আজকাল ওয়েবডেস্ক: চোটের লাল চোখ দেখে  লিগস কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল-সহ ইন্টার মায়ামির  দু'টি ম্যাচে নামতে পারেননি লিওনেল মেসি। তিনি ফিরলেন। তিনি গোল করলেন। ফাইনালে তুললেন ইন্টার মায়ামিকে। 

বড্ড মনে পড়ে ২০১৪ সালের ১৩ জুলাইয়ের সেই প্রহর। ফিফা প্রেসিডেন্ট শেপ ব্লাটারের হাত থেকে গোল্ডেন বল হাতে নিয়ে তিনি নেমে এসেছিলেন পোডিয়াম থেকে। হাজার বছরের ক্লান্তি যেন ভর করেছিল পায়ে। ধীরগতি। নিঃসঙ্গ। বিধ্বস্ত চেহারা। দৃষ্টিতে শূন্যতা। বুকে কেউ যেন পাথর বসিয়ে দিয়ে গিয়েছিল সেদিন। 
কিংবা তার-ও বছর দুয়েক পরের এক জুন মাস। কোপা ফাইনালের আলো মাখা সেই স্টেডিয়ামে আচমকাই যেন নেমে এসেছিল অমানিশার অন্ধকার। মাঠে বসেছিলেন তিনি। সব হারানোর চোখের জল ঝরে পড়েছিল মেটলাইফ স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসের মখমলে।

 আরও পড়ুন: ৩০ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন করতেই হবে, নইলে..‌.‌ ফিফার কড়া বার্তা ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে...
পেনাল্টি মিস করে তিনি খলনায়ক। সেই মঞ্চেই ফুটবলকে বিদায়ের ঘোষণা। একের পর এক ট্র্যাজেডির আবর্তে ঢেকে গিয়েছিল ফুটবল বিশ্ব। সেই মেসিই এখন মাঠে নেমে জাদু দেখাচ্ছেন। কেরিয়ারের এই পড়ন্ত বেলাতেও তিনিই সুপারস্টার। 

প্রথমার্ধের অ্যাডেড টাইমে গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল অরল্যান্ডো সিটি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের শেষ ১৫ মিনিটে জোড়া গোল করে ম্যাচের দৃশ্যপট বদলে দেন মেসি। অরল্যান্ডো সিটিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে লিগস কাপের ফাইনালে উঠেছে ইন্টার মায়ামি। 

লিওনেল মেসির চিত্রনাট্য কে লেখেন? প্রত্যাবর্তনের সম্রাট তিনিই। প্রতিবার তিনি মাঠে ফেরেন। তিনি গোল করেন। কিছু না কিছু দেখা যায় তাঁর পা থেকে। মাইকেল জর্ডন এনবিএ ছেড়ে ফিরে এসে দুনিয়া জয় করেছিলেন।  অবনমনের দুনিয়া থেকে ফিরে এসে লেস্টার সিটির প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া কিংবা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ফলো অনের লজ্জা এড়িয়ে ইডেনে লক্ষ্মণ-দ্রাবিড়ের অতিমানবীয় ইনিংসের সেই ক্যামব্যাক। প্রত্যাবর্তনের ক্যাবিনেটে এক-একটা উজ্জ্বল স্মারক। কিন্তু এই পড়ন্ত বেলাতেও মেসি যা দেখাচ্ছেন, তার আশপাশে নেই কেউ। 

খর্বকায় আর্জেন্টাইনের ফুটবল-জীবনের বুঝি দুটো অর্ধ। প্রথামার্ধে নীল-সাদা জার্সিতে কেবল ব্যর্থতাই তাঁর সঙ্গী হয়েছে। আর কেরিয়ারের সায়াহ্ন যেন তাঁর ফুটবলার জীবনের দ্বিতীয়ার্ধ। সেই মানুষটাই সাফল্যের এক শৃঙ্গ থেকে আরেক শৃঙ্গে আরোহন করছেন। মনে করিয়ে দিচ্ছেন সেই মিডাস রাজার কথা। যা ধরছেন, তাতেই সোনা ফলছে।
অথচ এক সময়ে ক্লাব-সর্বস্ব রেকর্ড আউড়ে দুনিয়া বারবার তাঁকে নিক্ষেপ করেছে অন্ধকারে। বলা হত, ‘বন্যেরা বনে সুন্দর, মেসি বার্সেলোনায়।’ দেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময়ে তাঁর ঠোঁট নড়ে না কেন, তা নিয়ে বিস্তর হইচই। মাথা পেতে নিয়েছেন অসম্মানের তিলক। সেই মেসিই এখন ইন্টার মায়ামির কাছে পরশপাথর হয়ে ধরা দিচ্ছেন। যা ধরছেন সেই আগের সময়ের মতোই আলো ছড়াচ্ছেন। তিনি এখনও গৃহস্থের গর্ব, পড়শির ঈর্ষা। 

?ref_src=twsrc%5Etfw">August 28, 2025

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে শুরু হতে পারে আইএসএল, সেপ্টেম্বরেই সুপার কাপ