আজকাল ওয়েবডেস্ক: ১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর। অভিশপ্ত সেই রাতে পৃথিবীর মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছিল ভোপাল। ইউনিয়ন কার্বাইডের কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস লিক করে মৃত্যু হয় বহু মানুষের। গত ২ ডিসেম্বর সেই ঘটনার ৪০ বছর পূর্ণ হয়েছে। দীর্ঘ চার দশক ধরে সেই দুর্ঘটনার ফল ভুগছে ভোপাল। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রয়ে গিয়েছে বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাব। অবশেষে মিলল মুক্তি। ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানা থেকে সরানো হল ৩৩৭ মেট্রিক টন বর্জ্য। 

আগুন ধরবে না এবং কোনও অবস্থাতেই বাইরে বেরিয়ে আসবে না, এমন ১২টি কন্টেনারে ওই বিপুল পরিমাণ বর্জ্য সরানো হয়। পিথমপুরের বর্জ্য নিষ্কাশন প্ল্যান্টে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বর্জ্যগুলিকে। ১২টি কন্টেনার নিয়ে যেতে ২৫০ কিলোমিটার লম্বা গ্রিন করিডর তৈরি করা হয়েছিল। প্রতিটি কন্টেনারে ছিল প্রায় ৩০ টন বর্জ্য। যাবতীয় সুরক্ষাবিধি মেনে এই বর্জ্য স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শেষ করা হয়। গোটা প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত ছিলেন ১০০ জন কর্মী। গাড়িতে বর্জ্য তোলার সময় আশপাশের প্রায় ২০০ মিটার এলাকায় মানুষের যাতায়াত বন্ধ করে দেয় স্থানীয় প্রশাসন। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে মোতায়েন করা হয়েছিল ১০০০ পুলিশকর্মী। 

এর আগে একাধিক বার কারখানা চত্বর থেকে বিষাক্ত বর্জ্য সরানোর নির্দেশ দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট। চলতি মাসের শুরুতেই এ জন্য কর্তৃপক্ষকে ভর্ৎসনাও করে আদালত। বর্জ্য সাফাইয়ের জন্য চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। তারপরেই সরানো হল বর্জ্য। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই বিপুল পরিমান বর্জ্য নষ্ট করতে প্রায় নয় মাস সময় লাগবে। 

১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর গভীর রাতে ভোপালের ইউনিয়ন কার্বাইডের কারখানা থেকে মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাস লিক করে পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় অনেকের। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও অনেকে মারা যান। সব মিলিয়ে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৭৮৭। কিন্তু বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। এর প্রভাবে নানা শারীরিক ক্ষতি হয় প্রায় পাঁচ লক্ষেরও বেশি মানুষের। কয়েক প্রজন্ম ধরে ওই অঞ্চলের মানুষ বয়ে বেড়াচ্ছেন এই দুর্ঘটনার প্রভাব।