আজকাল ওয়েবডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় আনঅফিশিয়াল টেস্টের তৃতীয় দিনে ফের চোটের পেলেন ভারতীয় উইকেটকিপার-ব্যাটার ঋষভ পন্থ। এর আগে ইংল্যান্ড সিরিজে চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছিলেন। 

তারপর দীর্ঘ বিরতির পর টেস্টে প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু নতুন করে চোটের কারণে আবারও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে সিরিজ শুরুর আগে তাঁর ফিটনেস নিয়ে।

বিসিসিআইয়ের সেন্টার অফ এক্সেলেন্সে দ্বিতীয় বেসরকারি টেস্ট ম্যাচে সকালে কেএল রাহুল দ্রুত আউট হওয়ার পর ব্যাট করতে নামেন পন্থ। তবে তাঁর ইনিংস স্থায়ী হয় মাত্র ২২ বল।

দক্ষিণ আফ্রিকার বোলার সেপো মোরেকির বলে দু’বার আঘাত পান তিনি। প্রথমে বাঁ হাতে এবং পরে কুঁচকির কাছে। দু’বার চিকিৎসার পর অবশেষে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন পন্থ, তাঁর পরিবর্তে নামেন ধ্রুব জুরেল।

উল্লেখ্য, তিন মাস আগে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকর ট্রফির চতুর্থ টেস্টে গোড়ালিতে ফ্র্যাকচারের কারণে বাইরে চলে গিয়েছিলেন ঋষভ।

দীর্ঘ রিহ্যাব প্রক্রিয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে প্রথম বেসরকারি টেস্টে দুর্দান্ত ফর্মে ফিরেছিলেন তিনি। ১১৩ বলে ৯০ রানের ইনিংস, ১১টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজানো।

উইকেটের পিছনেও ছিলেন তৎপর, নিয়েছিলেন চারটি ক্যাচ। সেই পারফরম্যান্সের পরই ১৪ নভেম্বর কলকাতায় শুরু হতে চলা দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দলে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করে বিসিসিআই।

তবে এই চোটের ফলে প্রথম টেস্টে তাঁর খেলা একপ্রকার অনিশ্চিত হয়ে গেল। তিনি ফিট না হলে ধ্রুব জুরেলের উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবে খেলা একপ্রকার নিশ্চিত।

উল্লেখ্য, জুরেলও দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্টে শতরান করার পর দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’-র বিরুদ্ধেও দ্বিতীয় আনঅফিশিয়াল টেস্টে অপরাজিত ১৩২ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি।

ভারত ‘‌এ’‌ দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘‌এ’‌ দলের বিরুদ্ধে ঋষভ ছিলেন অধিনায়ক। রানও করেছেন। ফিটনেসের পাশাপাশি ব্যাটেও ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আর তাই নির্বাচকরাও দেরি করলেন না। 

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের দলে ফিরলেন এই উইকেটরক্ষক–ব্যাটার। আর শুধু ফেরা নয়, ইংল্যান্ড সিরিজের মতো একেবারে সহ অধিনায়ক হিসেবেই ফিরলেন।

এর আগে ঋষভের অনুপস্থিতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে সহ অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করেছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। দলে ফিরলেন বাংলার আকাশদীপও। পন্থ ফেরায় বাদ গিয়েছেন নারায়ণ জগদীশন।

চোট সারিয়ে ফিরেছেন আকাশদীপ। বাদ পড়েছেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের দল থেকে এই দু’টিই বদল হয়েছে। ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু হবে দুই টেস্টের সিরিজ। প্রথমটি কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে।

দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ২২ নভেম্বর থেকে। রঞ্জির প্রথম দুই ম্যাচে ১৫ উইকেট পেলেও টেস্ট দলে ফেরানো হল না সামিকে। এর অর্থ এখন অনেকটাই পরিস্কার। জাতীয় দলের জন্য নির্বাচকরা বা গৌতম গম্ভীররা সামির কথা আর হয়ত ভাবতে চাইছেন না।  

দলে দ্বিতীয় উইকেটকিপার হিসেবে আছেন ধ্রুব জুরেল। বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরনের দলে জায়গা হল না। স্পেশালিস্ট স্পিনার হিসেবে দলে আছেন কুলদীপ যাদব। আর স্পিনার–অলরাউন্ডার হিসেবে দলে আছেন জাদেজা, ওয়াশিংটন সুন্দর, অক্ষর প্যাটেল।

তিন পেসার বুমরা, সিরাজ ও আকাশদীপ। পেসার–অলরাউন্ডার নীতীশ কুমার রেড্ডি। তবে উল্লেখযোগ্যভাবে দলে রাখা হয়েছে সাই সুদর্শনকে। তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একটি টেস্টে রান পেয়েছিলেন। 

যিনি ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ার সিরিজে নিজের নামের প্রতি অতটা সুবিচার করতে পারেননি। তাছাড়া সরফরাজ খানের কথাও যে নির্বাচকরা ভাবছেন না সেটাও একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে গেল। 

ভারতের টেস্ট স্কোয়াড: শুভমান গিল (অধিনায়ক), ঋষভ পন্থ (সহ-অধিনায়ক, উইকেটকিপার), যশস্বী জয়সওয়াল, কেএল রাহুল, সাই সুদর্শন, দেবদূত পাডিক্কল, ধ্রুব জুরেল, রবীন্দ্র জাডেজা, ওয়াশিংটন সুন্দর, জসপ্রিত বুমরাহ, অক্ষর প্যাটেল, নীতিশ কুমার রেড্ডি, মহম্মদ সিরাজ, কুলদীপ যাদব, আকাশ দীপ।