রবিবার ০৪ মে ২০২৫
সম্পূর্ণ খবর
অলোকপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ০৪ মে ২০২৪ ১৩ : ৫৮
মৃণাল সেনকে নিয়ে তাঁর ছবি ‘চালচিত্র এখন’ মুক্তির আগে অকপট অঞ্জন দত্তের মুখোমুখি অলোকপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
প্রশ্ন: এ বছর ১৪ মে মৃণাল সেনের জন্মশতবর্ষ পূর্ণ হচ্ছে। তার আগেই মুক্তি পাচ্ছে আপনার ছবি ‘চালচিত্র এখন’। এটা কি গুরুদক্ষিণা?
অঞ্জন: ট্রিবিউট বলতে পারেন।
প্রশ্ন: চার দশক আগে মৃণাল সেনের ‘চালচিত্র’ ছবিতে আপনার সিনেমার অভিনয় শুরু। আপনার ছবি ‘চালচিত্র এখন’ কি চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেনকে নিয়ে, না, ব্যক্তি মৃণাল সেনকে নিয়ে?
অঞ্জন: মূলত ব্যক্তি মৃণাল সেনকে নিয়েই এই ছবি।
প্রশ্ন: মৃণাল সেন ও অঞ্জন দত্তের সম্পর্কই এ ছবির কেন্দ্রে?
অঞ্জন: মূলত তা–ই।
প্রশ্ন: আপনি পরিচালক বলেই কি প্রধান চরিত্র তথা মৃণাল সেনের ভূমিকাটা আপনিই করলেন? অন্য কোনও অভিনেতার কথা কি একবারও ভেবেছিলেন এই চরিত্রে নেওয়ার জন্যে? পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা তো বেশ কঠিন ব্যাপার?
অঞ্জন: কঠিন হলেও আমি ঠিকই করেছিলাম মৃণালদার চরিত্রটা আমিই করব। ৪৩ বছর ধরে ওঁর সঙ্গে সঙ্গে থেকে আমি যতটা আত্মস্থ করেছি মৃণাল সেনকে, অন্য একজন অ্যাক্টরকে দিয়ে সেটা করানো মুশকিল। অন্য কেউ অভিনয় করলে আমার চোখে পদে পদে ভুল ধরা পড়বে। কারণ, সে তো মৃণাল সেনকে বাইরে থেকে দেখবে, আর আমি দেখব ভেতর থেকে। আমি দেখলাম মেকআপ–টেকআপ করে আমার বয়সটা আটান্ন–উনষাট হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: মৃণাল সেনকে না হয় নিজের মধ্যে খুঁজে পেলেন। অঞ্জন দত্তকে কীভাবে খুঁজে পেলেন?
অঞ্জন: এটার জন্যে অনেক দিন সময় লেগেছে। কারণ, যে অঞ্জন দত্তের চরিত্র করবে, তাকে ভাল ইংরেজি বলতে হবে, পাকা হতে হবে, সে তার্কিক হবে, সে পড়াশোনা করে, থিয়েটার করে, গিটার বাজায়, অনেক কিছু দরকার। অনেক খুঁজে শাওনকে পেলাম অঞ্জন দত্তের চরিত্রের জন্যে। ‘চালচিত্র’র সময় মৃণালদা আমার চুল কেটে দিয়েছিলেন। (হাসতে হাসতে) আমিও এই ছবির জন্যে শাওনের দাড়ি কেটে দিই।
প্রশ্ন: মৃণাল সেনের সঙ্গে আপনার এতদিনের সম্পর্ক, এত ভাব–ভালবাসা, কিন্তু তর্কও তো করেছেন সমান তালে?
অঞ্জন: এটাই তো সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং দিক মৃণালদার। সারা জীবন তর্ক হয়েছে মৃণালদার সঙ্গে। আমি কোনও দিনই কমিউনিস্ট নই। কিন্তু মৃণালদা বলতেন, আমি প্রাইভেট মার্কসিস্ট। আমি বলতাম, আমি এগজিস্টেনসিয়ালিস্ট।
প্রশ্ন: মৃণাল সেনকে নিয়ে ছবি তৈরির কথা কবে ভাবলেন?
অঞ্জন: বহু বছর আগে আমি মৃণালদাকে বলেছিলাম, আপনাকে নিয়ে আমি ডকুমেন্টারি করব। মৃণালদা বলেছিলেন, আমার ব্যক্তিগত জায়গাটা বের করো। কিন্তু আমি তেমন কোনও গল্প বের করতে পারলাম না। কিন্তু যখনই টাকা পেয়েছি, মৃণালদার কাজ আমি শুট করেছি। মৃণালদা শুটিং করছেন কিংবা এডিট করছেন, কিংবা আপন মনে কাজ করছেন— এই সব। কিন্তু প্রপার কোনও ছবি ভেবে উঠতে পারিনি তখন। গীতাদিকে (মৃণাল সেনের স্ত্রী গীতা সেন) বলেছিলাম, আমি গল্পটা খুঁজে পাচ্ছি না। আমার এই তথ্যচিত্রের কাজটা এগোচ্ছে না দেখে মৃণালদা একবার আমায় বলেছিলেন, তুমি সিরিয়াস নও, তুমি অকৃতজ্ঞ। তুমি তো রঞ্জিত মল্লিক, মিঠুন চক্রবর্তী নও। তুমি একজন পরিচালক। অথচ তুমি সিরিয়াস নও। কী বলি আমি? আমি যে গল্পটাই খঁুজে পাচ্ছিলাম না।
প্রশ্ন: কী করে তাহলে খুঁজে পেলেন ‘চালচিত্র এখন’–এর গল্পটা?
অঞ্জন: সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে যখন ‘অপরাজিত’ ছবিটা হল, তখন আমার মনে হল, মৃণালদার যেটা প্রাপ্য, সেটা তো আমি দিতে পারলাম না। আমার এক বন্ধু বলল, মৃণাল সেনের সঙ্গে তোমার চার দশকের সম্পর্ক, অথচ তোমার কোথাও মৃণাল সেন নেই। আমার খুব খারাপ লেগেছিল। অথচ, মৃণাল সেন আমাকে কলকাতাকে ভালবাসতে শিখিয়েছেন। বহু কিছু শিখিয়েছেন। ওই ছবিটা দেখার পর এবং আমার বন্ধুর অভিযোগ শোনার ৬ দিনের মধ্যে আমি এই ছবির স্ক্রিপ্ট লিখে ফেললাম। চিত্রনাট্য শুনে নীল (অঞ্জন দত্তর ছেলে) বলল, এই ছবিটা আমরা নিজেরা প্রযোজনা করব। তাহলে ছবি তৈরিতে অনেক স্বাধীনতা থাকবে। এভাবেই তৈরি হল ছবিটা।
প্রশ্ন: এই ছবি তো ইতিমধ্যে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে সম্মানিত হয়েছে এবং বাংলাদেশে আপনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কারও পেয়েছেন।
অঞ্জন: এখন আমাদের দর্শকদের মতামতের অপেক্ষায়।
প্রশ্ন: এই ছবি একই দিনে হল–এও রিলিজ করছে এবং হইচই ওটিটিতেও। এই সিদ্ধান্ত কেন?
অঞ্জন: মৃণালদার জন্মতারিখটা তো এসে গেল। তাই এই সময়ে একই সঙ্গে বাংলার দর্শকরা যেমন সিনেমা হলে দেখতে যাবেন, তেমনই দেশ–বিদেশের দর্শকরাও ওটিটিতে দেখে নেবেন।
প্রশ্ন: এই ছবিকে এক অর্থে আপনার পার্সোনাল ছবি বলা যায়?
অঞ্জন: অবশ্যই।
প্রশ্ন: আপনার বেশ কিছু সিনেমা, ‘দত্ত ভার্সেস দত্ত’ তো বটেই, ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’–ও কিন্তু অনেকটা আত্মজৈবনিক। আপনার গানেও আপনার দেখা জগৎই উঠে এসেছে। বাংলা সিনেমায় আত্মজৈবনিক ব্যাপারটা কিন্তু খুব একটা দেখা যায় না।
অঞ্জন: আমি আমার চেনা জগৎকে নিয়েই ছবি করতে চাই। ‘দত্ত ভার্সেস দত্ত’ তো আমার ঠাকুর্দা, বাবা এবং আমার গল্প। মৃণালদার ‘আকালের সন্ধানে’ ছবিতে আকালকে যেভাবে দেখিয়েছিলেন, সেটা অনেকটা আত্মজৈবনিক। তার চেয়ে বড় কথা, তিনি চেনা জগৎটাকে নিয়েই ছবি করতে চেয়েছেন। আমাদের এখানে তেমন করে ছবি করার দৃষ্টান্ত কম। অন্তত আমাদের সময়ে। আমাদের সময়ে অপর্ণা সেনকে দেখেছি শুরুর দিকে চেনা জগৎকে নিয়ে ছবি করতে। যেমন ‘৩৬ চৌরঙ্গি লেন’, ‘পরমা’, ‘যুগান্ত’। আমি সবসময়েই চেনা জগৎ নিয়েই ছবি করতে চেয়েছি। সেখানে ব্যান্ড আছে, গান আছে, গিটার আছে, বোহেমিয়ানইজম আছে, দার্জিলিং আছে, আমার দেখা কলকাতা আছে।
প্রশ্ন: কিন্তু আপনার সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যোমকেশের ছবিগুলো তো আপনার চেনা জগৎ নয়।
অঞ্জন: ব্যোমকেশ করা আমার সবচেয়ে খারাপ ডিশিশন ছিল। কেন যে মরতে করতে গেলাম! মৃণালদা তো আমার ব্যোমকেশ দেখতে এসে তেড়ে গালাগালি দিয়েছিলেন। বললেন, এটা কী করেছ? এটা একটা সিনেমা হয়েছে? একটা লোক ধুতি–পাঞ্জাবি পরে, চশমা পরে অন্যের ব্যাপারে শুধু নাক গলাচ্ছে, তার নিজের কোনও প্রবলেম নেই। আর পেঁা–পেঁা করে মিউজিক বাজাচ্ছ ব্যাকগ্রাউন্ডে। ছি! আবার আমার ‘দত্ত ভার্সেস দত্ত’ দেখে উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেছিলেন, কত ভাল ছবি করেছ তুমি!
প্রশ্ন: শুরুর দিকে আপনার তৈরি ছবি জনপ্রিয়তা পায়নি, কিন্তু আপনার গান বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তখন অভিনেতা, পরিচালক অঞ্জন দত্তকে পেছনে ফেলে জনপ্রিয়তায় অনেক এগিয়ে গেছে আপনার গান।
অঞ্জন: এটা নিয়ে আমার খুব আক্ষেপ আছে। (হাসতে হাসতে) এই দুঃখটা নিয়ে আমি একটা সিনেমা তৈরি করব। মাইরি বলছি। তবে, গানই আমাকে অনেক টাকা দিয়েছে। আমি বাবার দেনা শোধ করেছি, বন্ধুদের দেনা মিটিয়েছি গান গেযেই।
প্রশ্ন: শেষ প্রশ্নে যাই। আপনি মৃণাল সেনের সঙ্গে নিবিড় ভাবে ৪৩ বছর মিশেছেন। ছবি করলেন মৃণাল সেনকে নিয়ে। আপনার সিনেমায় কি মৃণাল সেনের কোনও প্রভাব আছে?
অঞ্জন: না, একেবারেই নেই। আমার কোনও কাজে মৃণাল সেনের কোনও প্রভাব নেই। আমার কোনও কাজে মৃণালদার প্রভাব রিফ্লেক্ট করেনি। আমি তো মৃণালদাকে ‘গুরু’ ‘গুরু’ ভাব নিয়ে কখনও দেখিনি। তাঁর সঙ্গে তর্ক করেছি। তাঁর বিরুদ্ধে মতামত প্রকাশ করেছি। এর জন্য আমাদের সম্পর্কের গভীরতা কখনও কমেনি। কলকাতার বহু কিছু অপছন্দ করেও কলকাতাকে কত নিবিড় ভাবে ভালবাসা যায়, সেই শিক্ষাটাও মৃণলদার কাছ থেকে পেয়েছি। অনেক কিছু শিখেছি মৃণালদার কাছ থেকে। কিন্তু আমার গান, আমার সিনেমা সম্পূর্ণ আমার মতো। এই ‘আমার মতো’ হওয়ার
Tollywood: ‘আমার কোনও কাজে মৃণালদার কোনও প্রভাব নেই’, স্পষ্টই বললেন অঞ্জন দত্ত
নানান খবর

নানান খবর

হৃতিকের সঙ্গে রসায়নই হয়েছিল কাল! 'ধুম ২'-এর পর আইনি নোটিশ পেয়েছিলেন ঐশ্বর্য! কী হয়েছিল শুটিং ফ্লোরে?

‘ওঁর পাশে দাঁড়ানো যেত না...’, বাবা বিনোদ খান্নার সঙ্গে অভিনয় না করা নিয়ে বিস্ফোরক অক্ষয়!

‘পহেলগাওঁয়ে প্যান্ট খুলিয়ে ভাষা জিজ্ঞেস করা হয়নি!’ বেঙ্গালুরু অনুষ্ঠান বিতর্ক নিয়ে কেন ফের বিস্ফোরক সোনু?

রক্ত, প্রেম আর প্রতারণা নিয়ে ফিরছে ‘হাসিন দিলরুবা ৩’! ‘রানি’ তাপসীর নিশানায় এবার কে?

অরিজিৎ সিং, অর্জুন, অনন্যা…একেকটা ভণ্ড!” — কাঁদতে কাঁদতে বলিউডকে তুলোধোনা! একে একে কাদের নাম নিলেন ইরফান-পুত্র?

এবার জমবে সচিবজি ও রিঙ্কির রোমান্স! কার দখলে থাকবে ফুলেরা গ্রাম? প্রকাশ্যে 'পঞ্চায়েত ৪'-এর টিজার

'কোন ভঙ্গিমায় সঙ্গমে লিপ্ত হবেন?' শো চলাকালীন প্রতিযোগীদের অশ্লীল প্রশ্ন! এফআইআর দায়ের আজাজ খানের বিরুদ্ধে

শাক্যজিৎ-আরশির সম্পর্কে ভাঙন ধরাতে আসছে হিরোর প্রাক্তন প্রেমিকা! গল্পের নতুন মোড়ে এন্ট্রি নিচ্ছেন কোন নায়িকা?

বিয়ের পাঁচ মাসের মধ্যেই অন্তঃসত্ত্বা শোভিতা! কবে প্রথম সন্তানের বাবা হবেন নাগা চৈতন্য?

হঠাৎ ধামাকা 'কথা'র সেটে! এভি ও বুলির পাশে দাঁড়ালেন খোদ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়! 'কথা' ধারাবাহিকে আসছে কোন নতুন চমক?

প্রয়াত অনিল কাপুরের মা নির্মল কাপুর, শোকস্তব্ধ অর্জুন-জাহ্নবী-সোনম

Exclusive: সত্যজিতের ডাকে গোঁফ ফেলে দিলেন ‘নবাব’! ‘শাখাপ্রশাখা’র অভিজ্ঞতা আজও রঞ্জিত মল্লিকের অমূল্য ‘মানিক’

১৭ বছর পর ফিরছে অক্ষয়-সইফ জুটি! কোন পরিচালকের থ্রিলারে ফুটবে পুরনো জুটির ম্যাজিক?

লতা, কিশোর, আরিজিৎ—সবকিছু ইতিহাস পাকিস্তানে! প্রতিবেশী দেশের এফএম থেকে উধাও ভারতীয় সুর

সত্যজিৎকে অভিনব শ্রদ্ধার্ঘ্য, ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ এবং ‘চিড়িয়াখানা’-র পোস্টারের আদলে ‘চোর’দের ছবি ঘোষণা!