আজকাল ওয়েবডেস্ক: আহমেদাবাদের মেঘানিনগরে ২৪২ জন যাত্রী নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১৭১ বিমান। যেটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ছিল। বিমানের যাত্রীদের মধ্যে মাত্র এক জন আশ্চর্যরকম ভাবে বেঁচে গিয়েছেন। বাকি সকলেরই মৃত্যু হয়েছে। বিমানবন্দরের নিকটবর্তী ডাক্তারদের একটি হস্টেল ভবনে গিয়ে ধাক্কা মারে বিমানটি। যার ফলে হস্টেল এবং তার আশপাশেও অনেকের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।  

আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের বাইরে ঘটে যাওয়া এআই১৭১ বিমান দুর্ঘটনার শেষ মুহূর্তের দুটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ, বিমানযাত্রী এবং কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এই দুর্ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বেশ কয়েকজন দক্ষ পাইলট সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে নানা প্রশ্নও তুলেছেন।

প্রথম, বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারের কী হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের ধারণা ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটি থাকতে পারে। বিমান ওড়ার পর ল্যান্ডিং গিয়ার ঠিকমতো বন্ধ হয়নি। বিমানের গতি ল্যান্ডিং গিয়ার দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়। সেখানে গোলমালের কারণে কি এই দুর্ঘটনা? দ্বিতীয়, এআই১৭১-এর দু’টি ইঞ্জিন কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল? তৃতীয়, উড়ানের সময় ডানার অবস্থান কী ছিল? সেগুলি কি নীচু করে রাখা ছিল উড়ানের সময়? চতুর্থ, পাখির ধাক্কায় কী এই দুর্ঘটনা?

বিমান বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন অমিত সিং এবং ক্যাপ্টেন মনোজ হাতি জানিয়েছেন, বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার সাধারণত উড়ানের পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে বন্ধ করা হয়। যখন বিমান সঠিক উচ্চতায় পৌঁছে যায়। কারণ গিয়ার বন্ধ না করলে ঘর্ষণ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে জ্বালানি খরচ বৃদ্ধি পায় এবং বিমানের গতি হ্রাস পায়।

দুর্ঘটনার ঠিক আগের মুহূর্তে ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিপর্যয় এড়াতে বিমানের সামনের অংশ তুলে ধরেছিলেন দুই পাইলট। এর ফলে বিমানের গতি কমে যায় এবং তারপরেই ভেঙে পড়ে বিমানটি। অমিতের মতে, এই পদক্ষেপ না করলেও বিমানের গ্লাইডিং পথ অনিবার্যভাবে দুর্ঘটনার কারণ হত।

দ্বিতীয় বিষয়টি ছিল উইংয়ের উপরের দিকে ওঠার ক্ষমতা (লিফট) বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত ফ্ল্যাপগুলি। কিছু পাইলটের মতে, উড়ানের সময় স্বাভাবিকভাবে ফ্ল্যাপগুলি নামানো হয়নি, আবার অনেকে বলেছেন যে ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে সেগুলি নামানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটির ইঞ্জিনে ত্রুটি ছিল। ভেঙে পড়ার আগে সর্বোচ্চ ৩২২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার গতিতে পৌঁছতে পেরেছিল। যা স্বাভাবিক নয়। ওই সময়ে বিমানের গতি আরও অনেক বেশি হওয়ার কথা। কোনও কারণে বিমানের ইঞ্জিন শক্তি হারিয়ে ফেলে। তার ফলে দুর্ঘটনা অনিবার্য হয়ে পড়েছিল।

এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার তদন্তের রিপোর্ট আগামী বছর ১২ জুনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে। সেই রিপোর্টেই বোঝা যাবে দুর্ঘটনার আসল কারণ। যদিও বিশেষজ্ঞদের মত, ভিডিও দু’টি বিমান দুর্ঘটনার অনেক তথ্য দিয়েছে।