আজকাল ওয়েবডেস্ক: বারাণসীর লঙ্কা মোড়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে সরকারিভাবে রাস্তা চওড়া করার জন্য গুঁড়িয়ে দেওয়া হল প্রায় ৩০টি দোকান—তার মধ্যেই দুই যুগান্তকারী নাম, ৭৫ বছরের পুরনো পেহলওয়ান লস্যি এবং ১০৮ বছরের প্রাচীন চাচির কচুরি।

যেখানে একদিন দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকত, আজ সেখানে ধুলো, কান্না আর হাহাকার। বুলডোজার নামতেই পেহলওয়ান লস্যির মালিক মনোজ যাদব হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে পড়েন দোকানের সামনে, মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে শেষ প্রণাম জানান তাঁর পূর্বপুরুষদের গড়া স্বপ্নকে।
“সব শেষ হয়ে গেল,” বললেন পাশের এক দোকানি, “এখন ২০-২৫ হাজার টাকা ভাড়ার দোকান কিভাবে নেব?”

চাচির কচুরির সেই ঝাঁঝালো সংলাপ আর পাতার থালায় কুমড়োর তরকারি—সবই এখন স্মৃতি। বারাণসীর এই অমোচনীয় স্বাদের ঠিকানা ছিল শুধু কচুরি নয়, এক ধরনের প্রাণ, যার সঙ্গে জড়িয়ে ছিল শতাব্দীর ভালোবাসা। প্রশাসনের বক্তব্য, এই প্রকল্পে লহরতারা থেকে বিজয়া মল পর্যন্ত ৯.৫ কিমি রাস্তা চওড়া হবে, যার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৪১.৮০ কোটি। জমির মালিক সংকট মোচন মন্দিরের পুরোহিত পরিবার, দোকানগুলি ছিল ভাড়াটে। ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু অনেকেই বলছেন—“এই ক্ষতির কোনও মূল্য হয় না।”

এখানে শুধু দোকান ভাঙেনি, ভেঙে গেছে একটা শহরের রসনা-ঐতিহ্য, আর হাজারো মানুষের জীবিকার ভরসা। রাস্তা বড়ো হবে, শহর চলবে, কিন্তু ইতিহাস আর ফিরে আসবে না।