আজকাল ওয়েবডেস্ক: হিমাচল প্রদেশে ফের এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা। মান্ডি জেলায় ঘটেছে এটি। সারকাঘাট উপবিভাগের মাশেরান এলাকার এই দুর্ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর অনুযায়ী, হিমাচল রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের (এইচআরটিসি) একটি বাস তারাংলা সংলগ্ন একটি গভীর খাদে পড়ে যায়৷ ঘটনার জেরে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সূত্র মারফত, দুর্ঘটনাস্থল মান্ডি শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুর্ঘটনায় প্রায় ২০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। সকল আহত ব্যক্তিকে স্থানীয় সারকাঘাট হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের চিকিৎসা বর্তমানে চলছে।
হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু এই দুর্ঘটনায় তাঁর গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি টুইটার-এ দেওয়া একটি পোস্টে লেখেন। তাতে তিনি বলেন 'এইচআরটিসি বাস খাদে পড়ে যাওয়া অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং হৃদয়বিদারক ঘটনা।' মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। তাঁদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে।
তিনি আরও লেখেন, 'এই খারাপ সময়ে, আমি মৃতদের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। পাশাপাশি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। তাঁরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক।'
খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ঘটনার পরপরই পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে তৎপর হয়েছে। উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে বলে জানা যায়। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখছে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত সোমবার জম্মু ও কাশ্মীর এবং উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন এলাকায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে খবর। পাশপাশি হিমাচল প্রদেশ এবং পাঞ্জাবের জন্য কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এরপর মঙ্গলবার হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের জন্য কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
খবর অনুযায়ী, রাজ্যের বারোটি জেলার মধ্যে কমপক্ষে তিন থেকে সাতটিতে ভারি বৃষ্টিপাতের জন্য 'হলুদ' সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই বৃষ্টিপাত শুক্রবার পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। 
 
 প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে প্রায় ২০৮টি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৭টি মান্ডিতেই। বর্তমানে যানবাহন চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে একাধিক রাস্তা। রাজ্য জরুরি অপারেশন সেন্টার (SEOC) অনুসারে, ৭৪৫টি জল সরবরাহ প্রকল্প এবং আরও ১৩৯টি বিদ্যুৎ বিতরণ ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে, ২০ জুন থেকে ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে, মোট ৯৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ৫৭ জন বৃষ্টিপাতজনিত ঘটনায় এবং ৪১ জন সড়ক দুর্ঘটনায়। আরও ১৭৮ জন আহত হয়েছেন। বর্ষায় ৩৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৩১টি আকস্মিক বন্যা, ২২টি ক্লাউডবার্স্ট এবং ১৮টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুনঃ 'সুখ দিতে পারো না বেঁচে থেকে লাভ কী?' শরীরী খিদে মেটাতে ব্যর্থ স্বামীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন স্ত্রী...
অন্যদিকে, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা থেকে সিরমৌর জেলার রাজগড়ে ৭২ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। খাদ্রালা (৪২.৪ মিমি), পাছাদ (৩৮ মিমি), মান্ডি (২৬.৪ মিমি), ভুন্টার (২২ মিমি), শিলারু (১৪.২ মিমি), সেওবাগ (১২.২ মিমি), শিমলা (১১.৫ মিমি) এবং রোহরু (১০ মিমি)।
৩০ জুন থেকে ১ জুলাই রাতে মান্ডি জেলায় দশটি মেঘ ভাঙা বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসের ফলে ধ্বংসযজ্ঞের পর নিখোঁজ হন ২৭ জন। খুঁজে বের করার জন্য অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
