আজকাল ওয়েবডেস্ক: আমেরিকার ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে ঘটেছে এক অভিনব ঘটনা। মিডলোথিয়ানের বাসিন্দা ক্যারি এডওয়ার্ডস নামের এক নারী চ্যাটজিপিটির সাহায্যে লটারির নম্বর বেছে নিয়ে হঠাৎই ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে ফেলেছেন। ভার্জিনিয়া লটারি পাওয়ারবল ড্র–এ তিনি জিতে নেন এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় এক কোটি বত্রিশ লক্ষ টাকার সমান। এই সাফল্যের কৃতিত্ব তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা–নির্ভর টুল চ্যাটজিপিটিকে দিয়েছেন।

ঘটনা অনুযায়ী, গত ৮ সেপ্টেম্বর পাওয়ারবল ড্র–এর জন্য এডওয়ার্ডস একটি টিকিট কেনেন। টিকিট নেওয়ার সময় তিনি মজা করে চ্যাটজিপিটিকে বলেন, “আমার সঙ্গে কথা বলো, আমাকে কিছু নম্বর দাও।” চ্যাটজিপিটি যে নম্বর সাজেস্ট করেছিল, তার মধ্যেই মিলে যায় চারটি প্রধান নম্বর এবং একটি পাওয়ারবল। নিয়ম অনুযায়ী এতে তার পুরস্কারের অঙ্ক দাঁড়ায় ৫০ হাজার ডলার। তবে তিনি অতিরিক্ত এক ডলার দিয়ে “পাওয়ার প্লে” অপশন নিয়েছিলেন। এর ফলে পুরস্কারের অঙ্ক তিনগুণ বেড়ে দাঁড়ায় দেড় লাখ ডলার।

দুই দিন পর অফিস মিটিং চলাকালে তার ফোনে একটি নোটিফিকেশন আসে—“Please collect your lottery winnings.” প্রথমে তিনি সেটিকে প্রতারণা ভেবেছিলেন। পরে যাচাই করে নিশ্চিত হন যে সত্যিই তিনি লটারির পুরস্কার জিতেছেন। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানান, খবরটি পেয়ে তিনি বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না।

আরও পড়ুন: প্রতিশোধ চাই! প্রাক্তন স্ত্রীর বাড়ির পাশেই ১২ ফুট লম্বা এ কিসের মূর্তি বসালেন স্বামী! লজ্জায় চোখ ঢাকছে পাড়া প্রতিবেশী

তবে সবচেয়ে বড় বিস্ময় এসেছে তার সিদ্ধান্ত থেকে। ক্যারি এডওয়ার্ডস পুরস্কারের অর্থ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যবহার করেননি। তিনি ঘোষণা করেছেন, পুরো অর্থ তিনটি ভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করবেন। এর মধ্যে রয়েছে—অ্যাসোসিয়েশন ফর ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিজেনারেশন (AFTD), যেখানে তার প্রয়াত স্বামীর রোগ সংক্রান্ত গবেষণা হয়, শালোম ফার্মস, যারা খাদ্য সঙ্কট মোকাবিলা করে; এবং নেভি-মেরিন কর্পস রিলিফ সোসাইটি, যা সামরিক কর্মী ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ায়।

নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “এই আশীর্বাদ যখন আমার জীবনে এলো, আমি তখনই জানতাম কী করতে হবে। আমি চাই অন্যরাও যেন আশীর্বাদ ভাগ করে নেয়। তাই আমি সব টাকা দান করছি।”

এডওয়ার্ডসের এই পদক্ষেপ সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসা কুড়িয়েছে। অনেকেই বলেছেন, প্রযুক্তির সহায়তায় তিনি অর্থ জিতলেও মানবিকতার নজির রেখে গেছেন। প্রযুক্তি যে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে, সেই সঙ্গে মানবিক মূল্যবোধও সমাজকে অনুপ্রাণিত করতে পারে—ক্যারি এডওয়ার্ডসের গল্প তার উজ্জ্বল উদাহরণ।