চন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
তাঁর বিরুদ্ধে যতই অভিযোগ উঠুক, যতই কুৎসা রটানো হোক না কেন তিনি চলেন স্বমহিমাতেই। ২১ জুলাইয়ের আগে নিজের সাবলীল ভঙ্গিতে রাজনৈতিক বক্তব্যে ফের একবার চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। তবে এবার তাঁর মুখে শোনা গেল এক নতুন রূপক, ‘সমুদ্রের জলে যতই চিনি মেশাও, তা মিষ্টি হবে না। কারণ, সমুদ্রের ধর্ম বদলাবে না’। বৃহস্পতিবার বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের উদ্যোগে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় এই মন্তব্য করেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘বিরোধীরা মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে যতই কুৎসা ও অভিযোগ তুলুক না কেন, কোনও দিনও তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। বীরভূমে কেউ কেউ নানা রকম অভিযোগ করছেন। আমার কাছে এসে একরকম বলছে, আবার অন্যের কাছে গিয়ে আরেকরকম। এতে কোনও লাভ হবে না। মমতা ব্যানার্জির তৈরি করা তৃণমূল সমুদ্রের মতো, এটা ঠুনকো কিছু নয়। চিনি মিশিয়ে কোনও কাজ হবে না’।
এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী এবং জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। একই দিনে বোলপুরে তৃণমূলের পক্ষ থেকে একুশে জুলাই উপলক্ষে একটি প্রস্তুতি মিছিলও অনুষ্ঠিত হয়। রেল ময়দান থেকে শুরু হওয়া এই মিছিলে অনুব্রত মণ্ডল নিজে অংশগ্রহণ করেন। তবে এদিন তিনি কিছুটা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন এবং পাশাপাশি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বৃষ্টিও। তবুও দলের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা ছিল স্পষ্ট। মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন সুদীপ্ত ঘোষ, বোলপুর পুরসভার পুরপ্রধান পর্না ঘোষ সহ অন্যান্য তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।
আরও পড়ুন: নর্দমায় ভাসছে মানুষের খুলি-হাড়গোড়! সাফাই করতে গিয়ে যা দেখে ফেললেন কর্মীরা
অনুব্রত মণ্ডল এদিন বলেন, ‘জেলা থেকে দুই থেকে আড়াই লক্ষ মানুষ আগামী ২১ জুলাই কলকাতায় তৃণমূলের শহীদ দিবসে অংশগ্রহণ করবেন। প্রতিবছরের মতো এবারও আমাদের জেলা প্রথম স্থান দখল করবে। ২১ জুলাই শুধুই একটি রাজনৈতিক সভা নয়, এটা একটা আবেগ, এক আত্মিক সংযোগ’। উল্লেখ্য, ২১ জুলাইয়ের আগে জেলায় জেলায় প্রস্তুতি সভা চলছে। কয়েকদিন আগেই হুগলি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ডাকে ২১ জুলাইয়ের সমর্থনে মহা মিছিল এবং জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা সদর চুঁচুড়ায় আয়োজিত কর্মসূচির প্রধান আকর্ষণ ছিলেন যুব তৃণমূল সভানেত্রী সংসদ সায়নী ঘোষ।
শুক্রবার চুঁচুড়া খাদিনা মোড় থেকে মিছিল শুরু হয়ে শেষ হয় ঘড়ির মোড়ে। মিছিলে পা মেলান রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভানেত্রীও। ছিলেন বিধায়ক অরিন্দম গুইন, অসিত মজুমদার, তপন দাশগুপ্ত, অসীমা পাত্র, হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধারা, হুগলি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী প্রিয়াঙ্কা অধিকারী। মিছিল শেষে ঘড়ির মোড়ে অনুষ্ঠিত হয় জনসভা। সভায় সায়নী ঘোষ বলেন, ‘মানুষের জন্য সর্বদা কাজ করে চলেছেন রাজ্যের মুখ্য মন্ত্রীর মমতা ব্যানার্জি। লক্ষীর ভাণ্ডার, রূপশ্রী, কন্যাশ্রীর মত জনদরদী প্রকল্প বাংলায় চালু করেছেন তিনিই। তাই আগামী দিনে মানুষ মমতাদির পাশেই থাকবে’। সম্প্রতি, তৃণমূল কংগ্রেসের ঐতিহাসিক সমাবেশকে সফল করতে হুগলি জেলার কোন্নগরেও অনুষ্ঠিত হয় বিশাল মিছিল ও জনসমাবেশ। হুগলি জেলা আইএনটিটিইউসি-র উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক।
