আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঘটনাক্রম, এক, দুই, তিন। রাজ্যের শাসকদল সুর চড়াচ্ছে, বিদ্বজনেরা পরিস্থিতির ভয়াবহতা ভেবে আতঙ্কিত হচ্ছেন। কিন্তু সুরাহা? কোনও প্রশ্নই নেই। অত্যাচার থামছে না। নিত্যদিন সামনে আসছে অত্যাচারের ভয়াবহ কাহিনি। এবার বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রবল হেনস্থা মোদির রাজ্যে, গুজরাটে।

বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক, অপরাধ মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলা। মাতৃভাষায় কথা বলার অপরাধে ভিন রাজ্যে জুটল হেনস্থা, মারধর, আতঙ্কবাদী তকমা। ঘরে ফিরে সেই ভয়াবহতার কথা সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন তাঁরা। চোখে মুখে আতঙ্ক, গায়ে অত্যাচারের চিহ্ন। ভিডিও প্রকাশ করে সরব অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। 

আরও পড়ুন: ‘বুকে ব্যথা নিয়ে ২০২৫-এই মারা যাবেন সোনালি চুলের প্রেসিডেন্ট’! ১৫ বছর আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল ‘দ্য সিম্পসন্স’? আচমকা ভিডিও ভাইরাল হতেই শোরগোল...

গুজরাট থেকে ভয়াবহ দিন কাটিয়ে পিংলায় ফিরেছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। ঘরে ফিরেই সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। কী জানিয়েছেন তাঁরা? জানান, বাংলায় কথা বলার জন্য, মধ্যরাতে ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে, বাংলাদেশি তকমা দিয়ে, চুলের মুঠি ধরে মারধোর করে, থানায় নিয়ে যাওয়া হয় পরিযায়ী শ্রমিকদের। লক-আপে রাখা হয়। সেখানে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার চালানো হয়। সঠিক আধার কার্ড দেখানোর পরেও, সেগুলিকে ভুয়ো আধার কার্ড বলে গণ্য করে, তারপরেও চলে অত্যাচার। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, পরিবারের তরফ থেকে অন্যান্য পরিচয়পত্র-সহ নথি পাঠানো হলে, তারপর ছাড়া পান। ঘরে ফিরে আপাতত স্বস্তিতে। ঘরে ফেরায়, স্বস্তি পেয়েছেন পরিবারের সদস্যরাও।

ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের বক্তব্য তুলে ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছে রাজ্যের শাসক দল। একেবারে পয়েন্ট করে তুলে ধরেছেন, গুজরাট পুলিশ কীভাবে অত্যাচার করেছেন বাংলার বাসিন্দাদের। পোস্টে লেখা হয়েছে-

.গুজরাট পুলিশ মধ্যরাতে তাঁদের ঘরে ঢুকে পড়ে।
. তাঁদের বুকে এবং পেটে লাথি মারে।
. তাঁদের চুল ধরে টেনে নিয়ে যায়।
. "বাংলাদেশি" এবং "সন্ত্রাসী" তকমা দেওয়া হয়।
. তাঁদের অপরাধীদের মতো লক-আপে রাখা হয়।
. ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
.নির্মমভাবে মারধোর করা হয় ওঁদের। 

সঙ্গেই লেখা হয়েছে, মোদি-শাহের রাজ্যেই বাঙালিদের সঙ্গে ঘটছে নির্মম ঘটনা। ২০২৬ সালে বাংলা প্রতিটি ক্ষতের প্রতিশোধ রাজনৈতিকভাবে নেবে বলেও লেখা হয়েছে ওই পোস্টে। লেখা হয়েছে, ‘আমরা ভুলি না, ক্ষমাও করি না।‘ 

বাংলাভাষীদের উপর আক্রমণে সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। গত কয়েকমাসে দেশের একাধিক রাজ্যে স্রেফ বাংলায় কথা বলে বাংলাদেশি তকমা পেয়েছেন, অকারণ নানা হেনস্থার মুখোমুখি হয়েছেন। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচিও ঠিক করে দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ২৮ জুলাই ভিন রাজ্যে একের পর এক বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বন্ধ করতে তাঁদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনার নির্দেশও দেন।


বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে এক প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি বলেন, আমাদের ২২ লক্ষ শ্রমিক যাঁরা বাইরে কাজ করেন তাঁদের সবাইকে ফিরিয়ে আনুন এবার। ২১ হোক বা ২৮ জুলাই, মমতা কিন্তু একই সঙ্গে বারে বারে স্পষ্ট করেছেন, তাঁর উদ্বেগ বাঙালিদের উপর অত্যাচার নিয়ে। তাঁর কিন্তু কোনওভাবেই অন্য ভাষাভাষীদের উপর আক্রোশ নেই।