আজকাল ওয়েবডেস্ক: সংঘর্ষবিরতি ঘোষণার পরেও ইজরায়েল এবং ইরানের মধ্যে সংঘাত ফের তীব্রতর হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত ১২ দিন ধরে চলতে থাকে সংঘর্ষে আলোচনার শীর্ষে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেই। বিশ্বের প্রতিটি মানুষ তাঁর একটি আশ্চর্যজনক শারীরিক বিবরণের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন। অনেকেই তাঁর বক্তৃতা এবং ছবিতে লক্ষ্য করেছেন, তিনি সবসময় একটি হাত ব্যবহার করেন। এর নেপথ্যে কারণ কী?

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গল্পের সূত্রপাত ১৯৮১ সালের ২৭ জুন ইরানের রাজধানী তেহরানে। সেদিন খামেনেই আবুজার মসজিদে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। অনুষ্ঠান চলাকালীন এক যুবক তাঁর কাছে একটি টেপ রেকর্ডার রেখেছিলেন। কিন্তু সেটি টেপ রেকর্ডার ছিল না। সেটিতে একটি বোমা লুকনো ছিল। বোমাটি বিস্ফোরণের ফলে খামেনেই গুরুতর আহত হন। সেই বোমা হামলার পরেই তাঁর ডান হাত আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এরপর থেকেই জনসমক্ষে তাঁর বাঁ হাত ব্যবহার করা শুরু করেন। 

বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ১৯৮১ সালের বোমা বিস্ফোরণে খামেনেই গুরুতর আহত হন। বিস্ফোরণে তাঁর ডান হাত ছাড়াও, ফুসফুস এবং কানের স্নায়ুর কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তার বুকের একপাশ পুড়ে যায়। বোমার টুকরো তাঁর শরীরের ডান দিকেও আটকে যায়।

যখন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তখন তাঁর অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে একজন ডাক্তার তাঁকে মৃত ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু অন্য ডাক্তারদের দল হাল ছাড়েনি। দীর্ঘ অস্ত্রোপচারের পর তাঁর জীবন রক্ষা করেন ডাক্তাররা।

অস্ত্রোপচার শেষে জ্ঞান ফেরার পর খামেনেইয়ের কথা বলার শক্তি ছিল না। বাঁ হাতে লিখে তিনি প্রথম প্রথম প্রশ্ন করেন, ‘আমার মসজিদের সব সঙ্গীরা ঠিক আছেন তো? তাঁকে জানানো হয় যে সকলে সুস্থ আছেন। এরপরেই তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আমার কী হয়েছে?’ ডাক্তাররা তাঁকে বলেন যে তিনি ডান হাতটি আর কখনও ব্যবহার করতে পারবেন না। শান্তভাবে খামেনেই বলেন, ‘আমার মস্তিষ্ক এবং জিভ কাজ করলেই হবে। হাতের দরকার নেই।‘

সেই দিন থেকে খামেনেই তাঁর বাঁ হাত দিয়ে সবকিছু করেছেন। তাঁর ডান হাত স্থায়ীভাবে অক্ষম। আজও তিনি সেই আঘাতটি আক্রমণের স্মৃতি হিসেবে বহন করছেন।