আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রযুক্তি কর্মী ছেলে আত্মঘাতী। সেই ঘটনায় প্ররোচনার দায়ে ধৃত অতুল সুভাষের স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া, শাশুড়ি নিশা এবং শালা অনুরাগ। কিন্তু, অতুল ও নিকিতার বছর চারেকের সন্তান এখন কোথায়? এই প্রশ্নই তুললেন বেঙ্গালুরুর আত্মঘাতী প্রযুক্তি কর্মী অতুলের উদ্বিগ্ন বাবা পবন কুমার মোদি।
নিকিতা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অতুলের বাবা।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পবন মোদি বলেছেন, "আমরা জানি না সে আমাদের নাতিকে কোথায় রেখেছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে নাকি সে বেঁচে আছে? আমরা তার সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমি চাই আমার নাতি আমাদের সঙ্গে থাকুক।" নাতিকে তিনি কখনও দেখেননি বলে দাবি করেছেন পবন।
গত সপ্তাহে ৩৪ বছর বয়সী ছেলেকে হারিয়ে শোকে মূহ্যমান পবম মোদি। নাতির কথা উঠতেই জানান, শিশুটি ২০২০ সালে জন্মেছে এবং পরের বছর নিকিতা এবং অতুল আলাদা হয়ে যায়। বলেন, "আমরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের কাছে আমাদের নাতিকে ফিরিয়ে আনার আবেদন করছি। আমি নাতিকে শুধুমাত্র ভিডিও কলে দেখেছি, কখনও তাকে ধরার সুযোগ পাইনি। এটা এক দাদুর কাছে চরম বেদনার।" নাতি তাঁর কাছে ছেলের চেয়েও ভালোবাসার বলে কান্নাভেজা গলায় জানিয়েছেন বৃদ্ধ।
ছেলের মৃত্যুর বিচার না পাওয়া পর্যন্ত অতুলের ছাই গঙ্গায় না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবার। বাবা পবন বলেছেন, "ছেলের ছাই আমরা নিয়ে এসেছি। আমরা ধার্মিক, কিন্তু ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা সেই ছাই বিসর্জন করব না।" পবন মোদির অভিযোগ, "অতুলের মামলার শুনানি চলছিল জৌনপুরের যে পারিবারিক আদালতে, সেই বিচারক দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলেন। তিনি ঘুষ দাবি করেছিলেন।" অতুল মোদিও তাঁর সুইসাইড নোটেও সেই দুর্নীতির কথা লিখে গেয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। ছেলের কথা বলতে গিয়ে বৃদ্ধ বলেছেন, 'অতুল কখনও ঘুষ দিত না। দরকারে ও জরিমানা দিত, কিন্তু ঘুষ নয়।"
#WATCH | Samastipur, Bihar: Atul Subhash suicide case | On the arrest of accused Nikita Singhania, Nisha Singhania and Anurag Singhania, Pawan Kumar Modi, father of deceased Atul Subhash says, "We don't know where she has kept our grandson. Has he been killed or is he alive? We… pic.twitter.com/8TBQcWtQfM
— ANI (@ANI)Tweet by @ANI
অতুল সুভাষের ভাই বিকাশ কুমারই দাদার আত্মহত্য়ায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তিনি তাঁর বাবার উদ্বেগের কথা বলতে গিয়ে বলেন, "বর্তমানে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় আমার ভাইপো সম্পর্কে কিছু খোঁজ পাচ্ছি না। আমি তিনজনকে গ্রেপ্তার করার জন্য কর্নাটক পুলিশকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমাদের অভিযোগ অনুযায়ী কিছু গ্রেপ্তার এখনও বাকি রয়েছে। আমরা আশা করি সেটাও দ্রুত হবে।"
গত সোমবার বেঙ্গালুরুর বাড়িতে ৩৪ বছর বয়সি অতুল সুভাষের দেহ উদ্ধার হয়। মৃত্যুর আগে তিনি একটি ২৪ পাতার সুইসাইড নোট লিখে যান। সেই নোটে অতুলের শেষ ইচ্ছাগুলির মধ্যে একটি ছিল, 'আমার সন্তানের দায়িত্ব আমার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হোক। ওঁরা ছেলেকে সুস্থ মূল্যবোধ-সহ বড় করবেন।' সুইসাইড নোটে স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া, তার মা নিশা, ভাই অনুরাগ এবং কাকা সুশীল সিংহানিয়ার বিরুদ্ধে হেনস্থার একাধিক অভিযোগ করেছেন অতুল। নিকিতা তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা গার্হস্থ্য হিংসার মামলা দায়ের করেছিলেন এবং ৩ কোটি টাকা চেয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই, নিকিতা ও তাঁর পরিবারকে আরও দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা, ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে আছেন তাঁরা। কিন্তু পলাতক নিকিতার কাকা সুশীল সিংহানিয়া।
