বিভাস ভট্টাচার্য: স্থায়ী পদে বিরাট সংখ্যক নিয়োগ হতে চলেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরে। জানা গিয়েছে, এই পদগুলির মধ্যে একদিকে যেমন রয়েছে চিকিৎসক ও নার্স তেমনি রয়েছে বিভিন্ন বিভাগের জন্য 'টেকনিশিয়ান'। নিয়োগ হতে চলেছে ফার্মাসিস্ট পদেও। সেইসঙ্গে ডাক্তারি পড়ুয়াদের কথা ভেবে তাঁদের জন্য নিয়োগ হবে শিক্ষক চিকিৎসক। আগামী ৮ আগস্ট এই সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইট এবং বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হবে বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে। যদিও এবিষয়ে রাজ্যের হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান ও শ্রীরামপুর বিধানসভার বিধায়ক ডাঃ সুদীপ্ত রায় কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কখনও চিকিৎসকের অভাব আবার কখনও ল্যাবরেটরি বা অন্য ক্ষেত্রে টেকনিশিয়ান-এর অভাব। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির তরফে বারবার অভিযোগ তোলা হয়েছে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী না থাকাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল দিনদিন 'বেহাল' হয়ে যাচ্ছে। যার জেরে ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। যেহেতু রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতেই গরীব, মধ্যবিত্ত ও প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ চিকিৎসা করাতে ছোটেন সেজন্য এই হাসপাতালগুলিতে যদি যথেষ্ট সংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মী না থাকেন তবে সাধারণ মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন।
জানা গিয়েছে, রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১২২৭ জন চিকিৎসককে নিয়োগ করা হতে চলেছে। নার্সিং বিভাগ (গ্রেড ২)-এ নিয়োগ করা হবে ৫০১৮ জন নার্স। এঁদের মধ্যে রয়েছেন ৩৪৪ জন পুরুষ। এই নিয়োগের মধ্যে মেডিক্যাল এডুকেশন সার্ভিস-এর আওতাধীনে নিয়োগ করা হবে ৬২১ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। এঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নিয়োগ করা হবে জেনারেল মেডিসিন বিভাগে। সেখানে নিয়োগ করা হবে ৪৮ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরকে। সংখ্যার হিসেবে এর পরেই রয়েছে অ্যানেসথেসিওলজি। যেখানে নিয়োগ করা হবে ৪৭ জন। জেনারেল সার্জারি বিভাগে নিয়োগ করা হবে ৪৩ জন। এছাড়াও চেস্ট মেডিসিন, অ্যানাটমি, কার্ডিওলজি-সহ অন্যান্য বিভাগগুলিতেও হবে এই নিয়োগ।
নিয়োগ করা হবে মেডিক্যাল টেকনোলজি (গ্রেড ৩) বিভাগেও। ফিজিসিস্ট কাম রেডিয়েশন সেফটি অফিসার পদে নিয়োগ হবেন ৩১ জন। মাঝেমাঝেই অভিযোগ শোনা যায়, সরকারি হাসপাতালে রোগ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও তা চালানোর জন্য যত সংখ্যক কর্মী আছেন তাঁদের সংখ্যাটা যথেষ্ট নয়। আগামী ৮ আগস্ট রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরে নিয়োগ সংক্রান্ত যে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হবে সেই বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা থাকবে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (গ্রেড ৩) বিভাগে ৫৮০ জনের নিয়োগের বিষয়টিও। সেইসঙ্গে ফার্মাসিস্ট (গ্রেড ৩) বিভাগে নিয়োগ করা হবে ৩৫০ জনকে।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকার বেশ কয়েকটি হাসপাতালকে সুপার স্পেশালিটি হিসেবে উন্নীত করেছে। সাধারণ ও প্রান্তিক মানুষের চিকিৎসার সুবিধার জন্য চালু করা হয়েছে 'স্বাস্থ্যসাথী কার্ড'। যার মাধ্যমে বেসরকারি হাসপাতালেও বিনা পয়সায় চিকিৎসা পান সাধারণ মানুষ। অভিযোগ ওঠে অনেকসময় বেসরকারি হাসপাতালগুলি এই কার্ড নিয়ে আসা রোগীদের ফিরিয়ে দেয় জায়গা নেই বলে। কিন্তু রাজ্য সরকারের স্পষ্ট নির্দেশ, এক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে নির্দিষ্ট জায়গায় অভিযোগ জানানো যাবে এবং সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত ওই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। এর পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রগুলির উন্নতিসাধন করতেও রাজ্যের তরফে নেওয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপ। সেখানে ব্যবস্থা করা হয়েছে রোগ পরীক্ষার জন্য নানারকম যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য আধুনিক জিনিসের।
