ভারত-১ সিঙ্গাপুর-১
(রহিম) (ফানডি)
আজকাল ওয়েবডেস্ক: অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের দলে ছিলেন ব্যারাকপুরের রহিম আলি। সেবার তাঁর সতীর্থ জিকসন সিং গোল করলেও রহিম গোল করতে পারেননি। দেশকে গর্বিত করার জন্য রহিম আলিকে অপেক্ষা করে থাকতে হল আটটি বছর। তাও আবার এশিয়ান কাপের যোগ্যতা পর্বের ম্যাচে। যখন অতি বড় ভারতীয় সমর্থকরাও ধরে নিয়েছেন ম্যাচটা হারতে চলেছেন সুনীল ছেত্রীরা, তখন রহিম আলি গোল করলেন। দেশে এনে দিলেন স্বস্তি। সিঙ্গাপুরের খেলোয়াড়ের মিস পাস ধরে রহিম সমতা ফেরালেন ভারতের হয়ে। তাঁর জন্যই ভারত শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা ড্র করতে পারল। যদিও এই ম্যাচটা ভারতকে জিততেই হত। রহিমের জন্য খালিদ জামিল সিঙ্গাপুর থেকে অপরাজিত থেকে দেশে ফিরছেন। তবে এশিয়া কাপের মূলপর্বে খেলার সম্ভাবনা কমছে ভারতের। ঠিক এক মাস আগে নেশনস কাপে তৃতীয় হয়েছিল খালিদের ভারত। জিততে ভুলে যাওয়া, হারের ভুলভুলাইয়ায় পথ হারানো এক দলকে নিয়ে খালিদ জামিল বিদেশের মাটিতে তৃতীয় স্থান দখল করেছিলেন ঠিক এক মাস আগেই। কাফা নেশনস কাপে তারকাহীন এক দলকে নিয়ে ফিফার ক্রম তালিকায় এগিয়ে থাকা দেশকেও মাটি ধরান খালিদের ছেলেরা।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য রোহিত-কোহলিকে বিরাট পরামর্শ অশ্বিনের, কী বললেন প্রাক্তন স্পিনার? ...
এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৭-এর যোগ্যতা পর্বে সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে ভারতের এই ম্যাচকে মরণবাঁচনের আখ্যা দেওয়া হচ্ছিল। কাফা নেশনস কাপে ক্রমতালিকায় এগিয়ে থাকা দলকে হারিয়ে ভারত তৃতীয় হওয়ার পরে অনেকেই ভেবেছিলেন অঘটন ঘটাতেই পারেন খালিদ ব্রিগেড। খালিদের এই দল শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে যেতে পারে। শেষ মুহূর্তেও ম্যাচের গতিপ্রকৃতি বদলে দিতে পারে। বাংলার রহিম আলি সেটাই করে দেখালেন। ১-০-এ এগিয়ে থাকা সিঙ্গাপুরকে থামিয়ে দিলেন রহিম তাদেরই ঘরের মাঠে। খেলার ফল ১-১। তাও আবার প্রায় এক অর্ধ দশ জনে ভারত দাঁত কামড়ে লড়ে গেল।
ম্যাচে আগাগোড়া প্রাধান্য দেখায় সিঙ্গাপুর। প্রথমার্ধে বল পজেশনে তারা প্রায় সত্তর শতাংশ। সেখানে ভারত তিরিশ শতাংশ। বিরতির ঠিক আগের মুহূর্তে ফানডি গোল করে এগিয়ে দেন সিঙ্গপুরকে। গোল হজম করার সময়ে গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সাধু ও ডিফেন্ডার উভাইস-আনোয়ারদের মধ্যে বোঝাপড়ার প্রবল অভাব দেখা গেল। মাঝমাঠ থেকে লম্বা বল বড়ানো হয়েছিল। শাওয়াল আনুয়ার সেই লম্বা বল রিসিভেই কাটিয়ে নেন আগুয়ান গুরপ্রীতকে। ফানডি সুযোগ বুঝে গোলটি করে দেন। গোলটি শাওয়ালেরই ছিল কিন্তু তাঁর পা থেকে ছিটকে বেরিয়ে যাওয়া বলে পা ছুঁইয়ে গোল করেন ফানডি। প্রবল গতিতে ঘটে যায় সব ঘটনা। ভারতের ডিফেন্স হতভম্ব হয়ে যায়।
সুনীল ছেত্রীকে ফেরানো হয়েছিল এশিয়ান কাপের যোগ্যতা পর্বের ম্যাচে। আক্রমণভাগে সুনীল একা পড়ে যাচ্ছিলেন। তার উপরে ভারতের আক্রমণেও ছিল না কামড়। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতেই আরও বিপর্যয় নেমে আসে ভারতের উপরে। সন্দেশ ঝিঙ্গান লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। ভারতের ভাগ্য ভাল বলতে হবে। প্রায় একটা গোটা অর্ধ ভারত ১০ জনে খেললেও সিঙ্গাপুর আর গোলের সংখ্যা বাড়াতে পারেনি। উলটে ভারতই সমতা ফিরিয়ে আনে ম্যাচে। বেশ কয়েকবার ভারতের গোলমুখে বিপজ্জনক সব আক্রমণ তুলে আনছিল সিঙ্গাপুর। কখনও গুরপ্রীতের তৎপরতায়, কখনও সিঙ্গাপুরের ফুটবলাররা লক্ষ্যভ্রষ্ট হন। শেষমেশ রহিম আলি খালিদের মুখে এনে দেন হাজার ওয়াটের আলো।
আরও পড়ুন: টিফো কাড়ল পুলিশ, গো ব্যাক স্লোগানের মধ্যেই রবসন ম্যাজিক, পাঁচ গোলে শিল্ড শুরু মোহনবাগানের
