সুজয়-কন্যা দিয়া অন্নপূর্ণা ঘোষের প্রথম ছবি ছিল ‘বব বিশ্বাস’। সুজয় ঘোষের ‘কহানি’র প্রায় এক দশক পরে, ওটিটির পর্দায় ‘বব বিশ্বাস’-এর দেখা পাওয়া গিয়েছিল। ‘বব বিশ্বাস’ ছবিটির কেন্দ্রে রয়েছে ববের জীবনবোধের সঙ্কট অর্থাৎ এগজিস্টেনশিয়াল ক্রাইসিস। তাঁর সঙ্গে কালীদার (পরান বন্দ্যোপাধ্যায়) দৃশ্যগুলি ছবির অন্যতম আকর্ষণীয় দিক। চরিত্র হিসেবে কালীদা বহুমুখী। আধো হিন্দি-বাংলা মেশানো লব্জ যে কত সুন্দর করে বলা যায়, তা পরানের মুখে না শুনলে উপভোগ করা যায় না! এ ছবিতে চরিত্র হিসেবে অভিষেক ‘বব’ বচ্চন সমালোচকের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তবে স্পটলাইটের অনেকটাই শুষে নিয়েছিলেন কালীদা! জনতামহলে দাবি উঠেছিল, ‘কহানি’ থেকে যেমন বব বিশ্বাসকে নিয়ে স্পিন-অফ হয়েছে, তেমন কালীদা-কে নিয়েই হোক!
এক মিনিট! দেরি হল, তবে তিনি শুনলেন। এবং জবাবও দিলেন। তিনি, ‘কহানি’র পরিচালক তথা বব বিশ্বাস-এর গল্পকার তথা চিত্রনাট্যকার সুজয় ঘোষ। আজকাল ডট ইন-কে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জোর গলায় জানিয়েছেন কালীদা -কে নিয়ে তিনি স্পিন-অফ করবেন। এবং সেই ছবি দিয়া অন্নপূর্ণা নয়, নিজেই পরিচালনা করবেন সুজয়! আজকাল ডট ইন-এর তরফেই এ খবর শুনলেন পরান বন্দ্যোপাধ্যায়। শুনে একইসঙ্গে অবাক ও খুশি।
পরান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “আনন্দের কথা। সুজয় যদি করে, খুব খুশিই হব। আর কালীদা চরিত্রটাই তো একটু অন্য ধরনের। আমার নিজেরও খুব প্রিয় চরিত্র একটা মুখোশ পরা চরিত্র। সত্যিকারের চামড়া দিয়ে মুখ যেমন তৈরি হয়, কালীদার 'মুখোশ'টাও ওরকম...তাই দর্শক কালীদাকে নিয়ে সবসময় দোলাচলে থেকেছেন এই ভেবে যে মানুষটা আলোর না কি অন্ধকারের?”
খানিক থেমে বর্ষীয়ান অভিনেতা ফের বলে ওঠেন, “কালীদার তো একটা ইতিহাস আছে। সেটা কিন্তু কম সাংঘাতিক নয়। ওঁর একটা হোমিওপ্যাথি ওষুধের দোকান রয়েছে। ক্রেতারা আসে, যার যেমন 'ওষুধ' প্রয়োজন সেটা কালীদা তাঁকে দেয়।” তাঁর আরও সংযোজন, “যেদিন শরীর সাড়া দেবে, চোখে অল্প হলেও দেখতে পাচ্ছি, অভিনয় করে যাব। কাজ করে যাব।” কিন্তু একটি শর্তও দিলেন পরান বন্দ্যোপাধ্যায়। হেসে বলে ওঠেন, “আমার যা শরীরের অবস্থা, কলকাতা এবং তার আশেপাশের অঞ্চলে শুটিং হলে বিন্দুমাত্র অসুবিধে নেই। খুব দূরে হলে পারব বলে মনে হয় না। তাই আমাকে নিয়ে যদি এই ছবি করতে হয়, এটাই আমার একমাত্র শর্ত, অনুরোধ।”
‘কালীদা’কে তো পরান বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে বেশি কেউ চেনেন না। যদি তিনি সুযোগ পেতেন ‘কালীদা’কে কিছু জিজ্ঞেস করার কী প্রশ্ন করতেন? ঝটিতে নিজস্ব ছন্দে বর্ষীয়ান অভিনেতার জবাব – “আমাকে তোমার দু’নম্বর ওষুধটা দিও কালীদা। যাতে এই পৃথিবীতে আরও কয়েকদিন বেঁচে থাকতে পারি!”
