আজকাল ওয়েবডেস্ক: চলতি এশিয়া কাপের সুপার ফোরে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচে অর্ধশতরানের পর বন্দুক চালানোর ভঙ্গিমায় সেলিব্রেশন করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন পাক ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান। এবার সেই অঙ্গভঙ্গি নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কে মুখ খুললেন পাকিস্তানের ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান। শুক্রবার আইসিসির শুনানিতে তিনি স্পষ্ট জানালেন, তাঁর উদযাপনে কোনও রাজনৈতিক বার্তা ছিল না। ফারহান জানান, তিনি শুধু ব্যক্তিগতভাবে আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক এমএস ধোনি ও বিরাট কোহলির কথাও তুলে ধরেন, যাঁরা একই ধরনের বন্দুক–সদৃশ অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করেছিলেন মাঠে। ফারহান আরও বলেন, তিনি জাতে পাঠান হওয়ায় এই ধরনের ভঙ্গি তাঁদের সংস্কৃতির অংশ। যা প্রায়শই বিয়ের মতো আনন্দঘন মুহূর্তেও দেখা যায়। ফারহানের পাশাপাশি সমালোচনার মুখে পড়েছেন হ্যারিস রউফও। গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেওয়ার পর তিনি ‘৬-০’ ভঙ্গি এবং যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ার অঙ্গভঙ্গি করেন। যা ভারতীয় দলের তরফে রাজনৈতিকভাবে উসকানিমূলক বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আইসিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, ফারহান ও রউফ দু’জনকেই জরিমানা গুনতে হতে পারে। 

শাস্তি হিসেবে ম্যাচ-ফির ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ কাটা হতে পারে, যদিও কোনও স্থগিতাদেশ বা নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা আপাতত নেই। প্রসঙ্গত, জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা এবং ভারতের পরবর্তী ‘অপারেশন সিঁদুরের’ পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে থাকায় এই ধরনের অঙ্গভঙ্গি নিয়ে সমালোচনা আরও বাড়ে। এদিকে, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশকে ১১ রানে হারিয়ে প্রথমবার এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে পাকিস্তান। টানা দু’ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে বসার পর সলমন আলি আঘার দল ১৩ বছরের ট্রফি খরা কাটাতে মরিয়া। ২৮ সেপ্টেম্বর ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত–পাকিস্তান। অন্যদিকে, বুধবার বাংলাদেশকে ৪১ রানে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা পাকা করেছে টিম ইন্ডিয়া। সেখানে বাংলাদেশ ব্যাট সইফের ক্যাচ তিনবার ফেলেছেন ফিল্ডাররা। অন্যদিক থেকে পরপর উইকেট পড়তে থাকায় সেই ক্যাচ মিসের খেসারত দিতে হয়নি। এখনও পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টে সূর্যরা অপরাজিত।ভারতকে বুধবার ১৬৮ রানে আটকে রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা।

কিন্তু শ্রীলঙ্কাকে হারানো আর ভারতের বিরুদ্ধে জয় পাওয়া এক ব্যাপার নয়। একাধিক ক্যাচ ফেললেন ভারতের ফিল্ডাররা। এই ক্যাচ ফেলা ভারতের হেডস্যর গৌতম গম্ভীরকে চিন্তায় ফেলতে পারে। ফাইনালের আগে ফিল্ডিং নিয়ে পড়তে হবে গম্ভীরকে। এখনও পর্যন্ত ভারত প্রাধান্য নিয়েই ক্রিকেট খেলেছে এশিয়া কাপে। চ্যাম্পিয়নের ট্রফি হাতে উঠতে আর এক কদম দূরে ভারতীয় দল। ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের বল গড়ানোর আগে থেকেই তর্জন-গর্জন করছিলেন ফিল সিমন্স, মেহেদি হসানরা। সিমন্স বলেছিলেন, ‘সবারই ভারতকে হারানোর ক্ষমতা রয়েছে। বাংলাদেশেরও রয়েছে।’ মেহেদি হাসান বলেছিলেন, ‘আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই এই ম্যাচ।’ বুধবার ভারতের ১৬৮ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ থেমে গেল ১২৭ রানে। রান তাড়া করাটা একদমই ভাল হয়নি বাংলাদেশের। হার্দিক পাণ্ডিয়ার প্রথম ওভারে ওঠে চার রান। বুমরাহ বল করতে এসেই আঘাত হানেন।

তানজিদকে ফেরান চ্যাম্পিয়ন বোলার। কুলদীপ যাদবকে সুইপ মারতে গিয়ে ইমন ফেরেন অভিষেক শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে। ১৯ বলে ২১ রান করেন। বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেট হারায় ৪৬ রানে। ৬৫ রানে তৃতীয় উইকেট যায় বাংলাদেশের। এদিকে রান রেট বাড়তে শুরু করে। বড় শট খেলতে গিয়ে তৌহিদ হৃদয় আউট হন ৭ রানে। খাতা না খুলেই বোল্ড হন শামিম। জাকের আলি রান আউট হন মাত্র ৪ রানে। সইফ হাসান বাংলাদেশকে লড়াইয়ে রেখে দেন। যখনই রানের দরকার তখনই ছক্কা হাঁকান তিনি। ১৫ ওভারের প্রথম বলে সইফের ক্যাচ ফেলেন শিবম দুবে। পরের বলেই সইফুদ্দিন ধরা পড়েন তিলক ভার্মার হাতে। নিজেদের অবস্থা আরও কঠিন করে ফেলে বাংলাদেশ। ভাগ্য ভাল সইফের। বরুণের ওভারেই ক্যাচ তুলে বেঁচে যান তিনি। এই যাত্রায় ক্যাচ ফেলেন ভারতের উইকেট কিপার সঞ্জু স্যামসন। রিশাদ হোসেন ও তানজিম দ্রুত ফেরেন। বাংলাদেশ নিজেদের বিপন্ন করে। অন্য প্রান্তে সইফের মতো জমে যাওয়া ব্যাটার রয়েছেন অথচ রিশাদ ও তানজিম নায়ক বনতে চেয়েছিলেন। পরপর দু'বলে দুই উইকেট নেন কুলদীপ। ম্যাচ জেতা ছিল কেবল সময়ের অপেক্ষা। সইফ একা লড়লেন। ৬৯ রানে তাঁকে ফেরান বুমরা। বাকিরা কেউই কিছু করতে পারেননি।