সংবাদ সংস্থা মুম্বই: বলিউডে প্রেম ও বিয়ে—এই দুই শব্দের মধ্যে দূরত্ব অনেক সময়ই নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়। বহু সম্পর্কই শিরোনামে উঠে এলেও থেমে গেছে মাঝপথে, কখনও কেরিয়ারের চাপে, কখনও বা ব্যক্তিগত মতানৈক্যে। ঠিক তেমনই একটি চর্চিত, আবেগঘন সম্পর্ক ছিল বলিউডের প্রথম সুপারস্টার রাজেশ খান্না ও অভিনেত্রী অঞ্জু মাহেন্দ্রুর।
১৯৬৬ থেকে ১৯৭১—এই ছ’বছরের প্রেমে ছিলেন রাজেশ খান্না ও অঞ্জু মাহেন্দ্রু। এক ছাদের তলায় থেকেছেন, ছিল লিভ-ইন রিলেশনশিপ। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে যায় ঠিক সেখানেই, যেখানে সাধারণত গল্পগুলো নতুন মোড় নেয়—বিয়ের প্রস্তাব। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে প্রবীণ অভিনেত্রী মুমতাজ খোলাখুলি বললেন এই সম্পর্ক নিয়ে। তাঁর মতে, “অঞ্জুর প্রথম স্বামী মারা গিয়েছিলেন। এরপর তিনি বছরখানেক রাজেশ খান্নার সঙ্গে থাকতেন, স্ত্রীসুলভ সমস্ত দায়িত্ব পালন করতেন। ঘর সামলাতেন, তাঁর যত্ন নিতেন।”
মুমতাজ আরও জানান, “আমার বাড়ি ছিল কাছাকাছি, আমি আর আমার স্বামী ওঁর বাড়িতে যেতাম। দেখেছি, অঞ্জু তখন একেবারে ‘বিয়ের কাগজ না থাকা’ স্ত্রীর মতোই জীবন কাটাচ্ছেন।” এবং সেইখানেই মুমতাজের মন্তব্য—“এটাই আসল, বিয়ে হওয়া না হওয়া বড় কথা নয়। সম্পর্কের গভীরতা অনেক বেশি জরুরি।”
তাঁদের প্রেম শুরু হয় ১৯৬৬ সালে। একসঙ্গে থাকা, পরস্পরের প্রতি ভালবাসা—সব ছিল। কিন্তু ১৯৭১ সালে যখন রাজেশ খান্না বিয়ের প্রস্তাব দেন, অঞ্জু তাতে রাজি হননি। তাঁর তখনকার অগ্রাধিকার ছিল কেরিয়ার। সেখান থেকেই শুরু দূরত্ব। এরপর শোনা যায়, অঞ্জু মাহেন্দ্রু বাগদান করেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার গ্যারি সোবার্সের সঙ্গে। কিন্তু সেই সম্পর্কও ভেঙে যায়। অঞ্জু আবার যোগাযোগ করেন রাজেশের সঙ্গে। ততদিনে অবশ্য অনেক দেরি হয়ে গেছে।
১৯৭৩ সালে রাজেশ খান্না বিয়ে করেন তখন সদ্য-তরুণী ডিম্পল কাপাডিয়াকে। অন্যদিকে, অঞ্জু ১৯৭২-এ বিয়ে করেন অভিনেতা ইমতিয়াজ খানকে। সেই দাম্পত্য টিকেছিল ১৯৭৯ পর্যন্ত।তবুও সম্পর্কের এক অদ্ভুত সূক্ষ্ম টান ছিল রাজেশ ও অঞ্জুর মধ্যে। রাজেশ খান্নার জীবনের শেষ সময়েও পাশে ছিলেন অঞ্জু মাহেন্দ্রু। অনেকেই বলেন, মৃত্যুর আগের দিনগুলিতে তিনিই ছিলেন সেই ছায়া, যে প্রেমে ভর করেই রাজেশ বেঁচে ছিলেন একান্তে। এ এক অসমাপ্ত প্রেমের গল্প—যেখানে বিয়ের কোনও আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, কিন্তু আত্মিক বন্ধনটা ছিল নিখাদ। বলিউডের ট্র্যাজিক লাভ স্টোরির তালিকায় এই অধ্যায়টি আজও অন্যতম।
