আজকাল ওয়েবডেস্ক: বীরভূম জেলায় খনন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম লিমিটেড (WBPDCL)।ডেউচা–পাঁচামি–দেওয়ানগঞ্জ–হরিণসিঙা (DPDH) কয়লা ব্লকের অন্তর্গত পাইলট ব্যাসল্ট খনির মাইন ডেভেলপার অ্যান্ড অপারেটর হিসেবে নিযুক্ত পাচামি ব্যাসল্ট মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেডের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। নিগমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চুক্তি ও রাজস্ব সংক্রান্ত একাধিক শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে গত ১০ নভেম্বর থেকে ওই সংস্থার কাজ বন্ধ করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ একর জায়গা জুড়ে পরিচালিত পাইলট ব্যাসল্ট খনিতে কাজ করা সংস্থাটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, চুক্তি বাতিলের তারিখ পর্যন্ত উত্তোলিত বা মজুত থাকা সমস্ত ব্যাসল্ট-সহ খনি এলাকা আগামী পনেরো দিনের মধ্যে নিগমের হাতে তুলে দিতে হবে।
এদিকে, ব্যাসল্ট খননের দ্বিতীয় ধাপের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। নিগমের তরফে জানানো হয়েছে, ৩১৪ একর বিস্তৃত বৃহত্তর ব্যাসল্ট খনির জন্য চলতি বছরের ১ অক্টোবর নতুন করে টেন্ডার ডাকা হয়েছে এবং চলতি মাসের মধ্যেই তা চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় কর্মসংস্থানের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখছে নিগম। বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম জানিয়েছে, নতুন মাইন ডেভেলপার নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত প্রয়োজনে পূর্বতন সংস্থার অধীনে কর্মরত স্থানীয় শ্রমিকদের মজুরি ও বেতন দেওয়ার দায়িত্ব তারা নেবে।
এই পরিস্থিতিতে খনি হস্তান্তর প্রক্রিয়া যাতে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়, সে জন্য বীরভূমের জেলাশাসকের কাছে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক সহযোগিতা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। গোটা বিষয়টি ঘিরে বীরভূমে খনন প্রকল্প ও ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বিষয়টি জানাজানি হতেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে ওই এলাকায়। এই ঘটনার সমালোচনা করেছেন বিজেপির রাজ্য সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সিউড়ির বিজেপি জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তাঁর অভিযোগ, এটি একটি সম্পূর্ণ অবাস্তব প্রকল্প, যেখানে কোনওদিনই কয়লা তোলা সম্ভব নয়। জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের আরও দাবি, যেখানে মাত্র বারো একর জমিতেই পাথর তোলার কাজ শেষ করা যায়নি, সেখানে তিন হাজার একর জমিতে কবে এবং কীভাবে কয়লা তোলা হবে, তা নিয়ে গুরুতর সংশয় রয়েছে।
জগন্নাথের এই প্রতিক্রিয়াকে পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং তৃণমূল নেতা কাজল শেখ। তিনি বলেন, "দেউচা পাঁচামিতে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খনি রয়েছে এটা আমাদের দলগত কথা নয়। প্রশাসনিক স্তরে অনুসন্ধান করার পর সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় নিজের টিআরপি বাড়ানোর জন্য এসব ভুলভাল কথাটা বলছেন। তিনি এ কথা কী করে বলতে পারেন যে মাটির নিচে কয়লা নেই? উনি কি নিজে পর্যবেক্ষণ করেছেন বা কোন উচ্চতর ইঞ্জিনিয়ার কে দিয়ে তদন্ত করিয়েছেন? নাকি বিজেপি সরকারের কথা বলছেন, যারা, বাংলাকে ভাতে মারার চেষ্টা করছে। এসব কথা বলে বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন কিন্তু লাভ হবে না।"
