আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ এক বছরে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের আয় জানলে চোখ কপালে উঠবে। জানা গেছে, ২০২৩–২৪ আর্থিক বছরে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড অর্থাৎ বিসিসিআইয়ের আয় হয়েছে ৯,৭৪১.‌৭ কোটি টাকা। তার মধ্যে আইপিএল থেকেই আয় হয়েছে ৫৭৬১ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট আয়ের ৫৯ শতাংশই এসেছে আইপিএল থেকে। 


২০২৩–২৪ অর্থবর্ষেও বিসিসিআইয়ের আয়ের অর্ধেকের বেশি এসেছে ২০ ওভারের আইপিএল প্রতিযোগিতা থেকে। আইপিএল শুরু হওয়ার পর থেকেই বিসিসিআইয়ের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস এই আইপিএল টুর্নামেন্ট। ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষের হিসাবেও সেটাই উঠে এসেছে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বোর্ডের আয়ের ৫৯.১০ শতাংশই এসেছে আইপিএল থেকে। ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষে বিসিসিআইয়ের আয় হয়েছে প্রায় ৯৭৪২ কোটি টাকা। তার মধ্যে টি২০ আইপিএল টুর্নামেন্ট থেকে আয় প্রায় ৫৭৬১ কোটি টাকা। আইপিএল ছাড়া ডব্লিউপিএল (মহিলাদের আইপিএল), আন্তর্জাতিক ম্যাচের সম্প্রচার স্বত্ব এবং বিভিন্ন স্পনসরের থেকে বিসিসিআই আয় করে। ভারতের ম্যাচগুলি থেকে ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষে বিসিসিআইয়ের আয় ৩৬১ কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) কাছ থেকে এই অর্থবর্ষে ভারতীয় বোর্ড পেয়েছে ১০৪২ কোটি টাকা। যা বোর্ডের মোট আয়ের ১০.৭০ শতাংশ। বিসিসিআইয়ের স্থায়ী আমানতের পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। তার সুদ বাবদ বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা আয় হয়।


এটা ঘটনা, আইপিএল থেকে বিসিসিআইয়ের আয় প্রতি বছর ১০ থেকে ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এই প্রতিযোগিতার উপর ক্রিকেট অর্থনীতির নির্ভরশীলতা বাড়ছে। ফলে ভারতীয় বোর্ডের উপর অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা বাড়ছে আইসিসিরও।

 

আরও পড়ুন:‌ সিরাজের ওয়ার্কলোড নিয়েও এবার চিন্তা শুরু করল টিম ম্যানেজমেন্ট ...


প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে শুরু হয়েছিল আইপিএল। শুরুতে আট দল নিয়ে হত প্রতিযোগিতা। এখন দলের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দশ। চলতি বছর আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আরসিবি। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘরোয়া স্তরে ক্রিকেটারদের আয়ের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আইপিএল একটি নিখুঁত পরিকল্পনা। প্রতিযোগিতার সম্প্রচার স্বত্ব থেকে আয় ক্রমশ বাড়ছে। এই প্রতিযোগিতা রঞ্জি ট্রফি স্তরের খেলোয়াড়দের আয় নিশ্চিত করে। প্রতিযোগিতার ব্যাপ্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিসিসিআইয়ের আয়। 

এদিকে, আইপিএলের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়তে থাকায় অনেক ক্রিকেটারই দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দিচ্ছেন। বদলে আইপিএলে ঝুঁকছেন। টাটকা উদাহরণ আন্দ্রে রাসেল ও নিকোলাস পুরান। 


দেশের হয়ে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবেন না ৩৭ বছরের আন্দ্রে রাসেল। জানিয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টি২০ সিরিজের প্রথম দুটি খেলেই তিনি অবসর থেকেন। অর্থাৎ রাসেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেলবেন ২৩ জুলাই। 


এদিকে, নিকোলাস পুরানও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। মাত্র ২৯ বছর বয়সে। কিছুদিন আগেই অবসরের কথা ঘোষণা করেন। এখন শুধু নানা দেশ ঘুরে ঘুরে ফ্রাঞ্চাইজি লিগ খেলে বেড়াবেন পুরান। এই ঘটনার নেপথ্যেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের ব্যর্থতাকেই দুষছেন ব্রায়ান লারা। তাঁর মতে, দেশের হয়ে ক্রিকেটাররা যাতে খেলেন তার জন্য কোনও উদ্যোগই নেয় না ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট বোর্ড। এছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকার হেনরিখ ক্লাসেনও সদ্য অবসর নিয়ে ফেলেছেন ফ্রাঞ্চাইজি লিগ খেলবেন বলে। নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসনও বোর্ডের চুক্তিতে থাকতে চাননি আইপিএল খেলবেন বলে।