ছ’বছর পর দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো-এর তৃতীয় সিজনে ফিরে এসেছেন নবজ্যোত সিং সিধু। অর্চনা পূরণ সিংয়ের পাশে আবারও বিচারকের আসনে বসে শুরু করেছেন তিনি নতুন ইনিংস। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সিধু খুলে বললেন কপিল শর্মার পরিশ্রম, প্রতিভা আর সাফল্যের পথচলার অজানা গল্প।

সিধুর কথায়,“প্রতিভা থাকলেই হবে না, সেই প্রতিভাকে মঞ্চ দিতে হয়। সুযোগ না থাকলে সেই প্রতিভার কোনও মানে হয় না। কপিল শর্মা একসময় ভুল্লার থিয়েটার সোসাইটিতে সপ্তাহে দু’দিন কাজ করত, পেত মাত্র ১০০ টাকা। ২০০৬ সালে প্রথম যখন টিভিতে এল, ওর মাথায় চুল প্রায় ছিল না, নোয়াপাতি ভুঁড়ি ছিল, তখনই ওকে দেখতে ৪৫ বছরের মতো লাগত! কিন্তু বড় মঞ্চে পৌঁছনোর পরই ওর প্রতিভা আলো ছড়াতে শুরু করে। যেমন আইপিএলে সুযোগ পেলে অনেকেই রাতারাতি তারকা হয়ে যায়।”

সিধু আরও বলেন, “নিজের প্যাশন ফলো করা সহজ নয়। বাবা-মা বা সমাজ কেউই তেমন উৎসাহ দেয় না। সবাই বলে, ডাক্তার হও, ইঞ্জিনিয়ার হও। কিন্তু কেউ বলে না— তোমার স্বপ্নটা বাঁচাও। তাই নিজের ভয়, সমাজের বিচার, এই ‘সবাই কী বলবে’ মানসিকতাকে ভাঙতে পারলেই শুরু হয় সাফল্যের যাত্রা।”


সাক্ষাৎকারে নিজের জনপ্রিয় একলাইনার বা ‘সিধুইজম’ নিয়েও এক মজার কাহিনি শোনালেন তিনি। “যখন বিজেপিতে ছিলাম, মনমোহন সিং সাহেব আমাকে ডিনারে ডেকেছিলেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। উনি জানতে চেয়েছিলেন— ‘সিধুইজম’ মানে কী? ওঁকে বলা হয়, আমি যা বলি, সেটাই হয়ে যায় সিধুইজম! তখন বুশ হাসতে হাসতে বললেন, ‘একটা পজিটিভ লাইন বলুন।’ আমি বললাম— ‘সূর্যের দিকে মুখ রাখলে নিজের ছায়া কখনো দেখতে হবে না।’ শুনে ওঁর মুখে হাসি ফুটেছিল। আমি কিছু পরিকল্পনা করে বলি না— মন থেকে বলি, তাই মানুষ তা অনুভব করে।”


২০২৩ সালে স্ত্রীর ক্যানসার ধরা পড়ার পর রাজনীতি থেকে বিরতি নিয়েছিলেন নভজ্যোত সিং সিধু। কিছুদিন আগে তিনি নিজের ইউটিউব চ্যানেল শুরু করেন এবং এই বছরই 'দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো'-এর মাধ্যমে ছোটপর্দায় কামব্যাক করেন। পাশাপাশি 'ইন্ডিয়াজ গট ট্যালেন্ট'-এর নতুন মরশুমেও তাঁকে বিচারকের ভূমিকায় দেখা যাবে।

নভজ্যোত সিং সিধু একদিকে নিজের রসবোধ আর উক্তির জন্য যেমন চেনা, অন্যদিকে কপিল শর্মার মতো প্রতিভাবান শিল্পীদের পাশে দাঁড়াতেও পিছপা নন। তাঁর ভাষায়, “সুযোগই প্রতিভার আসল প্রমাণ— আর কপিল শর্মা সেই প্রমাণের জীবন্ত উদাহরণ।”