বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় পরিচালক-প্রযোজক বর্ষীয়ান নির্মাতা বিধু বিনোদ চোপড়া।  তাঁর ঝুলিতে ‘থ্রি ইডিয়টস’, ‘পিকে’, ‘সঞ্জু’-র মতো ব্লকবাস্টার, সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে এমন এক চাঞ্চল্যকর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন যা শুনলে চোখ কপালে উঠবে।

 

 

তিনি জানালেন, তাঁর কালজয়ী ছবি ‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’—যে ছবি আজ কোটি কোটি দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে—তা নাকি মুক্তির আগে দক্ষিণ ভারতে কেউ কিনতেই রাজি ছিল না! চোপড়া বলেন, "মুন্না ভাই এমবিবিএস রিলিজ করেছিল ফাঁকা প্রেক্ষাগৃহে। ওটাই আমাকে কোটিপতি বানিয়েছে, কারণ ওই সময় কেউই ছবিটা মুম্বইয়ের বাইরে কিনতে চাননি।"

 

তিনি জানান, দক্ষিণ ভারতের এক ডিস্ট্রিবিউটর ছবিটি ১১ লক্ষ টাকায় কিনেছিলেন। তবে ছবি রিলিজের চারদিন আগে যখন তিনি প্রিন্ট নিতে এলেন ও ছবি দেখে ফেললেন, সোজাসুজি বলেই দেন— “স্যার, এই ছবি একদিনও চলবে না। মুম্বইয়ের বাইরের কেউ এই ভাষা বুঝবেই না।”

 

এরপর? দক্ষিণ ভারতে কোনও ডিস্ট্রিবিউটর না পেয়ে, বন্ধুবন্ধবদের সহায়তায় বিধু স্রেফ একটি মাত্র শো পান—চেন্নাইয়ের এক প্রেক্ষাগৃহে সকাল ১১টায়। মাত্র ৫ লক্ষ টাকায় সেখানে বিক্রি করেন ছবির প্রিন্ট। কিন্তু সেই একটি সেন্টার থেকেই শেষমেশ তাঁর লাভ করেন ১ কোটি টাকারও বেশি!বিধুর কথায়, “ছবিমুক্তির পর প্রথম দিন, দ্বিতীয় দিন—কেউ প্রেক্ষাগৃহে যায়নি। কিন্তু আপনি যদি নিজের কাছে সৎ থেকে ভাল কাজ করেন, তাহলে একদিন না একদিন তা সফল হবেই।”

 

উল্লেখ্য, রাজকুমার হিরানি পরিচালিত ‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’ ছবিতে সঞ্জয় দত্ত ছাড়াও ছিলেন সার্কিট-চরিত্রে আরশাদ ওয়ার্সি, বোমান ইরানি, গ্রেসি সিং ও সুনীল দত্ত। ছবিটি শুধু বক্স অফিস কাঁপায়নি, তৈরি করেছিল এক ঐতিহাসিক ফ্র্যাঞ্চাইজি—যার সিক্যুয়েল ‘লগে রহো মুন্না ভা’ই মুক্তি পায় ২০০৬ সালে।

 

যে ছবি কেউ নিতে চায়নি, সেটাই একদিন ইতিহাস রচনা করল। বলিউডে পরিচালক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে আসা মানুষদের কাছে এর থেকে বড় অনুপ্রেরণা আর কী হতে পারে!

 

প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালে বিধু বিনোদ চোপড়া পরিচালিত 'পরিন্দা' ছবিতে 'অন্না'র চরিত্রে অভিনয় করে ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন নানা পটেকর। এককথায়, অভিনেতার ফিল্মি কেরিয়ারে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল এই ছবি। তবে জানেন কী, ছবির পরিচালকের সঙ্গে বাদানুবাদ থেকে শুরু করে হাতাহাতিতে পর্যন্ত জড়িয়েছিলেন নানা! এমনকী এই অভিনেতাকে কড়া শাসনে রাখতেই নাকি গালি, অশালীন শব্দ শিখেছিলেন তিনি, দাবি বিধু বিনোদ চোপড়ার!

ছোটপর্দার এক গানের অনুষ্ঠানে এসে খোশগল্পে মেতেছিলেন 'টুয়েলভথ্ ফেল'-এর পরিচালক। সেখানেই নানা পটেকরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের রসায়নের প্রসঙ্গ উঠলে এমন দাবি করে বসেন বিধু। হালকা মেজাজে তিনি বলেন, " আমি কাশ্মীরে বড় হয়েছি। যখন বোম্বাইয়ে এসেছিলাম যথেষ্ট সভ্য ভব্য ছিলাম। সহজ ছিলাম। গালি, অশালীন শব্দের বিষয়ে জ্ঞান খুব সীমিত ছিল আমার। তারপরেই নানার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বিপত্তির মুখে পড়ি। দেখি মেজাজ বিগড়োলেই মুখ থেকে গালির ফোয়ারা বেরোয় তাঁর। আমাকেও শুটিং চলাকালীন চিৎকার করে কুকথা বলে দিচ্ছে। ভেবে দেখলাম এভাবে তো কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই নানাকে কড়া শাসনে রাখতে আমি গালি শিখলাম। স্রেফ নানাকে ঠিকমতো কাজ করাব বলেই।অশালীন, আপত্তিকর সব শব্দ নানার উদ্দেশ্যে আমিও প্রয়োগ করা শুরু করলাম!"