বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্রর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমেছে ইন্ডাস্ট্রিতে। তবে পরিচালক অনিল শর্মার কাছে এ মৃত্যু যেন ব্যক্তিগত আঘাত। সাত-সাতটি ছবিতে একসঙ্গে কাজ করা এই পরিচালক জানালেন, ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর পর তাঁর এক স্বপ্ন চিরতরে অপূর্ণ রইল।

'গদর' ছবি খ্যাত এই পরিচালক স্পষ্ট বললেন, “ ‘আপনে’ ছবির সিক্যুয়েল আর সম্ভব নয়। আপনে তো আপনজনদের নিয়েই হয়। ধরমজি ছাড়া এই ছবি হওয়া অসম্ভব। চিত্রনাট্য তৈরি ছিল, সব ঠিকঠাক চলছিল… কিন্তু তিনি চলে গেলেন। আসলে, কিছু স্বপ্ন তো কখনও পূরণ হয় না।” ধর্মেন্দ্র, সানি এবং ববি দিওল-তিনজনকে প্রায় এক দশক পর আবার একসঙ্গে পর্দায় ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা ছিল শর্মার। কিন্তু ধর্মেন্দ্রর মৃত্যু সেই পরিকল্পনায় বড়সড় পূর্ণচ্ছেদ টেনে দিল।

অনিল শর্মা জানান, গত অক্টোবরেই তাঁর শেষ দেখা হয় ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে। স্মৃতির ভাঁড়ারে এখনও গুনগুন করছে কিংবদন্তির সেই কথা, “অনিল, কোনও ভাল গল্প আন… ভাল ছবিতে কাজ করতে চাই। ক্যামেরা আমার প্রেমিকা, আমাকে ডাকছে। আমাকে তার সামনে ফিরে যেতেই হবে।”
শর্মা বলেন, “তিনি যেন নতুন উদ্যমে ফিরতে চাইছিলেন। এত ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও চলে গেলেন… এটা মেনে নেওয়া কঠিন।”


শর্মা প্রথম ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে কাজ করেন ‘হুকুমত’ (১৯৮৭)-এ। এরপর এলান-এ-জং, ফরিশতে, তহলকা, অপনে একসঙ্গে কাজের স্মৃতি ভরপুর। এমনকী ‘সিং সাব দ্য গ্রেট’ ছবিতেও ধর্মেন্দ্র  অতিথি শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিলেন।

অতীতের একটি ঘটনা মনে করে শর্মা জানান, “বার্নিং ট্রেন–এর সেটে প্রথম দেখি তাঁকে। আমি তখন ১৮। কল শিট নিয়ে গিয়েছিলাম। মাথায় হাত রেখে বলেছিলেন, ‘ খুব পরিশ্রম করবি, মন দিয়ে কাজ করবি।’ সেই আশীর্বাদ আজও পথ দেখায় আমাকে।”


ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে ছবির শুটিং প্রসঙ্গে শর্মা বলেন, “আমাদের ইউনিট ৬টায় পৌঁছনোর আগেই তিনি মাঠে জগিং করতেন। হাজার হাজার লোক শুধু তাঁকে দেখার জন্য জড়ো হতো। আমরা লোকেশন বদলাতাম, হোটেল বদলাতাম… কিন্তু মানুষকে আটকানো যেত না। আসলে ধরমজি মানেই ছিল জাদু।” স্মৃতি হাতড়ে আরও বলে উঠলেন, “তিনি ছিলেন অসাধারণ অভিনেতা, দুর্দান্ত মানুষ। চরিত্রে ডুবে যাওয়ার মতো শিল্পী বিরল। মথুরায় যখন থাকতাম, তখন দু’টি নামই প্রভাব বিস্তার করত, রাজেশ খান্না আর ধর্মেন্দ্র। তাঁর ফ্যান-সংযোগ ছিল অবিশ্বাস্য। তিনি নিজে জানতেনই না, কত বড় কিংবদন্তি তিনি ছিলেন।”

অনিল শর্মার কথায় স্পষ্ট, ধর্মেন্দ্র শুধু একজন অভিনেতা নন, তিনি ছিলেন এক যুগের আবেগ। আর তাঁর বিদায়ে একসঙ্গে বহু স্মৃতি, বহু স্বপ্নও যেন নীরবে বিদায় নিল।