আজকাল ওয়েবডেস্ক: এমপ্লয়িজ পেনশন স্কিম চালু হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। এটি ভারতের সংগঠিত খাতে কর্মরত কর্মীদের জন্য একটি অবসরকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্কিমটি পরিচালনা করে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন। চাকরিজীবীরা তাদের নিয়মিত প্রভিডেন্ট ফান্ড-এর অংশ হিসেবে EPS সুবিধা পান। নতুন বা পুরনো যেকোনও সদস্য এই স্কিমের আওতায় আসতে পারেন।


কর্মচারী ও নিয়োগকর্তা উভয়েই মৌলিক বেতনের ১২% করে প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা দেন। এর মধ্যে ৮.৩৩% যায় EPS-এ, আর বাকি ৩.৬৭% জমা হয় EPF অ্যাকাউন্টে, যেটিতে সুদ পাওয়া যায়।


উদাহরণস্বরূপ, যদি কারও বেসিক বেতন ও ডিএ মিলে ৬,০০০ টাকা হয়, তবে ৮.৩৩% হিসেবে ৫০০ টাকা EPS-এ যাওয়ার কথা। কিন্তু যেহেতু EPS-এ সর্বোচ্চ অবদান ১,২৫০ টাকা মাসিক (১৫,০০০ টাকা বার্ষিক) নির্ধারিত, তাই ৬,০০০ টাকার বেশি বেতনধারী কর্মীর ক্ষেত্রেও EPS-এ সর্বাধিক ১,২৫০ টাকা যাবে। অতিরিক্ত অর্থ (যেমন বাকি ৪,৭৫০ টাকা) EPF-এ জমা হয়, যেখানে সুদ পাওয়া যায়। EPS-এর জমা অংশে কোনো সুদ মেলে না।

আরও পড়ুন: পৃথিবীতে ফিরছে ডোডো পাখি, সফল হল এই যুগান্তকারী গবেষণা


EPS পেনশন পেতে হলে কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়:
ন্যূনতম ১০ বছর চাকরি করতে হবে।
বয়স হতে হবে অন্তত ৫৮ বছর।
চাইলে সদস্যরা ৫০ বছর বয়স থেকে কম হারে পেনশন তুলতে পারেন।
আবার কেউ চাইলে পেনশন ২ বছর পিছিয়েও (৬০ বছর পর্যন্ত) নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে প্রতি বছর অতিরিক্ত ৪% হারে বেশি পেনশন পাবেন।


EPS-এ ন্যূনতম পেনশন ১,০০০ টাকা মাসিক। সর্বাধিক পেনশন নির্ভর করে নির্ধারিত পেনশনেবল স্যালারি ও পেনশনেবল সার্ভিস ইয়ার্স-এর ওপর। সর্বাধিক পেনশনযোগ্য বেতন = ১৫,০০০ টাকা (ফিক্সড,)সর্বাধিক পেনশনযোগ্য চাকরির মেয়াদ = ৩৫ বছর। 
পেনশনের অঙ্ক নির্ণয় করা হয় নিচের সূত্রে
পেনশনেবল স্যালারি: ১৫,০০০ টাকা
চাকরির মেয়াদ: ২৫ বছর
(১৫,০০০ × ২৫) ÷ ৭০ = ৫,৩৫৭.১৪ টাকা মাসিক পেনশন
পেনশনেবল স্যালারি: ১৫,০০০ টাকা
চাকরির মেয়াদ: ৩৫ বছর বা তার বেশি
(১৫,০০০ × ৩৫) ÷ ৭০ = ৭,৫০০ টাকা মাসিক পেনশন
অর্থাৎ, সর্বাধিক ৩৫ বছরের চাকরি এবং সর্বাধিক ১৫,০০০ টাকা বেতন ধরা হলে EPS থেকে একজন কর্মী সর্বাধিক ৭,৫০০ টাকা মাসিক পেনশন পেতে পারেন।


EPS হল সংগঠিত খাতে কর্মরতদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য অবসরকালীন আয়ের উৎস। যদিও এখানে সুদের সুবিধা নেই, তবুও নিয়মিত চাকরি করা এবং ন্যূনতম শর্ত পূরণ করা কর্মীরা আজীবন পেনশন পান। তবে পেনশনের সীমা (সর্বোচ্চ বেতন ১৫,০০০ টাকা এবং সর্বাধিক চাকরি ৩৫ বছর) নির্দিষ্ট থাকায় EPS থেকে উচ্চ অঙ্কের আয় সম্ভব নয়। তাই অবসর জীবনে আর্থিক নিরাপত্তার জন্য EPS-এর পাশাপাশি অন্যান্য বিনিয়োগ ও সঞ্চয় পরিকল্পনাও জরুরি।