আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বামী, লিভ ইন সঙ্গী ছাড়াও একাধিক পুরুষের সঙ্গে মেলামেশা যুবতীর। লুকিয়ে লুকিয়ে আরও কেচ্ছায় জড়িত তিনি। এমনই সন্দেহ হয়েছিল তাঁর লিভ ইন সঙ্গীর। হাতেনাতে ধরতেই চরম পদক্ষেপ করলেন তিনি। যুবতী ও তাঁর খুদে সন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুন করে, চরম প্রতিশোধ নিল সে।
জানা গেছে, যুবতী ও তাঁর খুদে সন্তানকে খুন করে পালিয়ে যায়নি যুবক। সারারাত দেহের পাশেই বসেছিল সে। এরপরই মৃতদেহের পাশের দেওয়ালে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারণ লিপস্টিক দিয়ে লিখে রাখে সে। লিখে দেয়, যুবতীর সব কেচ্ছা সে জেনে গেছে। এত বড় বিশ্বাসঘাতকতা, মিথ্যে কথা সহ্য করতে না পেরেই খুন করেছে সে।
হাড়হিম এই ঘটনার তদন্তে নেমে ঘাতক যুবককে ধরতে বিশেষ পরিশ্রম করতে হয়নি পুলিশকে। ঘরে ঢুকেই যুবককে হাতেনাতে ধরতে পারে তারা। খুনের তদন্তে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ জোগাড় করেছে তারা। ঘটনাটি ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
আরও পড়ুন: হাতে নিজেরই নিখোঁজ পোস্টার, থানায় হাজির যুবক, কাঁদতে কাঁদতে যা বললেন, শুনেই তাজ্জব পুলিশ
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের বিদিশা জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবতীর নাম রামসাখি কুশওয়া। ৩৬ বছরের যুবতীর সঙ্গে তাঁর স্বামীর বিচ্ছেদ হয়নি। দীর্ঘদিন স্বামীর থেকে আলাদা থাকতেন তিনি। সঙ্গে থাকত তাঁর তিন বছরের কন্যাসন্তান। গত কয়েক মাস ধরে অনুজ বিশ্বকর্মা তথা রাজার সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে ছিলেন তিনি।
বুধবার পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল রাতেই একে একে রামসাখি ও তাঁর সন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুন করে রাজা। গলা টিপে শ্বাসরোধ করেছিল সে। নিথর দেহ দু'টি একটি ঘরে রেখে, সেই ঘরেই সারারাত কাটায় সে। দেহের পাশেই বসেছিল। বুধবার ভোরবেলায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিথর দেহের পাশেই রাজাকে বসে থাকতে দেখে পুলিশ।এরপরই নজরে পড়ে, মৃতদেহের পাশের দেওয়ালে লিপস্টিক দিয়ে খুনের কারণ লিখেছে রাজা।
দেওয়ালে লেখা ছিল, 'আমিই খুন করেছি ওকে। আর মিথ্যে সহ্য করতে পারছিলাম না। ওর অন্য কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।' দেহ দুটি উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে খুনের ধরণ আরও স্পষ্টভাবে জানা যাবে। এই ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক দল পৌঁছয়। ঘরটি পরীক্ষার পর তারা জানিয়েছে, খুনের পর দেওয়ালে দলিপস্টিক দিয়ে কারণ লিখেছিল যুবক।
প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রায় নিত্যদিন রামসাখি ও রাজার মধ্য বচসা হত। বিশেষত বিবাহবিচ্ছেদের জন্য জোরাজুরি করত রাজা। রামসাখির উপর সন্দেহ হত তার। যা ঘিরেই মূলত অশান্তি চরমে পৌঁছত। কিন্তু কয়েক মাসের সম্পর্কের মধ্যে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে, তা জেনেই হতবাক সকলে।
পুলিশ জানিয়েছে, রাজার মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করা হবে। সে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে। খুনের পর মৃতদেহের পাশে কেন সারারাত বসেছিল, তা নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। ঘটনার মামলা রুজু করে তদন্ত জারি রয়েছে। ঘাতক যুবকের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
