আজকের দিনে ইন্টারনেট ছাড়া জীবন কল্পনা করা যায়? শিশু থেকে বৃদ্ধ—সবাই আজ ডিজিটাল দুনিয়ার সঙ্গে একাত্ম। খবর, বিনোদন, সারা বিশ্বের কনটেন্ট—সব মুঠোফোনে, আঙুলের ছোঁয়ায়। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিটি অভিনেতা আজ ভক্তদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকেন। আর এই অনলাইন যুগের সূচনা, অন্তত ভারতীয় সিনেমা জগতে, সম্ভব হয়েছিল এক কিংবদন্তির হাত ধরে— রণবীর কাপুরের দাদু তথা প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা শাম্মি কাপুর!

 

রণবীর কাপুরের দাদু শাম্মি কাপুর শুধু ‘জংলি’ ছবিখ্যাত জনপ্রিয় অভিনেতা নন, ছিলেন ভারতের প্রথম দিকের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের একজন, আর বলিউডে একেবারেই প্রথম। নব্বইয়ের দশকের গোড়ায়, সত্তরের কোঠায় বয়স থাকা সত্ত্বেও তিনি কিনেছিলেন একটি অ্যাপল ম্যাকিন্টশ ক্লাসিক ডেস্কটপ এবং আন্তর্জাতিক ডায়াল-আপ লাইনও নেন।কেন  তাঁর প্রথম অনলাইন প্রকল্প? আসলে, কাপুর পরিবারের ফিল্মি ফ্যামিলি ট্রি তৈরি করা ছিল তাঁর লক্ষ্য—যার নাম দেন জংলি.ওআরজি.ইন (junglee.org.in)। আশ্চর্যের বিষয়, সেই ওয়েবসাইট এখনও টিকে আছে!

 

কেন তাঁকে ‘ইন্টারনেট গুরু’ বলা হয়? কারণ, পঞ্চাশের কোঠায় তিনি বিশ্বব্যাপী ওয়েব আবিষ্কার করেন, ‘ইন্টারনেট ইউজার্স কমিউনিটি অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান হন এবং ‘এথিক্যাল হ্যাকার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া’ও গড়ে তোলেন।

 

জংলি ডট ওআরজি মূলত কপূর পরিবারের জন্য নিবেদিত এক ফ্যামিলি ওয়েবসাইট, যেখানে এখনও নব্বইয়ের দশকের সেই অরিজিনাল লুক, ব্যানারের ফন্ট, এবং শাম্মি নিজে বাছাই করা কনটেন্ট আজও অক্ষত রয়েছে। আছে তাঁর দুর্লভ ছবির স্টিলস, পৃথ্বীরাজ থেকে ঋষি কাপুর—সকলের বিষয়ে তথ্য ও নানান ছবি।

 

যদিও কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের প্রথম ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিলেন ড. শ্রীনিবাসন রমণী—যিনি তাঁর টিম নিয়ে ১৯৮৬–১৯৯১ সালের মধ্যে ভারতের প্রথম আন্তর্জাতিক সার্ভার সংযোগ স্থাপন করেছিলেন। তবে সরকারি ভাবে কে প্রথম, তার প্রমাণ নেই। কিন্তু বলিউডের প্রথম ইন্টারনেট ব্যবহারকারী যে শাম্মি কাপুর, তা নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই।

 

২০১১ সালের ১৪ আগস্ট, ৭৯ বছর বয়সে পৃথিবীকে বিদায় জানান এই কিংবদন্তি অভিনেতা তথা ভারতের ‘ডিজিটাল পথিকৃৎ’।