আজকাল ওয়েবডেস্ক: বুধবার ঘোষিত জিএসটি সংস্কারের পর সিগারেট এবং অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য, যেমন গুটখার দাম বাড়তে চলেছে, তবে বিড়ির দাম কিছুটা কমতে পারে। আগে বিড়ির উপর জিএসটি ছিল ২৮ শতাংশ ছিল তা কমিয়ে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে। বিড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত তেন্দু পাতার উপর জিএসটি ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। সিগারেট এবং অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্যের উপর বর্তমানে ২৮ শতাংশ জিএসটি বসানো রয়েছে। বুধবারের সংস্কারের ফলে জিএসটি বৃদ্ধি পেয়ে ৪০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াবে। এর ফলে আরও দামি হতে পারে সিগারেট এবং গুটখা।

দেশীয় বিড়ি শিল্পের উপর নির্ভরশীল ৭০ লক্ষেরও বেশি লোককে রক্ষা করা উদ্দেশ্য বিড়ির উপর জিএসটি কমানোর সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এই পদক্ষেপ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের হতবাক করেছে। সকলেরই একটাই প্রশ্ন, সিগারেট ক্ষতিকারক, কিন্তু বিড়ি ক্ষতিকারক নয়? কেউ কেউ এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনের যোগসূত্রও খুঁজে বার করেছেন। 

অনেকেই উল্লেখ করেছেন যে বিড়ি কীভাবে সিগারেটের চেয়ে বেশি ক্ষতিকারক এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমাজের সুবিধাবঞ্চিত অংশের মানুষ সেবন করে। যার ফলে তারা গুরুতর অসুস্থতার সম্মুখীন হন। ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্যও করা হয়েছে, কেউ কেউ বলেছেন যে বিড়ির উপর জিএসটি কমানোর ফলে দেখা যাচ্ছে যে কেন্দ্র জনসাধারণের জন্য কাজ করছে।

আরও পড়ুন: জিএসটির নতুন ধারা, শূণ্য থেকে শুরু করে ৪০ শতাংশের ঘরে পড়ছে কোনগুলি, দেখে নিন একঝলকে

এর আগে, আরএসএস-সহ বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠন বিড়ির উপর ২৮ শতাংশ জিএসটি হার কমানোর জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল। তাদের যুক্তি ছিল, এটি শ্রমিকদের সাহায্য করবে। আরএসএস-এর সঙ্গে যুক্ত স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি লিখে জানিয়েছে যে ২৮ শতাংশ জিএসটি বিড়ি উৎপাদন শিল্পে কর্মসংস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এর ফলে অনিবন্ধিত বিড়ি উৎপাদন ইউনিটের শ্রমিকদেরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। মঞ্চ আরও জানিয়েছে, অতীতে বিড়ির উপর অল্প পরিমাণে কেন্দ্রীয় আবগারি শুল্ক আরোপ করা হত। আরও বলা হয়েছে যে, বিড়ি শ্রমিকদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু রাজ্য বিড়ির উপর বিক্রয় করও আরোপ করেনি।

কেন্দ্র জানিয়েছে, জিএসটি হারের পরিবর্তনগুলি ২২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে। তবে সিগারেট, পান মশলা, গুটখা, বিড়ি এবং অন্যান্য তামাকজাত পণ্য ক্ষতিপূরণ সেস অ্যাকাউন্টের অধীনে ঋণ এবং সুদ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত একই হারে বিক্রি অব্যাহত থাকবে।

বুধবার ৫৬তম জিএসটি কাউন্সিল বৈঠকে ‘জিএসটি ২.০’-এর আওতায় এক দীর্ঘ তালিকার কর পরিবর্তন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সংস্কারের মূল অংশ হল বহু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবাকে জিএসটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া। এর আওতায় এসেছে খাদ্যপণ্য, ওষুধ, শিক্ষা সরঞ্জাম, বিমা এবং এমনকি প্রতিরক্ষা ও বিমান চলাচলের নির্দিষ্ট কিছু পণ্যও। গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত বেশ কিছু খাদ্যপণ্য থেকে জিএসটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার কাউন্সিলের প্রথম বৈঠকের পরেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন নতুন জিএসটি হার ঘোষণা করেছেন। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন হারে জিএসটি কার্যকর করা হবে।