আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্টিফেন মিলারের পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রসঙ্গ সেই রাশিয়া থেকে তেল কেনা। রবিবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে স্টিফেন ভারতের রাশিয়ান তেল আমদানির তীব্র সমালোচনা করেন। তাঁর অভিযোগ, ভারত এই তেল কিনে পরোক্ষভাবে রাশিয়ার যুদ্ধকে অর্থ জুগিয়েছে। একই অভিযোগ তুললেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও। এর পাশাপাশি তাঁর হুঁশিয়ারি, ভারতের এই পদক্ষেপের ফলে ধীরে ধীরে শুল্কের হার আরও বৃদ্ধি করা হবে।

নিজের সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, “ভারত শুধু রাশিয়া থেকে তেলই কিনছে না, সেই তেল খোলা বাজারে বিক্রি করে বিপুল টাকা লাভ করছে। রাশিয়ার হাতে ইউক্রেনে কত মানুষের হত্যা হয়েছে সেই ব্যাপারে ভাবছে না একটুও। এই কারণে, ভারতের উপর করের হার ধীরে ধীরে আরও বৃদ্ধি করব। বিষয়টি আমার নজরে আনার জন্য ধন্যবাদ।“

ভারতীয় পণ্যের উপর গত ৩০ জুলাই ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, তিনি হুঁশিয়ারি দেন, যে সব দেশ রাশিয়া থেকে তেল বা অস্ত্র কিনবে, তাদের ওপর শীঘ্রই কঠোর বাণিজ্যিক শাস্তি চাপানো হতে পারে। তাঁর বক্তব্য, “আমার কোনও আগ্রহ নেই ভারত কী করছে রাশিয়ার সঙ্গে। দু’টোই মৃত অর্থনীতি। আমি শুধু বলছি, আমেরিকার স্বার্থে আমি শুল্ক বসাব।” তিনি আরও বলেন, “যদি রাশিয়া শান্তিচুক্তিতে সম্মত না হয়, তাহলে যেসব দেশ তেল কিনছে, তাদের ওপর ১০০% পর্যন্ত আমদানি শুল্ক বসানো হতে পারে।”

এরপরেই একটি বিবৃতি দেয় ভারত সরকার। কেন্দ্রের সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দিল্লি এখনই রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে না। কারণ, এই তেল ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তুলনামূলকভাবে সস্তা। যুদ্ধের আগে, ২০২১ সালে ভারতের মাত্র ৩ শতাংশ তেল আসত রাশিয়া থেকে। এখন সেই হার ৩৫%-৪০%-এ পৌঁছেছে।

এই বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ মার্কো রুবিও বলেন, “ভারত আমাদের কৌশলগত মিত্র হলেও, তাদের রাশিয়ার সঙ্গে তেলের সম্পর্ক এখন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছে।”

আরও পড়ুন: ‘বল তুই বাংলাদেশি’, কারখানা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় বাংলার যুবককে, মেরে ভেঙে দিল দু’ পা, বিজেপির রাজ্যে পুলিশের নির্মম অত্যাচার

রবিবার ফক্স নিউজ চ্যানেলের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানি প্রসঙ্গে মুখ খোলেন ট্রাম্পের শীর্ষ সহযোগী স্টিফেন। তেল আমদানির তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য কার্যত অর্থ জোগাচ্ছে। ট্রাম্প স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, এটি মেনে নেওয়া যায় না।” তাঁর আরও দাবি, চীনকে পাশে রেখে ভারত রুশ তেল কেনায় প্রায় সমানে চলে এসেছে। মানুষ জানলে অবাক হবেন ভারতের এই তেল আমদানির পরিমাণ ঠিক কতটা। এর পরেই ভারতকে ফের হুঁশিয়ারি দিলেন ট্রাম্প।

যদিও ভারত-বিরোধী তীর ছুঁড়লেও, ট্রাম্পের মোদির সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ককে ‘চমৎকার’ বলে ব্যাখ্যা করেন মিলার। তিনি বলেন, “দুই নেতার সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়। তবে এতে রুশ তেল কেনার বাস্তবতা ঢাকা পড়ে না।”