আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছোট থেকেই কেরিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়ার ইচ্ছা ছিল ক্রিকেটকেই। কিন্তু জীবন তাঁকে সঙ্গ দেয়নি। বাধ্য হয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ক্রিকেট ছেড়ে দুবাইয়ে সেলসম্যানের চাকরি নিয়েছিলেন পাকিস্তানের মিস্ট্রি স্পিনার।

কিন্তু চাকরির মাঝপথেই এক বিশেষ অনুপ্রেরণায় তিনি ফের ফিরলেন ক্রিকেটে। আর সেই অনুপ্রেরণার নাম চমকে দেবে সবাইকেই। পাকিস্তানের মিস্ট্রি স্পিনার উসমান তারিকের অনুপ্রেরণা ভারতীয় লেজেন্ড মহেন্দ্র সিং ধোনি।

তিনি সম্প্রতি জানিয়েছেন, কীভাবে ভারতীয় প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির বায়োপিক ছবি ‘এমএস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ দেখে তিনি আবার ক্রিকেটে ফেরার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন।

ধোনির জীবনের লড়াই ও সাফল্যের কাহিনি নাকি তাঁকে এতটাই অনুপ্রাণিত করেছিল যে, তিনি দুবাইয়ের চাকরি ছেড়ে আবার ক্রিকেটের ময়দানে ফিরে এসেছেন। ২৭ বছর বয়সি এই ডানহাতি স্পিনার সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য পাকিস্তান দলে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন।

জানা যায়, উসমান দীর্ঘদিন ক্রিকেট থেকে দূরে সরে গিয়ে দুবাইয়ের এক পারচেজিং কোম্পানিতে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করছিলেন। উসমান জানান, ‘আমি ক্রিকেট ছাড়ার পর দুবাইয়ে চাকরি করছিলাম। তারপর ‘এমএস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ দেখলাম, এবং সেই সিনেমাটাই আমার জীবন পাল্টে দিল। ধোনির গল্প আমাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে। আমি চাকরি ছেড়ে পাকিস্তানে ফিরে আসি ক্রিকেট খেলার জন্য।’

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখনও পর্যন্ত ৩৬ ম্যাচে ৫৪টি উইকেট নিয়েছেন উসমান তারিক। তাঁর গড় ১৮.০৭, স্ট্রাইক রেট ১৫.৭০ এবং ইকনমি রেট সাতেরও নিচে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উসমানের তিনটি চার-উইকেট হল ও সেরা বোলিং ফিগার হিসেবে ৪/১৭ তাঁকে পাকিস্তানের নতুন ‘মিস্ট্রি স্পিনার’ হিসেবে পরিচিত করেছে।

উসমান ২০২৫ সালের ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (CPL) ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখান। ১০ ইনিংসে ২০টি উইকেট নিয়ে ইমরান তাহিরের পর দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন এই তরুণ স্পিনার।

তাঁর গড় ছিল ১৪-এরও কম, স্ট্রাইক রেট মাত্র ১১.৪, আর ইকনমি রেট ৭.৩১। বিশেষ শারীরিক গঠনের কারণেই তাঁর বোলিং অ্যাকশন আলাদা। তিনি নিজেই বলেছেন, ‘আমার ডান কনুইয়ের দুটি কোণ আছে। এটা জন্মগত। আমি শুধু পাকিস্তানের হয়ে খেলতে চাই। এখানে পৌঁছতে সময় লেগেছে, কিন্তু প্রতিটা বাধা আমাকে আরও শক্ত করেছে।’

তাঁর বোলিং স্টাইলও বেশ অনন্য ও বিতর্কিত। বল ছাড়ার আগে কিছুটা থেমে গিয়ে সাইড-আর্ম ফ্লিক মুভমেন্টে বল ছোঁড়েন তিনি, যা ভারতের অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অ্যাকশনের সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যদিও রাওয়ালপিন্ডিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে তিনি মাঠে নামার সুযোগ পাননি।