আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের টাকার বিরাট পতন। মঙ্গলবার প্রথমবার মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার দামে সবথেকে বড় পতন ঘটল। দুর্বল বিশ্বের বাজার, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের টানা তহবিল প্রত্যাহার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা। সব মিলিয়ে টাকার ওপর চাপ এমনিতেই ছিল। 


রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার লেনদেনের একটি পর্যায়ে টাকা প্রতি ডলারে ৯১.০৭৫ পর্যন্ত নেমে যায়। শেষ পর্যন্ত দিনের শেষে প্রায় ০.৩ শতাংশ দরপতনের সঙ্গে টাকা বন্ধ হয় ৯১.০২৭৫। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে টাকার দর কমেছে ৬ শতাংশেরও বেশি, যা ২০২৫ সালে টাকাকে অন্যতম দুর্বল হিসেবে পরিণত করল।


বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্পোরেট ও আমদানিকারকদের হেজিং চাহিদা এবং পোর্টফোলিও বিনিয়োগ থেকে অর্থ বেরিয়ে যাওয়ার প্রবণতা টাকার ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। একই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা এখনও সতর্ক রয়েছেন।


বাজার বিশেষজ্ঞরা আরও মনে করছেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় স্পষ্ট অগ্রগতি না হলে টাকার দামে অর্থপূর্ণ কোনও গতি আপাতত দেখা যাবে না।


বাণিজ্য তথ্যে স্বস্তি, তবে চাপ কাটেনি
নভেম্বর মাসের বাণিজ্য পরিসংখ্যান কিছুটা স্বস্তির ইঙ্গিত দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক আরোপের পরও ভারতের রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আলোচনায় ভারতের অবস্থান কিছুটা শক্ত হয়েছে এবং দ্রুত কোনও চুক্তিতে যাওয়ার চাপও কিছুটা কমেছে।
তবে এই ইতিবাচক তথ্য এখনও টাকার দামে প্রতিফলিত হয়নি। বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে শক্তিশালী ডলারের আধিপত্য এবং বিশ্বের অনিশ্চয়তা টাকার ওপর প্রভাব বজায় রেখেছে।


নীরব দর্শকের ভূমিকায় আরবিআই
সাধারণত টাকার তীব্র পতন দেখা দিলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া বাজারে ডলার বিক্রি করে অস্থিরতা কমানোর চেষ্টা করে। তবে এবারের পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে তুলনামূলকভাবে নীরব থাকতেই দেখা গিয়েছে।


এফআইআই বিক্রি 
চলতি বছরে এখন পর্যন্ত বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ভারতীয় শেয়ারবাজার থেকে ১৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ তুলে নিয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্বের বাজারে ঝুঁকি এড়ানোর প্রবণতা মঙ্গলবার দেশের শেয়ারবাজারেও প্রভাব ফেলেছে। বেঞ্চমার্ক নিফটি ৫০ সূচক প্রায় ০.৬ শতাংশ কমেছে।


এই মুহূর্তে বিনিয়োগকারীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক তথ্য, বিশ্বের ঝুঁকির মনোভাব এবং মূলধন প্রবাহের গতিপ্রকৃতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এরফলে বোঝা যাচ্ছে আগামী দিনে টাকার দিক কোন পথে যেতে পারে।