অতীশ সেন, ডুয়ার্স: তরাই-ডুয়ার্সের চা বাগান গুলির পূজা বোনাস নির্ধারিত হয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় সরকার অধিগৃহীত চা বাগান গুলির বোনাস এখনও বিশবাঁও জলে। উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিকদের বোনাস নির্ধারণের জন্য পাঁচ দফা বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতার বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স ভবনের আয়োজিত বৈঠকে ১৬ শতাংশ বোনাস নির্ধারিত হয়। এই বৈঠকে সচল ও ভাল চা বাগান গুলির বোনাস গতবারের চেয়ে এবার ৩ শতাংশ কম নির্ধারিত হওয়ায় চা শ্রমিকদের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষোভ রয়েছে। তবে এই বৈঠকে অ্যান্ড্রু ইউল গোষ্ঠীর কোনও প্রতিনিধি অংশ না নেওয়ায়, কেন্দ্রীয় সরকার অধিগৃহীত পশ্চিমবঙ্গে চা বাগান গুলির বোনাস এখনো নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। এই চা বাগান গুলির শ্রমিকদের হাজিরা বর্তমানে ৬ সপ্তাহ করে এখন বকেয়া রয়েছে। তাই পূজার আগে আদেও তারা বোনাস এর টাকা হাতে পাবেন কি না, তাই নিয়েই এখন শঙ্কায় রয়েছেন শ্রমিকেরা।
কেন্দ্রীয় ভারি শিল্প ও সরকারি শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রকের অধীনস্থ অ্যান্ড্রু ইউল সংস্থার অধীন পশ্চিমবঙ্গে ৫ টি এবং অসমে ৭টি চা বাগান ও চা উৎপাদনের ফ্যাক্টারি রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ৫ টি চা বাগানের একটি দার্জিলিং জেলার সুখিয়াপোখরিতে অবস্থিত মিম চা বাগান। বাকি চারটি চা বাগানই জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকে অবস্থিত। এগুলি হল- বানারহাট, কারবালা, চুনাভাটি, নিউডুয়ার্স। চা শ্রমিকেরা জানালেন বিগত ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে চুনাভাটি ও নিউডুয়ার্স চা বাগানে চায়ের উৎপাদন যথেষ্ট ভাল। তবুও বাগানগুলির শ্রমিকদের হাজিরা বকেয়া থাকছে। বোনাস নিয়েও কেউ কোনও উচ্চবাচ্য করছেন না।
সোমবার এই চারটি চা বাগানের শ্রমিকেরাই বোনাসের দাবীতে শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে গেট মিটিং করেন। বিজেপি প্রভাবিত চা শ্রমিক সংগঠন বি.টি.ডব্লু.ইউ-এর কোষাধ্যক্ষ সন্তোষ প্রসাদ বলেন অ্যান্ড্রু ইউল গোষ্ঠী কোনও প্রতিনিধি বৈঠক উপস্থিত না হওয়াতেই এই বাগান গুলির বোনাস চুক্তি সম্ভব হয়নি। শ্রমিকদের বকেয়া মেটানো-সহ দ্রুত বোনাস সমস্যা মেটাতে তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন। এরই সঙ্গে তিনি বলেন কিছু শ্রমিক নেতার বিশ্বাসঘাতকতার জন্যই এবার ৩ শতাংশ কম বোনাস নির্ধারিত হয়েছে। পাশাপাশি ১৬ শতাংশ বোনাসে খুশি নয় বানারহাটের গেন্দ্রাপাড়া চা বাগানের শ্রমিকেরা। সোমবার সকালে এক বেলা কাজের পর ২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে ফ্যাক্টরি গেটের সামনে জমায়েত হয়ে তারা দীর্ঘ সময় বিক্ষোভ দেখান। ২০ শতাংশ বোনাস না পেলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করার হুমকিও তাঁরা দেন।
