আজকাল ওয়েবডেস্ক: বুধবার প্রাথমিক ঊর্ধ্বগতি মুছে দিয়ে পতনে শেষ করল দেশের মানক শেয়ার সূচকগুলি। BSE সেনসেক্স ২০৬.৬১ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৮০,১৫৭.৮৮-এ, আর NSE নিফটি৫০ ৪৫.৪৫ পয়েন্ট হ্রাস পেয়ে বন্ধ হয় ২৪,৫৭৯.৬০-এ। দিনের শুরুতে উভয় সূচকই প্রায় ০.৫% করে বেড়েছিল। কিন্তু দুপুরের পর আর্থিক খাতে বিক্রি বাজারের মনোভাবকে চাপে ফেলে। ট্রেডারদের মতে, ফাইনান্সিয়াল শেয়ারে এক্সপায়ারি-জনিত সেল-অফ ছিল মূল কারণ। এছাড়া, ২ সেপ্টেম্বর থেকে এনএসই-র সাপ্তাহিক ডেরিভেটিভস এক্সপায়ারি বৃহস্পতিবার থেকে মঙ্গলবারে সরানোয় অস্থিরতা বেড়েছে। সকালে ০.৩৫% বাড়লেও, শেষ পর্যন্ত আর্থিক সূচক ০.৭% হ্রাসে বন্ধ হয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন,শক্তিশালী ম্যাক্রো ডেটার জেরে প্রাথমিক লাভ দেখালেও, শেষ পর্যন্ত লাভ তোলা ও সতর্কতার কারণে বাজার নেমে আসে। আসন্ন জিএসটি কাউন্সিল মিটিং ও F&O এক্সপায়ারি নিয়ে অনিশ্চয়তা, বিশেষত ব্যাংকিং শেয়ারগুলির পতন বাজারকে টেনে নামা। ইথানল নীতি শিথিল হওয়ায় চিনি শেয়ারে র্যা লি দেখা গেছে, আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডোভিশ মন্তব্যের কারণে রফতানি-ভিত্তিক কোম্পানিগুলি বাড়তি চাহিদা পেয়েছে। তবে বিনিয়োগকারীরা এখনো সতর্ক রয়েছেন এবং স্বল্পমেয়াদে দেশীয় ভোক্তা ব্যয়ের দিকেই মূল নজর দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: এই দুই ব্যাঙ্কের সুদের হার কমল, কী সুবিধা পাবেন গ্রাহকরা
কোন খাত এগিয়ে, কোন খাত পিছিয়ে
ভোক্তা শেয়ার (FMCG): সম্ভাব্য GST হ্রাসের প্রত্যাশায় উজ্জ্বল পারফরম্যান্স। নিফটি FMCG সূচক ০.৮% বেড়েছে। নেসলে ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, ডাবর ও ইমামি ১% থেকে ৪% পর্যন্ত লাভ করেছে। জিএসটি কাউন্সিল (৩-৪ সেপ্টেম্বর বৈঠক) প্রায় ১৭৫টি পণ্যে যেমন শ্যাম্পু, হাইব্রিড গাড়ি ও কনজিউমার ইলেকট্রনিক্সে কমপক্ষে ১০ শতাংশ পয়েন্ট হারে কর কমানোর প্রস্তাব বিবেচনা করতে পারে।
এনার্জি শেয়ার: রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ১% বাড়ায় নিফটি এনার্জি সূচকও ১% উর্ধ্বমুখী। মর্গান স্ট্যানলি রিলায়েন্সের শেয়ারের লক্ষ্যমূল্য বাড়িয়েছে, চিনের “অ্যান্টি-ইনভলিউশন” উদ্যোগ থেকে সম্ভাব্য লাভের যুক্তিতে। ১৬টি বড় খাতের মধ্যে ৯টি খাত লাভে বন্ধ হয়েছে। ছোট ও মাঝারি মানের শেয়ার সূচক (স্মল-ক্যাপ ও মিড-ক্যাপ) প্রত্যেকে ০.৩% বেড়েছে।

তবে বাজারের যা হাল তাতে এই পরিস্থিতি সহজে মিটবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। একদিকে মার্কিন নীতি খানিকটা হলেও বাজারে বড় ধাক্কা দিয়েছে। অন্যদিকে বাজার এই বছর অনেকটা নিচের দিকে রয়েছে। ফলে সেখান থেকে সহজে বেরিয়ে আসা সহজ হবে না। বাজারে বিনিয়োগকারীরা অতি সাবধানী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে সেখান থেকে বাজারে নতুনভাবে বিনিয়োগ করতে হলে বড় ধাক্কা দিতে হবে।
যদি জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক থেকে সদর্থক কিছু না মেলে তাহলে সেখান থেকে বাজার ঘুরে যাবে না। বরং সেখান থেকে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হবে। তখন বাজার থেকে অনেক বেশি সমস্যা তৈরি হতে পারে। তখন বিনিয়োগকারীরা কী করেন সেটাই দেখার।
