আজকাল ওয়েবডেস্ক: বর্তমানে আধুনিক জীবনযাত্রার বেড়াজালে আটকে আট থেকে আশি। অনিয়মিত খাদ্যাভাস, সঠিক জীবনধারা না মানার কারণে শরীরের আনাচে কানাচে উঁকি মারছে মেদ। অকালে হানা দিচ্ছে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপের মতো ক্রনিক রোগ। আর এইসবের চক্করে রোজের পাত থেকে বাদ যাচ্ছে বিভিন্ন খাবার। সেই তালিকায় রয়েছে ডিমের হলুদ অংশ অর্থাৎ কুসুম। কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই কুসুম খেতে চান না! কিন্তু সত্যি কি ডিমের কুসুম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ে?
ডিমের দু’টি অংশ। কুসুম অর্থাৎ হলুদ অংশে থাকে কোলেস্টেরল, ভিটামিন এবং ফ্যাট। একটি বড় ডিমের কুসুমে ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। অপরদিকে, সাদা অংশে থাকে প্রোটিন। কোলেস্টেরল এক ধরনের ফ্যাট যা আমাদের রক্তে দেখা যায়। এটি শরীরে কোষ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদিও এলডিএল অর্থাৎ লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে তাকে ‘ খারাপ’ কোলেস্টেরল বলে ধরা হয়। যার থেকে হার্টের রোগের ঝুঁকি বাড়ে। আর এইচডিএল অর্থাৎ হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন কোলেস্টেরল ‘ভাল’ কোলেস্টেরল নামে পরিচিত। ডিমের কুসুম এলডিএল-এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয় বলে প্রচলিত ধারণা রয়েছে।
সাম্প্রতিক গবেষণা কিন্তু অন্য তথ্য তুলে ধরেছে। যা হল, ডিমের কুসুম কোলেস্টেরলের উপর সামান্য প্রভাব ফেলে। তাই সীমিত পরিমাণে ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ার আশঙ্কা তেমন থাকে না। বরং ডিমের কুসুম ভিটামিন এ, ডি, ই, এবং বি১২-এর পুষ্টিতে ভরপুর। একইসঙ্গে এতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। যা সার্বিকভাবে শরীরে পুষ্টি জোগায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখে। যদিও কারও কারও ক্ষেত্রে ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ার আশঙ্কা থাকতে পারে। তবে তা সকলের জন্য প্রযোজ্য নয়।
তাই আপনি যদি কোলেস্টেরল নিয়ে চিন্তিত থাকেন কিংবা হার্টের কোনও সমস্যা থাকে তাহলে সীমিত পরিমাণে ডিম খেতে পারেন। বেশিরভাগ মানুষের দিনে একটি ডিম খাওয়া নিরাপদ বলেই গণ্য হয়। সেক্ষেত্রে ব্যালেন্সড ডায়েটের উপর বেশি নজর দিন। খাদ্যতালিকায় সবজি, গোটা শস্য এবং লিন প্রোটিন বেশি রাখুন। যা আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। একইসঙ্গে ভাজার বদলে সেদ্ধ কিংবা পোজ করে ডিম খান। এতে অতিরিক্ত ফ্যাট যোগ হবে না। তবে মনে রাখবেন, সকলের শরীর এক রকম নয়। তাই যে কোনও বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
