Sampurna Chakraborty | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২ : ০৭Sampurna Chakraborty

আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফুটবল এবং কলকাতা সমার্থক শব্দ। এবার সেই শহরেই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন ম্যাঞ্চেস্টার সিটির ট্রফি ট্যুরের সাক্ষী থাকা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো। সেই সুযোগ হাতছাড়া করেনি তরুণ প্রজন্ম। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী এবং ফুটবল ভক্তরা হাজির ছিল সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে। ম্যাঞ্চেস্টার সিটির প্রিমিয়ার লিগ ট্রফি ট্যুরের সাক্ষী থাকতে সকাল থেকেই ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণ জমজমাট।

অপেক্ষা ছিল ম্যাঞ্চেস্টার সিটির প্রাক্তন তারকা শন রাইট ফিলিপসের। বুধ দুপুরে বৃষ্টির মধ্যেই এসএনইউতে প্রবেশ করেন প্রাক্তন তারকা। ব্রিটিশ উইঙ্গারের এক ঝলক পেতে ভিড় উপচে পড়ে। নিরাশ করেননি রাইট। বল পায়ে দেখা যায় ম্যান সিটির প্রাক্তন তারকাকে। বেশ কয়েকটা শট গোলে মারেন। শন রাইট ফিলিপসকে নিয়ে উন্মাদনা ছিল দেখার মতো। খুদেদের সঙ্গে ফটোসেশনে মাতেন তারকা ফুটবলার। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে হাসিমুখে সেলফিও তোলেন। দিনব্যাপী চলে ফুটবল কার্নিভাল। ফুটবল কুইজ থেকে শুরু করে নানান কার্যকলাপ চলে। 

টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের ডিরেক্টর দেবদূত রায়চৌধুরী বলেন, 'বৃষ্টির মধ্যে এত মানুষের আগ্রহ দেখে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির আধিকারিকরা অবাক হয়ে গিয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম ৮০০ থেকে ১০০০ রেজিস্ট্রেশন হবে। সেখানে ৫০০০ হয়েছে। এই সংখ্যাই সবকিছু বলে দিচ্ছে। আমরা ভাবি বাবা-মায়েদের খেলায় আগ্রহ বা উৎসাহ নেই। কিন্তু এই ভুল ভেঙে গিয়েছে। তাঁরাই বেশি উৎসাহী।'

মুম্বই, দিল্লি হয়ে প্রিমিয়ার লিগের ট্রফি এবং এফএ কমিউনিটি শিল্ড এল কলকাতায়। টানা চারবার প্রিমিয়ার লিগ জেতার নজির গড়েছে ম্যান সিটি। সেই ট্রফি চাক্ষুষ করতে পেরে অভিভূত টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের ডিরেক্টর দেবদূত রায়চৌধুরী। তিনি বলেন, 'চোখের সামনে ইপিএলের ট্রফি, পুরো স্বপ্নের মতো। আমরা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ দেখে বড় হয়েছি। তাই এই ট্রফি চাক্ষুষ করার একটা আলাদা আবেগ রয়েছে। দিল্লির পর এই ট্রফি ট্যুর আবু ধাবিতে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কলকাতা ফুটবলের শহর। আমরা ভাবলাম কেন এখানকার ভক্তরা এই অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে পারবে না! এখানে এসে ম্যান সিটির লোকজন অভিভূত।' বুধবার বিকেলে ট্রফি ট্যুরের অনুষ্ঠানে টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের ডিরেক্টর দেবদূত রায়চৌধুরী ছাড়াও ছিলেন ম্যান সিটির দুই আধিকারিক। 

 

 

 

 

 

View this post on Instagram

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

A post shared by Hatchlab Innovations (@hatchlabinnovations.official)

টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের সঙ্গে মিলে ভারতে প্রথম ফুটবল স্কুল খুলতে চলেছে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। আবাসিক অ্যাকাডেমি বলা যেতে পারে। গড়িয়ায় হবে এই ফুটবল স্কুল। আগামী ফেব্রুয়ারিতে কচিকাঁচাদের নিয়ে অ্যাকাডেমি শুরু হয়ে যাবে। পুরোদমে চালু হবে নতুন বছরের শিক্ষাবর্ষ থেকে। তবে তার আগে ডিসেম্বর থেকে কোচ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম চালু হয়ে যাবে।

৩ থেকে ১৭ বছরের ছেলে-মেয়েরা প্রশিক্ষণ নিতে পারবে। সরাসরি ম্যাঞ্চেস্টার সিটি থেকে তিনজন কোচ আসবে। তাঁরাই টেনিং দেবে। তাঁদের অধীনে আরও ছ'জন কোচকে তৈরি করা হবে। সেই শর্টলিস্ট এখনও করা হয়নি। বিভিন্ন জেলায় টেকনো গ্রুপের অধীনে মোট ১৫টি স্কুল রয়েছে। সেখান থেকে ফুটবলার স্কাউট করা হবে।

ফুটবলারদের পুল তৈরি করা হবে। প্রতিভাবান ফুটবলারদের ম্যান সিটির পরিকাঠামো দেখতে, ট্রেনিং নিতে পাঠানো হবে। টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমিকে সামনে রেখেই এগোতে চাইছেন তাঁরা। ভবিষ্যতে স্কলারশিপের ব্যবস্থাও রাখা হবে। দেবদূত রায়চৌধুরী বলেন, 'আমাদের প্রধান লক্ষ্য গ্রাসরুট ডেভেলপমেন্ট। আমরা কলকাতায় ম্যাঞ্চেস্টার সিটির মতো পরিকাঠামো দিতে চাই। ট্রেনিং থেকে শুরু করে সরঞ্জাম, সবকিছুই আন্তর্জাতিক মানের হবে। ওখান থেকে অভিজ্ঞ কোচেরা আসবে। ছেলেমেয়েদের ওখানে পাঠানো হবে। সেখান থেকে ঘুরে এসে যেন ওরা বলতে পারে, কলকাতাতেও ওরা একই পরিকাঠামো পায়। এটাই আমাদের লক্ষ্য।'

মোট ১৫০ জনকে নিয়ে শুরু হবে ফুটবল স্কুল। শনিবার এবং রবিবার থাকবে বিশেষ পরিকল্পনা। 'পে অ্যান্ড প্লে'র ব্যবস্থা রাখা হবে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির সঙ্গে কথাবার্তা শুরু হয় টেকনো গ্রুপের। সেটার বাস্তবায়ন হতে লেগে যায় প্রায় দেড় বছর।

ইপিএলের ক্লাবের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তি তিন বছরের হলেও, সেটা বেড়ে ১০ বছর করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কলকাতার পাশাপাশি আরও পাঁচটি শহরে ফুটবল স্কুল করার পরিকল্পনা রয়েছে। কলকাতাকে হাব বা কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলে বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়াই এখন পরিকল্পনা।