আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের বহু রাজ্যে লিটার প্রতি পেট্রলের দাম ১০০ টাকার উপরে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম ওঠানামা করলেও এই দামে পরিবর্তন হয়নি বেশ কয়েক বছর। ভারতীয়রা এক লিটার তেল কিনতে ১০০ টাকা খরচ করলেও প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে দাম প্রায় ২১ টাকা কম। আমেরিকার তুলনায় অনেক বেশী দামে তেল কিনতে হচ্ছে ভারতীয়দের। 

তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয়রা অক্টেন ৯৫ পেট্রলের জন্য গড়ে ১০১ টাকা খরচ করে থাকেন। যেখানে আমেরিকানরা ৭৯.৪ টাকা এবং পাকিস্তানিরা ৮০.৪ টাকা খরচ করেন। অন্য দিকে, চীন প্রতি লিটারে ৯৪.৫ টাকা এবং বাংলাদেশে ৮৫ টাকা পেট্রলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভুটানে পেট্রলের দাম ছিল ৫৮.৮ টাকা, যেখানে লিবিয়া এবং ইরানে জ্বালানির দাম ছিল আরও আড়াই টাকা কম।

কেন ভারতে তেলের দাম এত বেশি? এর অন্যতম উচ্চ করের হার। যার মধ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয় আবগারি শুল্ক, রাজ্য ভ্যাট/বিক্রয় কর এবং ডিলার কমিশন। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কম থাকলেও জ্বালানির দাম তেমন কমে না। ভারত এমন একটি মূল্য নির্ধারণ ব্যবস্থা অনুসরণ করে যেখানে প্রতিদিন দামের সংশোধন করা হয়। এর উদ্দেশ্য, দাম কমলে সেই লাভ যেন উপভোক্তার কাছে পৌঁছনো যায়। সরকার মূল মূল্যের উপর কর আরোপ করে।

মুদ্রা বিনিময় হারের কারণেও তেলের দাম প্রভাবিত হয়। যার ফলে অপরিশোধিত তেলের আমদানি খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে। ভারত তার প্রয়োজনের প্রায় ৯০% অপরিশোধিত তেল বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে। মার্কিন তথ্য অনুসারে, পশ্চিমি দেশগুলি প্রায় ৪০% অপরিশোধিত তেল আমদানি করে এবং বাকিটা আসে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন থেকে। এই কারণেই ইরান এবং লিবিয়ার মতো দেশগুলিতে পেট্রলের দাম অস্বাভাবিকভাবে কম- তাদের সরবরাহের প্রায় পুরোটাই আসে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে।

ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধ এবং মার্কিন পারস্পরিক শুল্ক আরোপের অনিশ্চয়তার কারণে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে তেলের দামে ব্যাপক হেরফের লক্ষ্য করা গিয়েছে। ওপেক গোষ্ঠী শনিবার আগস্ট মাসে প্রতিদিন ৫,৪৮,০০০ ব্যারেল উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়েও রাজি হয়েছে। যার ফলে সপ্তাহান্তে দাম কমেছে।