আজকাল ওয়েবডেস্ক: পঁচিশ বছর ধরে ক্রিকেটকে সেবা করেছেন। ৪২ বছর বয়সী অমিত মিশ্র অবশেষে ক্রিকেটকে গুডবাই জানালেন। ২২টি টেস্ট ম্যাচ, ৩৬টি ওয়ানডে ও ১০টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন এই লেগস্পিনার। তিন ফরম্যাটে অমিতের উইকেট সংখ্যা যথাক্রমে ৭৬, ৬৪ এবং ১৬।
সেই অমিত মিশ্র বলছেন, ''অভিষেকের পরে আমার কেরিয়ারে পাঁচ বছরের ছেদ ছিল। যদি তা না হত, তাহলে আমি আরও বেশি ম্যাচ খেলতাম। ২০০৩ সালে বাংলাদেশে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আমার অভিষেক হয়েছিল। তার পরে অনেক দিন আমাকে বাইরে থাকতে হয়েছিল। সেটা যদি পাঁচ বছর না হয়ে আরও কম হত তাহলে আরও বেশি ম্যাচ খেলতে পারতাম।''
আরও পড়ুন: সুহেলের দুরন্ত গোল, বাহরিনকে উড়িয়ে অনূর্ধ্ব ২৩ এশিয়ান কাপের যোগ্যতাঅর্জন পর্ব শুরু করল ভারত...
ক্রমাগত চোটআঘাত এবং উঠতি ক্রিকেটারদের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্যই অমিত মিশ্র সরে গেলেন ক্রিকেট থেকে।
অমিত আরও বলেন, ''আমার কোনও আক্ষেপ নেই। আমি একশো শতাংশ দিয়েছিলাম। এক-দেড় বছর অবসাদে ছিলাম। নিজের উপরই রাগ হত।''
২০০৩ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জার্নি শুরু করেন অমিত মিশ্র। ২০০৮ সালে মোহালিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে টেস্টে অভিষেক ঘটে অমিত মিশ্রর। অভিষেক টেস্টে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
অমিতকে বলতে শোনা গিয়েছে, ''২৫ বছরের ক্রিকেটজীবনে অনেক স্মরণীয় মুহূর্ত রয়েছে। বিসিসিআই-এর উপরে আমি কৃতজ্ঞ। হরিয়ানা ক্রিকেট সংস্থা, সাপোর্ট স্টাফ, আমার সতীর্থ এবং আমার পরিবারের সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই।''
২০১৩ সালে জাভাগল শ্রীনাথের রেকর্ড স্পর্শ করেন অমিত মিশ্র। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১৮টি উইকেট নেন এই লেগ স্পিনার।
অমিত বলেন, ''অনেক কিছু চিন্তাভাবনা হত। নিজের পারফরম্যান্সের উন্নতি ঘটাব কীভাবে? আমার ক্রিকেটে আর কী যোগ করতে পারি? আমার পারফরম্যান্সের উন্নতি কীভাবে সম্ভব? ছোট ছোট বিষয়ের উপরে জোর দিতে শুরু করি। নিজেকেই প্রশ্ন করতে থাকি কী উন্নতি ঘটালাম। উপলব্ধি করতে পারলাম, যারা ক্রিকেট খেলে, তাদের অবসাদে ভুগলে চলে না।''
২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ১০টি উইকেট নেন তিনি। ২০১৭ সালে শেষবার আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন অমিত মিশ্র। ঘরোয়া ক্রিকেট ও আইপিএলেও তাঁর ঘূর্ণি অব্যাহত ছিল। গতবারের আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। ১৬২টি আইপিএলের ম্যাচ থেকে ১৭৪টি উইকেট সংগ্রহ করেন অমিত মিশ্র। সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীর দিকে থেকে অমিত মিশ্র সপ্তম।
আইপিএলে হ্যাটট্রিক রয়েছে অমিত মিশ্রর। ২০০৮ সালে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, ২০১১ সালে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব এবং ২০১৩ সালে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেন অমিত। ক্রিকেট থেকে সরে গেলেও কোচিং, ধারাভাষ্য ও উঠতি ক্রিকেটারদের মেন্টর হিসেবে এবার থেকে কাজ করবেন প্রাক্তন হয়ে যাওয়া এই লেগ স্পিনার।
অমিত মিশ্র অবশ্য অনেক আগেই ভারতীয় ক্রিকেটের মূলস্রোত থেকে সরে গিয়েছিলেন। জাতীয় দলের দরজা তাঁর জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আগেই। ঘরোয়া ক্রিকেট ও আইপিএল ছিল তাঁর সম্বল। অমিত মিশ্র এদিন সব ধরনের ক্রিকেট থেকেই সরে গেলেন। ভারতীয় ক্রিকেটে প্রাক্তন হয়ে গেলেন অমিত মিশ্র।
আরও পড়ুন: গোড়ার দিকে ইংরেজি জানতেন না সবুজ তোতা, কীভাবে শিখলেন? শিক্ষিকা শোনালেন এক অন্য ব্যারেটোর গল্প
