আজকাল ওয়েবডেস্ক: দেশের উন্নয়নে তরুণদের ৭০ ঘন্টা কাজের কথা আগেই বলেছিলেন ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তি। গত দু'বছর আগে নারায়ণ মূর্তির মতামত ঘিকে তীব্র বিতর্ক হয়। তবে, নিজের অবস্থানে অনড় তিনি। সম্প্রতি চীনের '৯-৯-৬' কর্মসংস্কৃতির উদাহরণ তুলে ধরে ৭২ ঘন্টা কাজের বিষয়টিকে আরও জোরাল করেছেন ইনফোসিসের ৭৯ বছর বয়সী সহ-প্রতিষ্ঠাতা। 

নারায়ণ মূর্তি এর আগে ২০২৩ সালে বলেছিলেন যে, ভারতীয়দের জাতি গঠনের জন্য সপ্তাহে ৭০ ঘন্টা কাজ করা উচিত। এবার, তিনি চীনের কর্মসংস্কৃতিকে পুঁজি করেছেন। তাঁর মতে, এই মডেল অনুসরণ করে প্রতিবেসী দেশটি গত কয়েক দশকে প্রভূত উন্নতি করেছে। যা প্রযাশই দুনিয়ার বাকি রাষ্ট্রগুলির কাছে শিল্প ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির মানদণ্ড হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

৯-৯-৬ নিয়ম কী?

৯-৯-৬ নিয়মটি চীনা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলিতে একসময় প্রচলিত কাজের সময়সূচী হিসাবে বিবেচিত হত। এক্ষেত্রে কর্মীদের সপ্তাহে ছয় দিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাজ করতে হত। এর অর্থ হল সপ্তাহে ৭২ ঘন্টার কাজ।

চীনের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সময়, বিশেষ করে আলিবাবা এবং হুয়াওয়ের মতো কোম্পানিগুলিতে এই কর্মসময়সূচি  জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু উচ্চ চাপ, ক্লান্তি এবং কর্মজীবনের ভারসাম্যহীনতার জন্য এই নিয়ম তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। ২০২১ সালে, চীনের সুপ্রিম কোর্ট ৯-৯-৬ সময়সূচীকে অবৈধ ঘোষণা করে। 

রিপাবলিক টিভির সঙ্গে কথা বলার সময়, নারায়ণ মূর্তি চীনের উৎপাদনশীলতার পদ্ধতির কথা উল্লেখ করে বলেন, যদি তরুণ ভারতীয়রা দেশকে একই গতিতে এগিয়ে নিতে চান তবে তাঁদের আরও কঠোর পরিশ্রম করার জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত।

নারায়ণ মূর্তি বলেছেন, "চীনে একটি কথা আছে, ৯, ৯, ৬। আপনি জানেন এর অর্থ কী? সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা, সপ্তাহে ৬ দিন। অর্থাৎ সপ্তাহে ৭২ ঘন্টা কাজের সময়।" তিনি বিশ্বাস করেন যে, ভারতীয় তরুণদের একই রকম কাজের সময়সূচি অনুসরণ করা উচিত।

মূর্তি ফের বলেছেন, কর্মজীবনের ভারসাম্য নিয়ে চিন্তা করার আগে ব্যক্তিদের প্রথমে তাদের ক্যারিয়ার গড়ার দিকে মনোনিবেশ করা উচিত। তিনি বলেছিলেন যে, " মানুষের জীবন লাভ করা উচিত এবং তারপরে কর্মজীবনের ভারসাম্য নিয়ে চিন্তা করা উচিত।"

কেন তিনি মনে করেন যে ভারতের দীর্ঘ কাজের সময়ের প্রয়োজন
উৎপাদন বা অন্যান্য ক্ষেত্রে ভারত বাস্তবসম্মতভাবে চীনকে ছাড়িয়ে যেতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে, নারায়ণ মূর্তি বলেন যে- তিনি বিশ্বাস করেন যে এটা সম্ভব, তবে কেবল কঠোর প্রচেষ্টার মাধ্যমে। তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে ভারতীয় অর্থনীতি ৬.৫৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা তিনি "যুক্তিসঙ্গত গতি" হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তবে চীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বারতে সমাজের প্রতিটি অংশের কাছ থেকে অসাধারণ প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন। উল্লেখ্য, চীনের অর্থনীতির বৃদ্ধি বর্তমানে ভারতের চেয়ে প্রায় ছয় গুণ বেশি।

মূর্তি বলেছেন, "আমাদের বুঝতে হবে কাজটি সহজ নয়। এর জন্য আমাদের প্রত্যেককে আমাদের নিজস্ব কর্মকাণ্ডের জন্য উচ্চ মানদণ্ড স্থাপন করতে হবে। যা ভারতকে চীনের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।"