আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছাব্বিশে রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে, ২০২৫-এর একুশে জুলাই, তৃণমূলের একপ্রকার অ্যাসিড টেস্ট ছিল সাংগঠনিক ক্ষমতা প্রকাশের। বিরোধীদের একাধিক অভিযোগের মুখে দাঁড়িয়ে তৃণমূল সাংগঠনিক ক্ষমতা প্রকাশের এই টেস্টে অতি সফল, তা ভিড় দেখে বলা বাহুল্য। অভিষেক বক্তব্যে জানিয়েছেন, ২৪-এর একুশে জুলাইকে ছাপিয়ে গিয়েছে পঁচিশের একুশ। 

সকাল থেকে কাতারে কাতারে ভিড়ের অপেক্ষা থাকে, সমাবেশের একেবারে শেষ লগ্নের দিকে। যখন মঞ্চে বক্তব্য রাখতে ওঠেন দলনেত্রী। এবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনা, বাংলাভাষীদের উপর আক্রমণ, সহ ভোটের প্রাক্কালে মমতা কী বলেন সেদিকে নজর ছিল সমবেত কর্মী-সমর্থকদের।

আরও পড়ুন: ‘লিখে রাখুন, ছাব্বিশের পর জয় বাংলা বলাব’, একুশের মঞ্চ থেকে বিজেপিকে খোলা চ্যালেঞ্জ অভিষেকের

 বাংলায় ২০১১ থেকে ২০২৫, টানা মমতা জমানা। এই সময়কালে সরকার সাধারণ মানুষের জন্য কী কী করেছে, বক্তব্যের একেবারে শুরুতে তার খতিয়ান দেন। জানান, রাজ্যে চলছে ৯৪টি প্রকল্প। জানান, তৃণমূল সরকার ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমিয়েছে। কোন প্রকল্পে, রাজ্যের কত মানুষ চাকরি পেয়েছেন, তার খতিয়ানও দেন মমতা।  জানান, প্রায় দু’ কোটি মানুষকে দারিদ্র সীমার উপরে এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস ।


১৬ জুলাইয়ের পরেও যে, মমতা ফের একুশের মঞ্চ থেকে বাংলাভাষীদের উপর আক্রমণ নিয়ে সরব হবেন, সে জল্পনা ছিলই। হলও তাই। বক্তব্যের অনেকটা অংশ জুড়েই মমতা নিজের ভাষাকে আগলে রাখার হুঁশিয়ারি দিলেন একের পর এক। কখনও তুলনায় টেনে আনলেন অন্য রাজ্যের প্রসঙ্গ। কখনও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম না করেই কটাক্ষ করে বোঝালেন, বাংলা ভাষায় যাঁরা কথা বলেন, ভিন রাজ্যে তাঁদের উপর আক্রমণ করে, টেলি প্রমটার থেকে দু' লাইন বাংলা লিখে এনে এখানে বাংলা ভাষায় কথা বললে, আদতে বাংলায় ভোট পাওয়া যাবে না।

 

বাংলাভাষীদের উপর আক্রমণ নিয়ে একুশের মঞ্চ থেকে বারবার সরব হলেন তিনি। বক্তব্যের মাঝেই কোচবিহারের উত্তমকে মঞ্চে সকলের সামনে দেখালেন, যাঁর কাছে এনআরসি নোটিস এসেছে, তাও ভিনরাজ্য অসম থেকে। মমতা তাঁকে সামনে এনে জবাব চাইলেন বিজেপির কাছে। এদিনও ফের বাংলাভাষীদের উপর আক্রমণের বিরোধীতায় গর্জে ওঠেন মঞ্চ থেকে। বলেন, ‘বাংলা ভাষার উপর চলছে বিরাট সন্ত্রাস। বাংলা ভাষায় কথা বলা নাকি যাবে না। কে মাছ খাবে, কে মাংস খাবে,  কে ডিম খাবে, সব ওরা ঠিক করে দিচ্ছেন। এত সহজ নয়। বাংলা এসব মানবে না। সব মানুষের অধিকার এখানে সংরক্ষিত হবে। ‘ 

 

এর আগেও, ১৬ জুলাই বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বুধবার পথে তৃণমূল কংগ্রেস। পথে মমতা-অভিষেক। মিছিল শেষ ডেরিনা ক্রসিংয়ে বক্তব্য রাখেন দলের সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি।  বক্তব্য জুড়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেমন বিঁধলেন কেন্দ্র সরকারকে। তেমনই মনে করালেন, দেশ জুড়ে অকারণ  বাঙালিদের উপর এই অত্যাচার মেনে নেবেন না তিনি।  বক্তব্যে এদিন মমতা সাফ জানান, কোন পন্থায়, কীভাবে বাংলাকে হেনস্থা করার পরিকল্পনা করছে গেরুয়া শিবির। সেদিন মমতা বলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকে লুকিয়ে লুকিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পরিষ্কার বলা হয়েছে, যাকেই সন্দেহ হবে, বাংলা ভাষায় কথা বলে, গ্রেপ্তার করবে, ডিটেনশন ক্যাম্পে সেখানে রেখে দেবে। কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেলেও রেহাই পাচ্ছেন না। পড়তে হচ্ছে হেনস্থার মুখে। এদিনও ফের দফায় নাম করে এবং না করে বিজেপিকে বিঁধলেন মমতা।