আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ এশিয়া কাপে নাটকের পর নাটক। আর তাতে বড় ধাক্কা খেয়েছে পাকিস্তান দল। হ্যান্ডশেক বিতর্কে ভারত–পাক ম্যাচের ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টের কোনও দোষ এখনও খুঁজে পাচ্ছে না আইসিসি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার বক্তব্য, জিম্বাবোয়ের ম্যাচ রেফারির বিরুদ্ধে তদন্ত হবে কি না, সেটা নির্ভর করবে পাইক্রফ্টকে নিয়ে নতুন কী তথ্যপ্রমাণ পাক ক্রিকেট বোর্ড দিতে পারে তার উপর ভিত্তি করে।


বিতর্কের শুরু হয়েছিল গত রবিবার মহারণ শেষে ভারতীয় ক্রিকেটাররা পাকিস্তানের সঙ্গে হাত না মেলানোয়। যার পাল্টা পুরস্কার বিতরণী মঞ্চ বয়কট করেন পাক অধিনায়ক সলমন আলি আঘা। নাটকের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় এরপর। ভারত অধিনায়ক এরপর সাংবাদিক সম্মেলনে বলে যান, পাকিস্তানের সঙ্গে তাঁরা স্রেফ খেলতে নেমেছিলেন। অপমানে দিশেহারা পাকিস্তান ভারতের নামে অখেলোয়াড়চিত আচরণের অভিযোগ তুলে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের কাছে নালিশ করে। একই সঙ্গে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ রেফারি আন্ডি পাইক্রফ্টের অপসারণ চেয়ে ই–মেল করে আইসিসিকে। বলা হয়, টসের সময় নাকি পাইক্রফ্ট পাকিস্তান অধিনায়ককে বলেন, ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের সঙ্গে করমর্দন না করতে। সে রকমই নাকি ‘নির্দেশকা’ রয়েছে। মঙ্গলবার পাক বোর্ড বেসরকারি ভাবে জানিয়ে দেয় যে, পাইক্রফ্টকে না সরালে তারা আর টুর্নামেন্টে খেলবে না। নাম তুলে নেবে। কারণ জিম্বাবোয়ের ম্যাচ রেফারি ক্রিকেটের আইন ভেঙেছেন।
কিন্তু আইসিসি সরাসরি পাক বোর্ডের দাবি খারিজ করে। কারণ আইসিসি নিজেদের মতো তদন্ত করে পাইক্রফ্টের কোনও অপরাধ খুঁজে পায়নি। বরং ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা নিযুক্ত কমিটি খতিয়ে দেখেছে যে, সম্ভাব্য গণ্ডগোল এড়াতেই সেদিন ভারত–পাকিস্তানের দুই অধিনায়ককে আলাদা করে হাত মেলাতে নিষেধ করেছিলেন পাইক্রফ্ট। আর তা করে ক্রিকেটের কোনও আইনই ভাঙেননি তিনি। তা ছাড়া পাক ক্রিকেট বোর্ডের চাপে নতিস্বীকার করতে একেবারেই রাজি ছিল না আইসিসি। কারণ, তাতে ভবিষতের জন্য ভয়ঙ্কর উদাহরণ তৈরি হত। নিরুপায় পাকিস্তান বুধবার ফের ই–মেল করে আইসিসিকে। ফের দাবি পেশ করে, পাইক্রফ্টকে সরাতে। আবারও তাদের দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়। এদিকে এসবের মধ্যে বিস্তর নাটকের মধ্যে প্রথমে আমিরশাহি ম্যাচ বয়কটের কথা বলেও পরে মাঠে নামে পাক দল। এক ঘণ্টা পর খেলা শুরু হয়।


তবে ঠিক কোন কারণে নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে ঘুরে গেল পাক বোর্ড? কোন কারণে তারা ম্যাচ বয়কট থেকে ঘুরে গিয়ে ম্যাচ খেলতে রাজি হয়ে গেল। পাক বোর্ড সরকারি ভাবে বলছে, কৃতকার্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন পাইক্রফ্ট। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিবৃতি পেশ করে পিসিবি জানিয়েছে, ‘ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্ট পাকিস্তানের ম্যানেজার এবং অধিনায়কের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনিই গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশের অধিনায়ককে বলেছিলেন করমর্দন না করতে। ভুল বোঝাবুঝির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন পাইক্রফ্ট। আইসিসিও বলেছে, ভারত–পাকিস্তান ম্যাচে শৃঙ্খলাভঙ্গ হয়েছে কি না, তদন্ত করে দেখবে।’ কিন্তু এখানেই শেষ নয়। পাকিস্তানের এই দাবিও খণ্ডন করছে আইসিসি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার সূত্র বলছে, পাইক্রফ্ট শুধুমাত্র ভুল বোঝাবুঝির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। নিয়ম ভাঙার জন্য নয়। তাছাড়া আইসিসির প্রাথমিক তদন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ মেলেনি। নতুন করে তদন্ত হবে কি না, সেটা নির্ভর করবে পাইক্রফ্ট নিয়ে নতুন কী তথ্যপ্রমাণ পাক ক্রিকেট বোর্ড দিতে পারে, তার উপর ভিত্তি করে।