আজকাল ওয়েবডেস্ক: গুটখার নেশা সর্বনাশা! গুটখার নেশার জেরেই শেষ হয়ে গেল একটা গোটা পরিবার। সন্তানদের বিষ খাইয়ে আত্মঘাতী ২৬ বছরের তরুণী। তিনি ও তাঁর দুই সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে তাঁর আরও এক সন্তান। ঘটনাটি ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে যোগীরাজ্যে। 

 

জানা গেছে, স্বামীর কাছে গুটখা খাওয়ার জন্য টাকা চেয়েছিলেন তরুণী। কিন্তু সেই টাকা দিতে নারাজ ছিলেন যুবক। বারবার স্ত্রীকে অনুরোধ করেন, সন্তানদের কথা ভেবে গুটখা খাওয়া ছেড়ে দিতে। কিন্তু স্বামীর অনুরোধ রাখেননি। উল্টে সেই গুটখার টাকা না‌ দেওয়ার জন্য চরম অশান্তি করেন। গুটখার টাকা না পাওয়ায় সন্তান সহ নিজেকেই শেষ করলেন তরুণী। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের চিত্রকুটে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্বামীর কাছে গুটখা খাওয়ার জন্য টাকা চেয়েছিলেন তরুণী। কিন্তু সেই টাকা দিতে রাজি হননি স্বামী। গুটখার টাকা নিয়েই স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। সেই অশান্তির পরেই চরম পদক্ষেপ করেন ওই তরুণী। তিন সন্তানকে বিষ খাওয়ানোর পর নিজে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। যদিও খুদে সন্তানটি আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে। বাকি দুই সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। 

 

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তরুণীর নাম জ্যোতি যাদব‌। ২৬ বছর বয়সি তরুণী নিত্যদিন গুটখা খেতেন। যা নিয়ে স্বামী বাবলু যাদবের সঙ্গে ঝামেলা হত তাঁর। বাবলু পেশায় একজন গাড়ি চালক। শনিবার সকালেও দুজনের মধ্যে তুমুল ঝামেলা হয়। যা প্রতিবেশীরাও টের পেয়েছিলেন। গতকাল সন্ধ্যায় তিন সন্তানকে প্রথম বিষ খাওয়ান জ্যোতি। এরপর নিজে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হন। 

 

রাতে বাড়ি ফেরার পর বাবলু দেখেন, চার বছরের খুদে সন্তান যন্ত্রণায় ছটফট করছে। বাকি দুই সন্তান শ্বাস নিচ্ছে। একটি ঘরে জ্যোতি অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তড়িঘড়ি করে সকলকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক বছরের কন্যাসন্তানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। বাকিদের সাতনা জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার পথেই জ্যোতি ও তাঁর আরও এক কন্যাসন্তানের মৃত্যু হয়‌। জ্যোতি ও বাবলুর আরও এক সন্তান বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থাও আশঙ্কাজনক। 

 

আরও পড়ুন: এক্ষুনি ঝেঁপে বৃষ্টি ২ জেলায়, প্রবল বৃষ্টিতে টালমাটাল হবে ১১ জেলা! বাংলায় তুমুল দুর্যোগের অশনি সঙ্কেত

 

পরিবারের সদস্যরা ও গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, জ্যোতির গুটখা খাওয়াকে কেন্দ্র করে নিয়মিত ঝামেলা হত স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে। জ্যোতির গুটখার নেশা ছিল। গুটখা শেষ হয়ে গেলেই পাগলের মতো করতেন। পরিবারে এমনিতেই আর্থিক অনটন ছিল‌। তার সত্ত্বেও গুটখার জন্য বাবলুর থেকে টাকা চাইতেন তিনি। সেই টাকা না দিলেই রণংদেহি মূর্তি ধারণ করতেন জ্যোতি। বিষয়টি ঘিরে জ্যোতিকে বাবলু একাধিকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। এমনকী ভবিষ্যতের কথা ভেবে এবং সন্তানদের জন্য গুটখা খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার জন্যেও অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু জ্যোতি কোনও অনুরোধ কানে তোলেননি। 

 

দেহগুলি ময়নাতদন্তের পর পুলিশ ও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বিষক্রিয়ার জেরেই মা ও সন্তানদের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে আসার পরেই, উপসর্গ দেখে টের পেয়েছিলেন চিকিৎসকরা। শরীরেও বিষের উপস্থিতি মিলেছে। ঘটনাটি ঘিরে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। বাবলুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।