অতীশ সেন, ডুয়ার্স: বকেয়া বেতনের দাবীতে ফের জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন চা শ্রমিকেরা। জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকের তোতাপাড়া চা বাগানের শ্রমিকেরা তাদের বকেয়া তিনটি পাক্ষিক বেতন পুজোর আগেই প্রদানের দাবিতে সারাদিন বানারহাটের এল.আর.পি মোড়ে ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন।
পজোর মুখে দিনভর ভোগান্তির শিকার হলেন পথ চলতি সাধারণ মানুষ সহ থেকে নিত্যযাত্রীরা। আটকে থাকল সেনা বাহিনী-এর গাড়ি সহ প্রচুর দূরপাল্লার গাড়ি। বিগত তিন সপ্তাহে ৫ বার অবরুদ্ধ হল ডুয়ার্সের লাইফলাইন ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক।
শ্রমিকেরা জানান, তোতাপাড়া চা বাগানের শ্রমিকদের পাক্ষিক বেতন (১২ দিন কাজের মজুরি) এর তিনটি কিস্তি বকেয়া রয়েছে। সাবস্টাফদের একমাসের বেতন এবং স্টাফদের ছয় মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এবার ১০ শতাংশ হারে বোনাস পাওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ছিলই, পুজোর আগেই বকেয়া মজুরি দেওয়ার দাবিতে তাঁরা ম্যানেজারের কাছে দাবি জানাচ্ছিলেন। তবে এই বিষয়ে কোনও সদর্থক উত্তর না পাওয়ায় বুধবার সকালে তাঁরা ম্যানেজারকে ঘেরাও করে। এর পর তাকে সাথে নিয়ে বানারহাটে এসে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বসে পড়েন। সেখানেই তাঁরা সারাদিন ম্যানেজারকে ঘেরাও করে রাখেন। এদিন অবরোধে থাকা প্রচুর শ্রমিক মদ্যপ অবস্থায় পথ চলতি সাধারণের সাথে দুর্ব্যবহার ও অশালীন আচরণ করেন বলে অভিযোগ। দুপুরে ঘটনাস্থলে আসেন ধূপগুড়ি মহকুমার এস.ডি.পি.ও গিয়ালসেন লেপচা, জলপাইগুড়ি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীন) সমীর আহমেদ, বানারহাটের বিডিও নিরঞ্জন বর্মণ। তাঁরা কয়েক দফায় আলোচনা চালালেও শ্রমিকেরা নিজেদের দাবীতে ছিলেন অনড়। সন্ধে ৭ টার সময় পুলিশ অবরোধ তুলে দেয়।
চা শ্রমিকরা যে কোনও সমস্যাতেই এখন জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। বোনাসের দাবিতে ১৭ই সেপ্টেম্বর ধরনীপুর চা বাগানের শ্রমিকেরা জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। ২৪শে সেপ্টেম্বর গ্যান্দ্রাপাড়া চা বাগান, ২৬শে সেপ্টেম্বর লোকসান চা বাগান, ১লা অক্টোবর অ্যান্ড্রু ইউল গোষ্ঠী চারটি চা বাগানের শ্রমিকেরা এবং ৩রা অক্টোবর নাগরাকাটার গ্রাসমোড় এবং বানারহাট চা বাগানের শ্রমিকেরা জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। এরই সঙ্গে ২৬শে সেপ্টেম্বর পলাশবাড়ি চা বাগানের শ্রমিকেরা ভারত-ভুটান সড়ক অবরোধ করে। লাগাতার রাস্তা অবরোধের জেরে পূজার আগে ব্যবসা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমন সাধারণ মানুষও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
