আজকাল ওয়েবডেস্ক: ডায়াবেটিস—আজকের দিনে বহু মানুষের নিত্যসঙ্গী এই মারণ রোগ। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, খারাপ খাদ্যাভ্যাস ও মানসিক চাপের জালে জড়িয়ে পড়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ছে হু হু করে। ওষুধ তো রয়েছেই। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পাশাপাশি প্রাচীন আয়ুর্বেদের কিছু উপাদান আজও এই রোগে লাগাম টানতে সক্ষম। আর সেই তালিকার শীর্ষে নিঃসন্দেহে স্থান পায় এক পরিচিত গাছ—নিম।
নিমপাতার গুণে শর্করা নিয়ন্ত্রণ
নিমপাতায় রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েডস, ট্রাইগ্লিসারাইড কমানোর উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা শরীরের ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সহায়ক। এই সংবেদনশীলতাই ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণে মূল চাবিকাঠি। রোজ সকালে খালি পেটে কয়েকটি নিমপাতা চিবিয়ে খেলে কিংবা নিমপাতার রস খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অনেকটাই স্থিতিশীল থাকে—এমনটাই বলছে বহু গবেষণা।
বৈজ্ঞানিক গবেষণাও বলছে একই কথা
২০১১ সালে জার্নাল অব এথনোফরমাকোলজি-তে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিমপাতার নির্যাস টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ইঁদুরের রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে। ভারতীয় ইনস্টিটিউটগুলির নানা গবেষণাতেও একই ফল দেখা গেছে। বলা হচ্ছে—নিমের গ্লাইকোসাইড ও নিমবিডিন উপাদান গ্লুকোজ শোষণ রোধ করতে পারে। ফলে নিয়ন্ত্রণে থাকে ডায়াবেটিস।
কীভাবে ব্যবহার করবেন?
নিমপাতার রস: সকালে খালি পেটে ৫-১০টি সতেজ নিমপাতা ভাল করে ধুয়ে, বেটে তার রস বের করে খান। স্বাদ তেতো হলেও প্রভাব কার্যকর।
নিমপাতার গুঁড়ো: শুকনো পাতাকে গুঁড়ো করে রোজ আধা চামচ জল বা গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
নিম চা: নিমপাতা সেদ্ধ করে ছেঁকে তার জল চায়ের মতো পান করলে গ্লুকোজ বিপাকে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
তবে মাথায় রাখবেন, রক্তে শর্করার মাত্রা যদি এমনিতেই কম থাকে, তাহলে অতিরিক্ত নিমপাতা খেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, লিভার বা কিডনি সমস্যায় ভোগা রোগীদেরও নিমপাতা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
