত

একইসঙ্গে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন যে, এই জনশুমারিতে জাতিভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী দলগুলো জাতিগত গণনার দাবি জানিয়ে আসছিল এবং ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে এটি বড় রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে হবে গণনা

রায় বলেন, প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবার প্রথমবারের মতো জনশুমারি সম্পূর্ণ ডিজিটাল ব্যবস্থায় পরিচালিত হবে। তথ্য সংগ্রহ করা হবে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে, পাশাপাশি নাগরিকদের জন্য থাকবে অনলাইন স্ব-গণনা (Self-Enumeration) ব্যবস্থা।

প্রশ্নপত্র তৈরি হয়েছে বহু পরামর্শে

মন্ত্রী আরও জানান, বিভিন্ন মন্ত্রক, সংস্থা এবং অভিজ্ঞ জনশুমারি কর্মকর্তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছে। ভারতের জনশুমারির ১৫০ বছরের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া নির্দেশনা এবং পদ্ধতিগত শিক্ষাও এই খসড়া তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২১ সালের নির্ধারিত জনশুমারি স্থগিত হয়ে যায় এবং পরবর্তী সময়ে একাধিকবার প্রশ্ন উঠেছিল—কবে অনুষ্ঠিত হবে পরবর্তী জনশুমারি ও জাতিগত তথ্য সংগ্রহ।

সরকারের আজকের ঘোষণা সেই অনিশ্চয়তার অবসান ঘটাল বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত। পরবর্তী কয়েক মাসে জনশুমারি কর্মসূচির সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে সরকার আরও বিস্তারিত নির্দেশিকা প্রকাশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।