আজকের দিনে অনেক ভারতীয়ই সঞ্চয়ের তুলনায় দ্রুত আয় বৃদ্ধির আশায় মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করছেন। কিন্তু আর্থিক বিশেষজ্ঞদের মতে, অধিকাংশ বিনিয়োগকারী শুধু ফান্ডের রিটার্ন বা লাভের অঙ্কটিই দেখেন, অথচ ফান্ডের প্রকৃত মান বা “স্বাস্থ্য” যাচাই করেন না। এর ফলে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি নেওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
2
8
বিশেষজ্ঞদের মতে, সফল বিনিয়োগের জন্য শুধুমাত্র রিটার্ন নয়, ফান্ড কতটা ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফর্ম করছে, ঝুঁকি কতটা নিয়ন্ত্রিত, এবং কত দক্ষতার সঙ্গে তা পরিচালিত হচ্ছে — সেগুলিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
3
8
অধিকাংশ বিনিয়োগকারী মিউচুয়াল ফান্ডের পারফরম্যান্স বিচার করতে গিয়ে শুধু ‘অ্যাবসলিউট রিটার্ন’-এর উপর নির্ভর করেন। এটি কেবল বিনিয়োগে মোট লাভ বা ক্ষতির অঙ্ক দেখায়, কিন্তু বিনিয়োগের সময়কালকে বিবেচনায় নেয় না। ফলে এটি একটি অসম্পূর্ণ মানদণ্ড।
4
8
দুইজন বিনিয়োগকারী একই লাভ করতে পারেন, কিন্তু একজন যদি তিন বছরে এবং অন্যজন ছয় মাসে সেই লাভ পান, তবে বাস্তবে দু’জনের পারফরম্যান্স এক নয়। সময়ের উপাদান বাদ দিলে প্রকৃত মূল্যায়ন অসম্ভব।
5
8
এই সমস্যা সমাধানে কুমার পরামর্শ দেন XIRR ব্যবহারের — যার পুরো অর্থ Extended Internal Rate of Return। এটি এমন একটি পদ্ধতি যা বিনিয়োগ ও উত্তোলনের সময় অনুযায়ী বার্ষিক গড় রিটার্ন হিসাব করে। বিশেষত যাঁরা এসআইপি-র মাধ্যমে নিয়মিত বিনিয়োগ করেন, তাঁদের জন্য এটি সবচেয়ে বাস্তবসম্মত সূচক।
6
8
ফান্ডের স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন ও শার্প রেশিও মতো ঝুঁকিমাপক সূচক, ফান্ড ম্যানেজারের ট্র্যাক রেকর্ড, পোর্টফোলিওর গঠন, খরচের হার, পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ও সম্পদ বণ্টনের ভারসাম্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এই সব উপাদান একসঙ্গে দেখলেই বোঝা যায় ফান্ডটি শুধু লাভজনকই নয়, স্থিতিশীলও কি না।
7
8
অনেক খুচরো বিনিয়োগকারী সংখ্যার চকচকে দিকেই মুগ্ধ হয়ে পড়েন, কিন্তু সেই সংখ্যার পিছনে আসল চিত্রটা বোঝেন না। উচ্চ রিটার্ন মানেই ভালো ফান্ড নয় — কতটা দক্ষতার সঙ্গে সেই রিটার্ন এসেছে, সেটাই মূল বিষয়।
8
8
ফান্ড ম্যানেজারের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স এবং কোন কোম্পানিতে বিনিয়োগ হচ্ছে এসব না বুঝে শুধু বড় রিটার্নের পেছনে দৌড়ালে হতাশার সম্ভাবনাই বেশি। তাই আগে থেকে সমস্ত দিক ভাল করে দেখে নিয়ে তারপর বিনিয়োগ করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
