‘সেক্রেড গেম্‌স’ সিরিজে রূপান্তরকামী ‘কুকু’-র চরিত্রে নজর কাড়েন কুবরা সেইট। যদিও অভিনয় দুনিয়ায় তাঁর সফর শুরু হয়েছে একটু দেরিতে। এবার জীবনের এক গভীর, কঠিন মুহূর্ত নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী। নিজের গর্ভপাতের অভিজ্ঞতা নিয়ে অকপটে জানালেন তাঁর মনের কথা! সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ‘সেক্রেড গেমস’-খ্যাত এই অভিনেত্রী বলেন, জীবনের সেই সময়টা ছিল তাঁর কাছে এক অজানা লড়াই।বিশ্বাস, দায়িত্ব আর সমাজের চোখে নিজের অবস্থানের চোরাবালির মধ্যে আটকে পড়েছিলেন তিনি।

 

আরও পড়ুন: উচ্চমাধ্যমিকের বইয়ের পাতায় জায়গা পেয়ে উচ্ছ্বসিত ‘বং গাই’, দেখেশুনে তারিফ না ছি ছি- কী বলছে নেটপাড়া?

কুবরা বলেন,“ওটা অনেক বছর আগের ঘটনা। এই সময়ের মধ্যে আমি ভাবার, বোঝার, নিজেকে সেরে তোলার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু যখন এমন মুহূর্ত আসে, তখন নিজের মধ্যেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়। একদিকে নিজের বিশ্বাস, দায়িত্ববোধ, আর অন্যদিকে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি... কী ঠিক আর কী ভুল, সেই টানাপোড়েনে জর্জরিত হয়ে পড়ে মন।”

 

 

অভিনেত্রী বলে চলেন,“সেই সময়ে সত্যিই বুঝতে পারিনি, আমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছি কি না। কিন্তু আজ আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আমার নেওয়া সিদ্ধান্তটাই ছিল ঠিক। কারণ যদি আমি কোনও ভুলও করে থাকি, ঈশ্বর তা দেখেছেন। আর তার ফল আমাকেই ভোগ করতে হত, এখানে নয়, হয়তো পরজগতে।”আগেও কুবরা জানিয়েছিলেন, এই অভিজ্ঞতা থেকে বেরিয়ে আসতে তাঁর বহু বছর সময় লেগেছিল। তিনি মনে করিয়ে দেন, এক সময় একটি শুটিংয়ের সময় প্রচণ্ড অসুস্থতা, রক্তপাত আর মানসিক অস্থিরতার মধ্য দিয়েও কাউকে কিছু না জানিয়ে কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে এই ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত পুরুষসঙ্গীর নাম ফাঁস করেননি তিনি।  

২০২২ সালে নিজের আত্মজীবনীমূলক বই ‘ওপেন বুক: নট কোয়াইট আ মেমোয়ার’ প্রকাশের সময়ই প্রথম তিনি খোলাখুলি লেখেন এই অভিজ্ঞতার কথা। সেই বই লেখার পরই কুবরা উপলব্ধি করেন নিজের প্রতি দয়ালু হওয়া কতটা জরুরি। তাঁর কথায়, “যখন লেখাটা শেষ করলাম, বুঝলাম নিজেকে ক্ষমা করা, নিজের সিদ্ধান্তকে গ্রহণ করা, সেটাই ছিল আমার সত্যিকারের মুক্তি।”

অনেক বছর অভিনয়জগতে কাটানোর পরে ২০১৮ সালে ‘সেক্রেড গেমস’ দিয়ে আলোচনায় আসেন কুবরা সেইত। এরপর ‘ফর্জি’, ‘দ্য ট্রায়াল’, ‘ওকালত ফ্রম হোম’, ও ‘শহর লাখোট’–এর মতো জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজে তিনি নজর কেড়েছেন। সম্প্রতি শাহিদ কাপুর ও পূজা হেগড়ের সঙ্গে ‘দেবা’ ছবিতে দেখা গেছে তাঁকে। শিগগিরই তিনি ফিরবেন নতুন ছবিতে, ‘হ্যায় জওয়ানি তো ইশ্‌ক হোনা হ্যায়’-তে।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের পর থেকেই তিনি ‘সিঙ্গল’। কাউকে বিয়ে করতেও চান না। বরং একত্রবাসে স্বচ্ছন্দ তিনি। একসময় তিনি দীর্ঘ দিন কাটান টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রীর সঙ্গে। ২০২২ সালে মহারাষ্ট্রের পালঘরে এক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সাইরাসের। তার পর থেকেই আর কখনও প্রেমের সম্পর্কে জড়াননি অভিনেত্রী। যদিও কুবরা নিজেই জানিয়েছেন, ‘২৩-এ বিয়ে, ৩০ সন্তান’— এমন জীবনযাপনে তিনি বিশ্বাসী নন। এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, সেই কারণে যখন এক রাতের সঙ্গমের কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন, একাই সিদ্ধান্ত নেন গর্ভপাতের।