আজকাল ওয়েবডেস্ক:  ব্রিটেনের ওল্ডবারি শহরে এক শিখ মহিলাকে দুই ব্যক্তি ধর্ষণ করেছে এবং তাকে বর্ণবাদী মন্তব্যের শিকার হতে হয়েছে। হামলাকারীরা তাকে বলেছে, “তুমি তোমার নিজের দেশে ফিরে যাও” যা ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রবাসীদের উপর অতীতে হওয়া অনুরূপ বর্ণবাদী আক্রমণের প্রতিফলন।


ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে, ওল্ডবারির টেম রোড সংলগ্ন এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঘটনাটিকে ‘জাতিগতভাবে প্ররোচিত আক্রমণ’ হিসেবে দেখছে এবং হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে জনসাধারণের সহযোগিতা চাইছে। ওই মহিলা তাদের জানিয়েছেন যে, অভিযুক্তরা তাকে উদ্দেশ্য করে বর্ণবাদী মন্তব্য করেছে। পুলিশ আরও জানায়, ইতোমধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ এবং ফরেনসিক তদন্ত শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন: শক্তিশালী নৌবাহিনীতেই জব্দ প্রতিপক্ষ, বিশ্বে ভারতের স্থান কোথায়


স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সন্দেহভাজনরা শ্বেতাঙ্গ পুরুষ। এদের মধ্যে একজন টাক মাথার, গায়ে গাঢ় রঙের সোয়েটশার্ট ছিল। অপর সন্দেহভাজন পরেছিল ধূসর রঙের পোশাক। এই ভয়াবহ ঘটনাটি স্থানীয় শিখ সম্প্রদায়কে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে এবং অনেকে এটিকে সরাসরি ‘টার্গেটেড হামলা’ হিসেবে দেখছেন। এই প্রসঙ্গে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, জনরোষ এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এলাকায় টহল বৃদ্ধি করা হবে।


ব্রিটিশ এমপি প্রীত কৌর গিল ঘটনাটির নিন্দা জানিয়ে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশ্য বর্ণবাদের উত্থান অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তিনি বলেন, “এটি এক ভয়ঙ্কর সহিংসতা, তবে একই সঙ্গে এটিকে জাতিগতভাবে প্ররোচিত হামলা হিসেবেও দেখা হচ্ছে। হামলাকারীরা তাকে নাকি বলেছে যে, ‘তার এখানে কোনও অধিকার নেই।’ আমাদের শিখ সম্প্রদায়সহ প্রতিটি সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপদ, সম্মানিত এবং তাদের সমস্ত অধিকার আছে। বর্ণবাদ ও নারীবিদ্বেষের কোনও স্থান নেই না ওল্ডবারিতে, না ব্রিটেনের অন্য কোথাও।”


আরেক ব্রিটিশ এমপি, জাস আথওয়াল  একে “নৃশংস, বর্ণবাদী, নারী বিদ্বেষমূলক আক্রমণ” বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, এটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। তিনি আরও যোগ করেন, “এটা স্পষ্ট হওয়া দরকার, এই আক্রমণ আমাদের দেশে ক্রমবর্ধমান জাতিগত উত্তেজনার ফল। আর এখন, এক তরুণী আজীবনের মতো মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলেন।”


এই ধরণের ঘৃণাজনিত অপরাধের ঘটনার মাত্র এক মাস আগে উলভারহ্যাম্পটন রেলস্টেশনের বাইরে দুই প্রবীণ শিখ ব্যক্তির উপর হামলার ঘটনা হয়। সেখানে তিনজন কিশোর তাদের উপর চড়াও হয়। ভিডিওতে দেখা গেছে, তারা মাটিতে পড়ে আছেন এবং এক হামলাকারী বারবার লাথি মারছে, যতক্ষণ না অন্য একজন এসে তাকে সরিয়ে নেয়। এই ঘটনার পর স্থানীয় শিখরা যথেষ্ট আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তারা বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেছেন। যদি এই ধরণের ঘটনা ফের ঘটে তাহলে তারা পথে নেমে প্রতিবাদের পথে যাবেন বলেও আগাম জানিয়ে দিয়েছেন।