আজকাল ওয়েবডেস্ক: দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুই স্বীকার করেছিলেন যে পাকিস্তানের সঙ্গে করা ওই জলচুক্তি ভারতের কোনও উপকারে আসেনি। বললেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি। মোদীর অভিযোগ, নেহরু দু'বার দেশকে ভাগ করেছিলেন। প্রথমবার র্যাডক্লিফ লাইনে, আর পরেটা সিন্ধু জলচুক্তির মাধ্যমে।
প্রদানমন্ত্রীর কথায়, "সিন্ধু চুক্তিতে ৮০ শতাংশ জল পাকিস্তানকে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এটা ছিল কৃষকবিরোধী সিদ্ধান্ত। পরে নিজের সচিবের মাধ্যমে নেহরু স্বীকারও করেছিলেন যে চুক্তির থেকে ভারতের কোনও লাভ হয়নি।"
বৈঠকে উপস্থিত বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকা পাল সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য জওহরলাল নেহেরু দেশের কৃষকদের সঙ্গে 'বিশ্বাসঘাতকতা' করেছিলেন বলেন অভিহিত করেন। বলেন, "দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছিল। নেহরু যদি নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হতেন, তবে সংসদের অনুমোদন নেওয়া উচিত ছিল। তিনি কোনও মন্ত্রিসভা বা সংসদের আস্থা ছাড়াই পাকিস্তানে গিয়ে একা গোপনে চুক্তি সেরে এসেছিলেন। এটা আমাদের কৃষকদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া কিছু নয়।"
মোদির বক্তব্যকে সমর্থন করেন বিজেপি সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ। তিনি অভিযোগ করেন, নেহরু শুধু চুক্তিই করেননি, পাকিস্তানকে ৮০ কোটি টাকা পর্যন্ত দিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, "আমরা গর্বিত যে প্রধানমন্ত্রী তথ্যটি জানিয়েছেন। সংসদে আলোচনা ছাড়া কোনও আন্তর্জাতিক চুক্তি হয় না। নেহেরুজি তা না করেই চুক্তি সেরেছিলেন।"
আরও পড়ুন- উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন: শাসকের কৌশলই হাতিয়ার, 'খেলা' ঘোরাল 'ইন্ডিয়া' জোট, এবার ফাঁপড়ে এনডিএ শরিক!
১৯৬০ সালে নয় বছরের আলোচনার পর ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সিন্ধু জলচুক্তি হয়, যেখানে বিশ্বব্যাঙ্কও স্বাক্ষরকারী ছিল। ওই চুক্তি অনুযায়ী, পশ্চিমের তিন নদী— সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগা পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ হয়, আর ভারতের জন্য আসে ইরাবতী, বিপাশা ও শতদ্রু।
সম্প্রতি হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের এক রায় ভারত সরাসরি খারিজ করেছে। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ওই আদালতের 'কোনও এক্তিয়ার, বৈধতাও নেই। তাই এই রায় ভারতের জল ব্যবহারের অধিকারে কোনও প্রভাব ফেলবে না।'
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পাহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। তার পরই ভারত আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে সিন্ধু চুক্তিকে আপাতত বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। সরকার জানায়, পাকিস্তান যখন পর্যন্ত বিশ্বাসযোগ্যভাবে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করা ছাড়বে না, তত দিন পর্যন্ত ওই চুক্তি কার্যকর থাকবে না।
মঙ্গলবারের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এনডিএ-র উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী সিপি রাধাকৃষ্ণণকে সাংসদদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। মোদির কথায়, "তিনি ওবিসি সম্প্রদায় থেকে উঠে আসা এক ঘরোয়া নেতা। রাজনীতিতে কোনও খেলা খেলেন না, সাদাসিধে স্বভাবের মানুষ।"
